দালাইলামা ১৯৮৯ সালে নোবেল শান্তি পুরষ্কার লাভ করেন তিব্বতের স্বাধীনতা প্রতিষ্ঠায় অহিংস আন্দোলনের জন্য। বৈশ্বিক পরিবেশ নিয়ে চিন্তা ও সচেতনতার কারণে নোবেল পুরষ্কার পাওয়া প্রথম ব্যক্তি তিনি। তিনি সমগ্র বিশ্বে অহিংস আন্দোলনে শান্তি প্রতিষ্ঠায় অবদান, আন্তঃধর্মীয় বিশ্বাস ও চেতনাবোধ জাগরণ, আন্তর্জাতিক দ্বায়িত্ববোধ ও সহমর্মিতা বৃদ্ধিতে অবদান রাখায় ১৯৫৯ সাল থেকে ৮৪ টি পুরষ্কার পেয়েছেন। দালাইলামা ৭২টির বেশি গ্রন্থের রচয়িতা।
তিব্বতের বর্তমান দালাইলামা ১৪ তম যার নাম তেনজিন গেতসো। তিনি ১৯৩৫ জন্মগ্রহণ করেন। নিজেকে একজন সাধারণ বৌদ্ধভিক্ষু হিসেবে পরিচয় দিতে তিনি পছন্দ করেন।
আমাদের এই সময়ের গোলকধাঁধাঁ :: দালাইলামা
এই সময়ের ব্যাপারটা কি এমন
আমাদের অট্টালিকাগুলো বিশালাকার, কিন্তু সহনীয়তা কম
পথচলার পথ প্রশস্ত , কিন্তু দৃষ্টিভঙ্গি সংকীর্ণ
সম্পদ কম, কিন্তু ব্যয় বেশি
আমাদের ঘরগুলো বড়, পরিবারগুলো ছোট
অনেক সুযোগ, কিন্তু সময় কম।
আমাদের অনেক ডিগ্রি, কিন্তু বিবেচনাবোধ কম
জ্ঞান বেশি কিন্তু ন্যায়বিচার কম
দক্ষ লোক বেশি, কিন্তু সমস্যা আরো বেশি
অনেক ঔষধ কিন্তু আমাদের কম সুস্থতা।
সম্পদকে আমরা বহুগুণ বাড়িয়েছি, কিন্তু নৈতিকতাকে কমিয়েছি
অনেক বেশি কথা বলি, মাঝে মাঝে ভালোবাসি, অনেক বেশি ঘৃণা করি
আমরা শিখেছি কীভাবে বসবাসের ব্যবস্থা করা যায়, জীবনধারণের নয়।
আমরা আয়ুর বছর বাড়িয়েছি, কিন্তু বছরগুলোতে প্রাণ দেই নি
আমরা চাঁদে যাবার পথ পাড়ি দিয়ে ফিরে আসি
কিন্তু নতুন প্রতিবেশীর সাথে সাক্ষাত করার জন্য রাস্তা পার হতে অনেক সমস্যা
আমরা বাহিরের জগতকে জয় করেছি, অন্তরের জগতকে নয়।
আমরা বাতাসকে পরিষ্কার করতে চেয়েছি, আত্মাকে করেছি কলুষিত
আমরা পরমাণুকে ভেঙ্গে টুকরো টুকরো করেছি, ভাঙ্গিনি আমাদের সংস্কারগুলো
আমাদের আয় অনেক বেশি, নীতি অনেক কম।
পরিমাণে আমরা অনেক বেশি, কিন্তু মানে অনেক কম।
এই সময়টা লম্বা মানুষদের, ছোট চরিত্রের
ভারী মুনাফা, ঠুনকো সম্পর্কের
এই সময়টা বিশ্বশান্তি প্রতিষ্ঠা চেষ্টার, কিন্তু ঘরে ঘরে যুদ্ধের
অনেক অবসর, কিন্তু কম আনন্দ, অনেক রকমের খাদ্য, কিন্তু কম পুষ্টি
এটা সেই সময় যখন দ্বিগুণ আয় হবে, কিন্তু আরো বেশি বিবাহচ্ছেদ হবে
সুন্দর ঝলমলে বাড়ি, কিন্তু ভাঙ্গা সংসার
এটা সেই সময় যখন প্রদর্শনীতে অনেক কিছু, গুদামঘরে নেই কিছু
এটা কি সেই সময়, যখন প্রযুক্তি এই চিঠিটা পৌঁছে দেবে আপনার কাছে
আর সেই সময়টাতে যখন আপনি বেছে নিতে পারেন
এই সময়ের কোন পরিবর্তন আনবেন… নাকি ডিলিট চেপে মুছে ফেলবেন।
— দালাইলামা
ভাল লাগল অনুবাদ।
তবে একটু বেশি আক্ষরিক বোধহয়, আরেকটু ভাবানুবাদ হলে ভাল হত আরো
হতে পারে বেশি আক্ষরিক। দেখি, আরো “ভাব” এলে অনুবাদ বদলে দেবো 😛
দারুণ সব কথাবার্তা!
তবে ঠিক কবিতা হয়ে উঠল কিনা জানি না। মূল ইংরেজির একটা লিঙ্ক দিলে আরও ভালো হত।
চলতে থাকুক এমন অসাধারন কার্যাবলি
এটা সম্ভবত কবিতা ছিলো না। মূল ইংরেজির লিঙ্কটা যোগ করে দিয়েছি ইতোমধ্যেই।
কথাগুলো খুব চমৎকার আর অর্থপূর্ণ। আর সেই আগ্রহেই মনে হলো সরবে এটা সবার সাথে শেয়ার করি।
ধন্যবাদ রইলো মন্তব্যের জন্য
ভালো হয়েছে । 😀 কিন্তু অনেকটা কবিতা কবিতা ভাব।
সামনে আরও ভালো ভালো অনুবাদ পাবো আশা করি। 🙂
ভালো বলার কারণে ধন্যবাদ 😀
ভালো অনুবাদের আশা করতেই পারেন। আশা হইলো ভেলা, এটাতে চড়ে তরঙ্গের খেলা দেখা যায় 😀
:welcome:
নিয়মিত হবেন আশা করি।
নিয়মিত হবার ইচ্ছা আছে। স্বাগত জানানোর জন্য ধন্যবাদ 😀
ইয়ে মানে, এটা আমার ৩ নাম্বার পোস্ট! 🙂
যখন প্রযুক্তি এই চিঠিটা পৌঁছে দেবে আপনার কাছে
আর সেই সময়টাতে যখন আপনি বেছে নিতে পারেন
এই সময়ের কোন পরিবর্তন আনবেন… নাকি ডিলিট চেপে মুছে ফেলবেন।
অসাধারণ লেখা। অনুবাদককে অসংখ্য ধন্যবাদ এই লাইনগুলোর জন্য। কি জানি বুঝি নি। আবার অনেক কিছুই যেন বুঝেছি।
কথাগুলো অনেক সুন্দর। আমার পড়েও মনে হয়েছিলো যেন অনেক কিছু বুঝলাম। দালাইলামা লোকটা বেশ দার্শনিক গোছের, লেখাটাতেও সেই ছাপ আছে
ভাল লেগেছে। কথাগুলো দারুণ।
আরেকটু ভাবযুক্ত অনুবাদ চাই এর পরের বার। 😀
যেই দালাইলামা সম্পর্কে লিখলেন সে কি বর্তমান দালাইলামাই?
হুঁ। বর্তমান দালাইলামা ১৪ তম। এই লেখাটাও (খুব সম্ভব) তার লেখা। কারণ এই লেখাতে লেখা ছিলোনা ১৪ তম লোকের কিনা। 😀
কিন্তু এই মানুষটা গত শতাব্দীর মাঝ থেকেই আছেন, আর লেখাটাতেও টেকনোলজির কথা, ব্যবহৃত শব্দগুলো সবই নতুন। তাই অন্য কিছু ভাবনার অবকাশ পাইনি। আগের কারো লেখর কথা উল্লেখ নেই দালাইলামা ডট কমে। ওখান থেকেই খোঁজ করেছিলাম বিস্তারিত তথ্যাবলী।
এই অনুবাদটা আমার করা দ্বিতীয় অনুবাদ। তাই কাঁচা হাত বোঝা যাওয়াই স্বাভাবিক। আশা করি আগামীতে *ভাবযুক্ত* অনুবাদ হবে 😀