একটু খাবার,নইলে একটু পানি চাই……

১……২………৩……..

সেকেন্ডগুলো চলে যাচ্ছে অবিরাম। মিনিটগুলোও কি আরেকটু আস্তে যেতে পারে না? আমি চাই না ১২টা মিনিট পার হোক। চাই না, আরেকটি প্রাণ ঝরে যাক। প্রতি ১২ মিনিটে একটা করে শিশু মারা যাচ্ছে সোমালিয়ায়।

কেন জানেন?

না খেয়ে

গত ৬০ বছরে এমন দূর্ভিক্ষ দেখেনি আফ্রিকা। খাবার চাই,একটু খাবার চাই,না হলে একটু পানি………তাও পাচ্ছে না মানুষ। দক্ষিণ সোমালিয়ায় মানুষ ঘুরে ফিরছে রাস্তায় রাস্তায়। কিন্তু খাবার দেয়ার মতো একটি মানুষও নেই। অপ্রতুল সাহায্য নিয়ে চেষ্টা করে যাচ্ছে দাতাসংস্থাগুলো। খাবার শেষ হয়ে যাচ্ছে,অভুক্ত মানুষ শেষ হচ্ছে না

মোগাদিসুর বানাদির হাসপাতালের ছবি এটি। শিশুটির গায়ে মাছিগুলো উড়িয়ে দেবার মতো শক্তিও নেই।

দক্ষিণ সোমালিয়ায় বহু বছর ধরে যাবার উপায়ও নেই জাতিসংঘের ত্রাণ দলগুলোর। ‘শাবাব’ নামে আল-কায়েদার সাথে জড়িত একটি গ্রুপ দখল করে আছে দেশটির এই অংশ অনেক বছর ধরেই। এমনকি জাতিসংঘের ত্রাণ দলগুলোকেও এই দূর্ভিক্ষের সময় সেখানে যেতে দেয়া হচ্ছে না। বিমান থেকে কিছু ত্রাণ সরবরাহের চেষ্টা করা হচ্ছে।

কার কাছে সাহায্য চাইবে সোমালিয়রা? দূর্বল,অন্তবর্তী সরকারের কাছে,যারা নিজেদের পকেট ভরতে ব্যস্ত?

মোগাদিসুতে যে ক্যাম্পগুলো আছে সেখানে এখন শুধু মানুষ আর মানুষ। কিন্তু,নেই খাবার,নেই চিকিৎসা।

‘শাবাব’ কয়েক বছর আগে টিকাদান নিষিদ্ধ করে পশ্চিমাদের ষড়যন্ত্র এর কথা বলে। দূর্ভিক্ষে শুধু যে না খেয়ে মানুষ মারা যাচ্ছে,তা না। একই সাথে অপুষ্ট,রোগ প্রতিরোধের ক্ষমতাবিহীন শিশুগুলো লড়াইয়ে হেরে যাচ্ছে কলেরা,টাইফয়েড,শ্বাসনালির বিভিন্ন অসুখ এর কাছে।

হাসপাতালগুলোর করিডোরে এখন বাচ্চাদের কান্নার শব্দ প্রতিধ্বনিত হচ্ছে। ডাক্তার,নার্সরা মলিন মুখে ঘুরে বেড়াচ্ছেন শুধু। তাদেরও কিছু করার নেই-ওষুধ না থাকলে কি দিয়ে চিকিৎসা করবেন তারা?

নিজের শিশুকে কোলে নিয়ে মা হেঁটে যাচ্ছে কেনিয়ার দিকে। খালি পায়ে,তপ্ত বালুর উপর দিয়ে। যদি এতটুকু খাবার বা পানি পাওয়া যায়। ৩০০ মেইল পথ,রক্তাত্ত পা,তবুও শিশুর মুখের দিকে চেয়ে মায়ের হেঁটে যাওয়া।

২৬ লাখ মানুষের খাবার দরকার। বছর শেষে সংখ্যাটা দাঁড়াবে ৩৫ লাখ-এ।

কুফো আলি আবদি-র কোলে তার ৩ বছরের মেয়ে খাদিজা। অপুষ্ট শিশুটার হৃদস্পন্দন থেমে গেছে কিছুক্ষণ আগে।  শোকে স্তব্ধ বাবার মনে তাও আশা,যদি বাঁচানো যায় তার বাকি দুটি সন্তানকে।

আমরা কি তার দিকে একটু হাত বাড়িয়ে দিতে পারি না? নিজের ঈদের খরচ থেকেও কি একটু সাহায্য করতে পারি না? আপনার ১০০ টাকায় সোমালিয়ার একটি পরিবারের একদিনের খাবার হবে-এরচেয়েও বেশি কিছু কি আপনার প্রেরণার জন্য দরকার?!

এগিয়ে আসুন,খেয়াল রাখুন ঘড়ির দিকে। প্রতি ১২ মিনিট কিন্তু নিয়ে যাচ্ছে আরেকটি শিশুকে………

সাহায্য করতে পারেন এই উদ্যোগে অংশগ্রহন করেঃ

https://www.facebook.com/event.php?eid=207979102590516

 

সরাসরি যোগাযোগ করতে পারেন(যারা দেশের বাইরে আছেন)ঃ

http://www.muslimaid.org/index.php/what-we-do/disaster-and-emergency/crisis-in-somalia-continues

অন্তঃত এই কুইজটিতে অংশগ্রহন করুন। আপনি একবার অংশগ্রহন করলে একটি শিশু একবেলার খাবার পাবে।
http://gifts.wfp.org/quiz/?lead_source=fbshare-wfp-quiz

 

স্বপ্ন বিলাস সম্পর্কে

বাস্তবে মানুষ হবার চেষ্টা করে যাচ্ছি। জীবনের নানা পথ ঘুরে ইদানীং মনে হচ্ছে গোলকধাঁধায় হারিয়েছি আমি। পথ খুঁজে পাওয়ার চেষ্টা করি আর দেখে যাই চারপাশ। ক্লান্ত হয়ে হারাই যখন স্বপ্নে, তখন আমার পৃথিবীর আমার মতো......ছন্নছাড়া, বাঁধনহারা। আর তাই, স্বপ্ন দেখি..........স্বপ্নে বাস করি.....
এই লেখাটি পোস্ট করা হয়েছে বিবিধ-এ। স্থায়ী লিংক বুকমার্ক করুন।

25 Responses to একটু খাবার,নইলে একটু পানি চাই……

  1. বোকা মানুষ বলেছেনঃ

    কি কঠিন! কত নির্মম!

  2. কৃষ্ণচূড়া বলেছেনঃ

    আসলেই নির্মম!
    ঈদের বাজারে আমরা শত শত টাকা খরচ করে ফেলছি…১০০টা টাকা কি প্রত্যেকে দিতে পারি না!!
    তোর লেখাটা সবার প্রেরণা হোক।

  3. সামিরা বলেছেনঃ

    লেখাটা শেয়ার করলাম অনেক জায়গায়।
    কিছু বলার নেই।

  4. অরণ্য নীলিন বলেছেনঃ

    খুবই কষ্ট লাগলো

  5. মন্তব্য দেবার মতো সাহসটুকুও হারিয়ে ফেলেছি বলে মনে হচ্ছে, তবে আমার পক্ষে যা করা সম্ভব করলাম, আর কিছু না হোক, WFP এর কুইজটা যেন সবাই অন্তত জবাব দাও, সেটাই হোক অন্তত……

  6. নিশম বলেছেনঃ

    WFP এর কুইজে ৩বার জবাব দিলাম ৩টা আইডি থেকে। কসম ভাই, লিখাটা পড়ে আমার কষ্টে বুকটা ফাকা ফাকা লাগছে ! ওরা সোমালিয়ায় জন্মেছে, আর আমরা বাংলাদেশে, এটাতে তো আমাদের কিংবা ওদের কোনো হাত নেই ! ওদের তো কোনো দোষ নেই রে ভাই যে ওরা সোমালিয়ায় কেনো জন্মাইলো ! আমার পক্ষে যদ্দুর সম্ভব, আমি করবো ! কথা দিলাম !

  7. বোকা মানুষ বলেছেনঃ

    আমার প্রার্থনা আমার কাছে প্রতিধ্বনিত হয়ে ফিরে আসে যেন……।।

  8. জনৈক বলেছেনঃ

    কুইজটা খেললাম, তবে কুইজ খেললেই ওরা ডোনেশন দেবে- এই ব্যাপারটা ঠিক বুঝিনা।

  9. মুবিন বলেছেনঃ

    নিজেকে বড় স্বার্থপর মনে হচ্ছে।
    ওদের জন্য আমার পক্ষ থেকে যতটুকু করা সম্ভব আমি করব, কথা দিচ্ছি।

  10. ইয়াদ বলেছেনঃ

    যত সামান্যই হোক, সবারই সাহায্য করা উচিত।
    প্রশ্নটা জীবন-মৃত্যুর!

  11. প্রজ্ঞা বলেছেনঃ

    ছবিগুলোর দিকে তাকানোর সাহস পাচ্ছি না!

  12. ফিনিক্স বলেছেনঃ

    সাহায্য পাঠিয়ে দিয়েছি সাধ্যমত। ওদের ভাল হোক-প্রার্থনা করি এখন শুধু।

  13. নিস্তব্ধ অমিত বলেছেনঃ

    শরীরে কাঁটা দিয়ে উঠলো……
    নির্মমতার একটা সীমা থাকে……

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।