বড়বাড়িতে আজ মহা হইচই পড়িয়া গিয়াছে। আজ প্রভাত হইতে না হইতে নিবারণ ডাকবাক্স খুলিয়া চেঁচাইতে লাগিলো। দূর দেশের ডাকটিকিট দেখিয়া নিবারণ বুঝিয়ে ফেলিয়াছে, নিশ্চয়ই জরুরী কোন খবর। তাহাতেই সকাল বেলায় এতো মাতিয়া উঠিয়াছে বড়বাড়ি।
সেই চিঠিখানা লইয়াই এতো কাণ্ড হইবে, কে ভাবিয়াছিল। বাড়ির দুই কন্যা চিঠিখানা লইয়া যেই কাড়াকাড়ি করিল, তাহাতে মনে হইতেছিল, কোন গুপ্তধন যে কোন মুহূর্তে চিঠির খাম হইতে ঝাপাইয়া মাটিতে আসিয়া পড়িবে। অবশেষে বড় কন্যা চিঠিখানা দখল লইয়া পড়িতে লাগিলো আর দাওয়ার দূর প্রান্তে গাল ফুলাইয়া ছোট কন্যা বসিয়া থাকিলেও তাহার কান জোড়া যে এই দিক পানে উঁকি দিয়া রহিয়াছে, তাহা বুঝিতে কাহারোই বাকী রইলো না।
অতঃপর, কিয়ৎক্ষণ পরে বড় কন্যার তুমুল চিৎকারে আর হড়বড় করিয়া বলা বাক্যে চিঠির মর্মার্থ অনুধাবন করা গেলো। তাহার বহু দিনের সাথী দূর দেশ হইতে এই দেশে বেড়াইতে আসিতেছেন। সেই আনন্দধ্বনি বুঝি সারা গ্রাম জুড়িয়া ছড়াইয়া গেলো।
বড়বাড়ির দুই কন্যাকে লইয়া পুরো গ্রাম খানাই বড্ড ভাবনায় থাকে। একই বাড়িতে থাকিয়া তারা যেন একজন আরেকজনের ছায়া মাড়াইতে পারে না। কোন অনাদিকাল হইতে তাহাদের এরূপ নিম-বৃক্ষের রসের ন্যায় মধুর সম্পর্ক আরম্ভ হইয়াছে, আজকাল তাহা আর কেউ স্মরণ করিতে পারে না। তবে, উভয়ের মধুর সম্পর্ক জাগিয়া উঠিলে তাহার নিমরস কিছু বড়বাড়ির দরজা-জানালা উপচাইয়া গ্রামেও ছড়াইয়া পড়ে। তাহাতে কারো মঙ্গল হয়-এমন কথা কোন দুর্মুখেও কইবে না।
সেই দূর দেশের সাথীর কথা শুনিয়া বড় কন্যা ভাবিতে ভাবিতে দৃষ্টি দূর দিগন্তে রাখিয়া আকাশ-পাতাল এক করিয়া ফেলে। কী মহামূল্যবান বস্তু তাহার সখী তাহার জন্য লইয়া আসিবে, ওই বস্তু কীরূপে তাহার সম্মান বহুগুণ বাড়াইয়া দিবে ভাবিয়া তাহার মনে বিষম পুলক বোধ হয়।
ছোট কন্যা সারাদিন ধরিয়া উঠানে পায়চারী করিতে করিতে পায়ে অসার অনুভূতি ডাকিয়া লইয়া আসেন। তবুও, কী করিলে সেই দূর দেশের কন্যা তাহার প্রতি ভীষণ দরদ বোধ করিবে- সেই পথ খুঁজিয়া পান না। যাহা করিয়াই হোক, বড় কন্যার মতন দূর দেশের কন্যার প্রিয়পাত্র হইতে তাহার বড়ই শখ জাগিয়া উঠে।
দূর দেশের কন্যা বড়বাড়ি আসিবে শুনিয়া মাঝারী বাড়ির পুত্রও খাতার উপর উপুড় হইয়া পড়ে। কী করিয়া, কী শব্দে লিখিলে তাহার প্রতি বড়বাড়ির কন্যার অনাচার বর্ণনা ফুটাইয়া তোলা যায়, তাহা ভাবিয়া সে অধীর হইয়া উঠে। দূর দেশের কন্যা তাহারও পুরানো দিনের সাথী। সে নিশ্চয়ই তাহার কষ্ট বুঝিয়া এই গ্রামে তাহার সম্মান ও ততোধিক মূল্যবান ‘পদ’ ফিরাইয়া দিবার ব্যবস্থা করিবে।
রাত গভীর হইলেও বড়বাড়ির কন্যাদ্বয় ও মাঝারী বাড়ির পুত্রের চোখে ঘুম আসিবার কোন লক্ষণ দেখা যায় না। পরদিনই ভিনদেশী কন্যা চলিয়া আসিবে। তাহার সাথে কী আলাপ করিবে আর কী পাইবে ভাবিয়া তাহাদের নিদ্রা দূর দেশে পলায়ন করিয়াছে। জাগিয়া জাগিয়া সুখস্বপ্ন দেখিতে পারিলে নিদ্রার আর প্রয়োজনই বা কী?
[ইহা একখানা কাল্পনিক গল্প। পৃথিবীর কোন কিছুর সাথে ইহার মিল খুঁজিয়া পাইলে উহা পাঠকের দুষ্ট মনের লাগামহীন কল্পনা মাত্র।]
একটা অপ্রাসঙ্গিক ছোট্ট খবর: মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি ক্লিনটন কাল বাংলাদেশে আসছেন।
-
আর্কাইভ
- এপ্রিল 2018
- নভেম্বর 2017
- অক্টোবর 2017
- সেপ্টেম্বর 2017
- মার্চ 2017
- ফেব্রুয়ারী 2017
- জানুয়ারী 2017
- নভেম্বর 2016
- অক্টোবর 2016
- সেপ্টেম্বর 2016
- আগস্ট 2016
- জুলাই 2016
- জুন 2016
- মে 2016
- এপ্রিল 2016
- মার্চ 2016
- ফেব্রুয়ারী 2016
- জানুয়ারী 2016
- ডিসেম্বর 2015
- নভেম্বর 2015
- অক্টোবর 2015
- সেপ্টেম্বর 2015
- আগস্ট 2015
- জুলাই 2015
- জুন 2015
- মে 2015
- এপ্রিল 2015
- মার্চ 2015
- ফেব্রুয়ারী 2015
- জানুয়ারী 2015
- ডিসেম্বর 2014
- নভেম্বর 2014
- অক্টোবর 2014
- সেপ্টেম্বর 2014
- আগস্ট 2014
- জুলাই 2014
- জুন 2014
- মে 2014
- এপ্রিল 2014
- মার্চ 2014
- ফেব্রুয়ারী 2014
- জানুয়ারী 2014
- ডিসেম্বর 2013
- নভেম্বর 2013
- অক্টোবর 2013
- সেপ্টেম্বর 2013
- আগস্ট 2013
- জুলাই 2013
- জুন 2013
- মে 2013
- এপ্রিল 2013
- মার্চ 2013
- ফেব্রুয়ারী 2013
- জানুয়ারী 2013
- ডিসেম্বর 2012
- নভেম্বর 2012
- অক্টোবর 2012
- সেপ্টেম্বর 2012
- আগস্ট 2012
- জুলাই 2012
- জুন 2012
- মে 2012
- এপ্রিল 2012
- মার্চ 2012
- ফেব্রুয়ারী 2012
- জানুয়ারী 2012
- ডিসেম্বর 2011
- নভেম্বর 2011
- অক্টোবর 2011
- সেপ্টেম্বর 2011
- আগস্ট 2011
- জুলাই 2011
-
সদর দরজা
:happy:
“সে নিশ্চয়ই তাহার কষ্ট বুঝিয়া এই গ্রামে তাহার সম্মান ও ততোধিক মূল্যবান ‘পদ’ ফিরাইয়া দিবার ব্যবস্থা করিবে।” 🙄
দাদা জটিল হইসে,আমি কিন্তু লাগামহীন কল্পনা করে নিয়েছি। :huzur:
সে আপনার ইচ্ছে, আমি কিন্তুক কিছুই বলি নাই 😛
হাহা!! =))
হাসি স্বাস্থ্যের জন্য ভালো। হাসুন 😀
হাহাহা। দারুণ হইছে, কিন্তু আমার মজাটা একটু নষ্ট হয়ে গেছিল, আগে থেকেই কিছু কমেন্ট দেখে ফেলছিলাম ফেবুতে, এই জন্য। শেষের টুইস্টটা প্রত্যাশিত ছিল আর কি!
:dhisya: পোস্ট! 😀
আগে লিংক দেখতে হয়, পরে কমেন্ট! নাহলে মজা নষ্ট হয় 😛
ধন্যবাদ 😀
ওহ্ তাই নাকি? আমি ঝানতাম না! 😛
এই তো ঝানা হলো 😛
“কোন অনাদিকাল হইতে তাহাদের এরূপ নিম-বৃক্ষের রসের ন্যায় মধুর সম্পর্ক আরম্ভ হইয়াছে, আজকাল তাহা আর কেউ স্মরণ করিতে পারে না। তবে, উভয়ের মধুর সম্পর্ক জাগিয়া উঠিলে তাহার নিমরস কিছু বড়বাড়ির দরজা-জানালা উপচাইয়া গ্রামেও ছড়াইয়া পড়ে। তাহাতে কারো মঙ্গল হয়-এমন কথা কোন দুর্মুখেও কইবে না।”
হাহহাহাহ!!! :happy: :huzur:
আমার দুষ্ট মন লাগামহীন কল্পনা করে ফেলসে… :yahooo: 😛
😛 😀
:happy:
দারুণ =))
যদিও গল্পটা সাধু ভাষায় সুন্দরভাবে ফুটে উঠেছে তারপরেও সাধু ভাষা বেশি ভালো লাগে না।
😀
ধন্যবাদ আপনার মতামতের জন্য। কেন যেন মনে হচ্ছিলো, এটা সাধু ভাষায়-ই মানাবে ভালো……তাই।
দারুণ আইডিয়া এবং চমৎকার লেখা :happy:
ধন্যবাদ 😀
নির্মল বিনুদুন!! ব্যাপক মজা পাইলাম… :dhisya:
তবে আমার মনে হইতেছে, লেখাটা সাধু ভাষাতেই মানাইয়াছে ভালো। চলিত ভাষাতে লিখিলে রসটুকু বোধহয় আস্বাদন করিতে পারিতাম না.. :happy:
ধন্যবাদ :happy:
ভাই রে ভাই!! ফেবুতে শেয়ার না দিয়ে পারিতেছি না 🙂
:clappinghands:
হি হি 😀