রাত প্রায় তিনটা বাজে। ঘুমাতে যাব যাব করতেছি। যদিও জানি ঘুম আসবে রাত পাঁচটার পরে। অবশ্য সেটা সকাল নাকি রাত এ বিষয়ে কখনও ভাবি নাই! সেই জানুয়ারি মাসে ক্লাস শেষ হইছে, এখনও ক্লাস শুরু হওয়ার কোন নাম নাই :happy: । মধ্যে অবশ্য ৫ দিন পরীক্ষা ছিল। তো এই ছুটির মধ্যে সবচেয়ে বড় যে অর্জন সেটা হচ্ছে রাত ৫ টায় ঘুমানোর পর সকাল ২ টায় ওঠা এবং অত্যন্ত পাংচুয়াল ছেলের মত ভাত খাইয়া আবার ঘুমের মধ্যে ডুব দেয়া।
যাইহোক, যে কথা বলার জন্য লেখাটা শুরু করছিলাম সেটাতে যাই। ঘুমাতে যাওয়ার আগে ফেসবুক দেখাটা ইদানিং অবশ্যকরণীয় একটা কাজ (ইহা সকলের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য)। সেটার জন্যই বসলাম। আজকাল অদ্ভুত ঘটনা ঘটে ফেসবুকে। অদ্ভুত ব্যাপারগুলা দেখতে দেখতে অবশ্য এখন অভ্যস্ত। অদ্ভুত ব্যাপারগুলা যখন বার বার ঘটতে থাকে তখন সেগুলাকে আর অদ্ভুত বলা যায় না। সেরকমই একটা আদি-অদ্ভুত ব্যাপার চোখে পড়ল। দেখিলাম আমার এক বন্ধু ফেসবুকের কল্যাণে সদ্য বিবাহিত ‘পদবী’ পাইয়াছেন। ভাবলাম একটু সদ্য বিবাহিত বন্ধুর খোঁজ-খবর নেওয়া দরকার। কিছুই জানা গেলনা অথচ কত ঘটনা ঘটে গেল। ভাগ্য ভালই বলতে হবে। বাসর রাতে তাকে অন-লাইনে(আই মিন চ্যাট) পাব ভাবি নাই। বন্ধুরে ডাক দিলাম- ও বন্ধু… ১ মিনিট যায়… ২ মিনিট যায়… ৫ মিনিট যায়। যে বন্ধু ডাক দেওয়ার আগেই উত্তর দেয় তারে আজকে যে পাওয়া যাবে না সেটা তো জানা কথা। হাজার হোক বাসর রাত। আর প্রায় ৯ মিনিট পর তার উত্তর পাওয়া গেল।
– কি খবর বন্ধু?
– আমার আর কি খবর? খবর তো এখন তোদের। তবে রাত ৮ টার খবর না কিন্তু। 😛 কাহিনি কি?
– কাহিনি আবার কি?
– অই যে বিবাহের সংবাদ টা…
– অইটা আর কাহিনির কি আছে। ফেসবুকে দেখস নাই ২ ঘন্টা আগে তো ‘ইন এ রিলেশানশিপ ছিল’।
– তার ২ ঘন্টা আগে কি সিঙ্গেল ছিল দোস্ত? 😉
– হ। ছিল। তা তোরে দেখা যায় না ক্যান?
– ও… আমি একটু পড়াশুনা নিয়া ব্যস্ত তো তাই অফ-লাইন থাকি আর কি।
– পড়াশুনা? ছুটির মধ্যে আবার কিসের পড়া? ভার্সিটি বন্ধ না তোদের?
– না মানে, একখান উপন্যাস রিভিশান দিতেছিলাম আর কি 😀
– আচ্ছা দিতে থাক আমি যাই একটু কাজ আছে…
– আমার তো আর দেয়ার( 😛 ) সুযোগ নাই …
– মানে?
– মানে তুই যা :wallbash:
তো এই অবস্থা যখন, সেই তখন থেকে ভাবতেছি, ২ ঘন্টার মধ্যে আমার অবিবাহিত বন্ধুটি কি এমন বিশেষ কর্ম সম্পাদন করিল যে বিবাহিত হইয়া গেল! দ্বিতীয় একটা কথা মনে হওয়ায় অবশ্য আগের চিন্তা উদয় হওয়ার সম্ভবনা শূণ্যে পরিণত হল। সৃষ্টিকর্তাকে ধন্যবাদ দিতে দিতে মনে মনে বললাম, ভাগ্য ভাল… সদ্য বিবাহিত বন্ধুটি যে তাহার সাধের বাসর ঘর জনসম্মুখে(আই মিন ওয়াল-পুষ্টে) না করিয়া বদ্ধ ঘরে (আই মিন চ্যাট বক্সে) করিতেছে তাহাই সাত জনমের ভাগ্য।
অবশ্য এরকম একটা বন্ধু বন্ধুবৃত্তে থাকা সৌভাগ্যের ব্যাপার। মোবাইল থেকে শুরু করে গেমপ্যাড(!) পর্যন্ত এমন কোন বস্তু নাই যা দিয়ে তাকে পঁচানো যায় না। সৌভাগ্যটা অবশ্য এখন সহজলভ্য।
আসলে যে কারণে লিখতে বসলাম সেটা এখনও লেখা হয় নাই। পুরানো জিনিস নিয়া ত্যানা প্যাচাইতে প্যাচাইতে সেটাও অভ্যাস হয়ে যাচ্ছে। তার আগে বলি, এক-দেড় মাস আগে আমরা কয়েক বন্ধু গেছিলাম চট্টগ্রামে। সেখানে পতেঙ্গা বিচে দেখলাম কিছু লোক এক হাতে ক্যামেরা আর অন্যহাতে গিটার নিয়ে দাঁড়ায়ে আছে। জিজ্ঞেস করলাম, ভাই গিটার নিয়া কি করেন? লোকটা বলল, গিটার নিয়া ছবি তুলবেন? আমরা কেউ সেই সাহস না দেখালেও একটু পরই জনৈক ব্যক্তিকে সমুদ্রের মধ্যে কোমর পানিতে গিটার হতে ছবি তুলতে দেখে আমারা প্রশংসা না করে পারলাম না। যাইহোক এতদিন পর, আজকে ফেসবুকে এমনই এক ব্যক্তির দেখা মিলল। উহা দেখিয়া ফেলুদার জটায়ুর মত আমিও মনে মনে বলিলাম, “স্তব্ধভাষ রুদ্ধশ্বাস বিমুগ্ধ বিমূঢ় বিস্ময়”!
যাহা দেখিলাম তাহা হইলঃ “জনৈক ব্যক্তি ইজ ম্যারিড টু হিজ গিটার”। :crying:
যাক অনেকদিন পর অদ্ভুত কিছু তো পাওয়া গেল।
বিঃদ্রঃ ক্লাস শুরু হওয়ার নাম পাওয়া গেছে। 🙁 লেখার শেষের দিকে শুনলাম সোমবার থেকে ক্লাস।
মজা পাইলাম :happy:
ধন্যবাদ 😀
ভাল হইসে বস, চালায়া যান! 😀
ধন্যবাদ
“জনৈক ব্যক্তি ইজ ম্যারিড টু হিজ গিটার 🙁
আচানক বটে
আসলেই আচানক 🙁
জনৈক!
হাসতে হাসতে শ্যাষ :happy:
মজারু :guiter:
😀
কি চোন্দর…
:happy:
হা হা, আমার ফেইসবুকে আমি আমার বান্ধবীর সাথে ম্যারিড। এইটা নিয়ে মহা কাহিণী হয়। প্রথমেই লোকজন অনেক ভয় পায় যে একি! এর নাম তো মেয়েদের মতন, তাইলে কি ছেলে? নাকি … এই আপা আবার সে…ই রকম আপা? :p
😳 ভয় পাইছি!
কার যেন একবার রিলেশনশিপ স্ট্যাটাস দেখেছিলাম, “ম্যারিড টু বুয়েট” 😛
চিন্তার বিষয় :thinking:
দোস্ত , মজা পাইলাম, ফিনিশিং টা সুন্দর হইসে , ,আরও নতুন কিছু আশা করছি:D
দোস্ত কি খবর? অনেকদিন কথা হয় না
আমার লিস্টে একজন… ইন আ রিলেশনশিপ উইথ হার ল্যাপ্টপ!
হা হা । কিন্তু চিন্তার বিষয় :thinking:
সরব এ স্বাগতম!
মজা পাইছি! 😀
“জনৈক ব্যক্তি ইজ ম্যারিড টু হিজ গিটার” 🙄
:thinking: চিন্তায় পরে গেলাম
আরো ভালো লেখা চাই। হচ্ছে কিন্তু কিছু যেন নেই নেই।
প্রথম লেখা… সামনে চেষ্টা করব 🙂
সত্যিই, ভীষণ মজা পেলাম। :happy: :babymonkey:
ফেবুর কল্যাণে আমদের কি অদ্ভুতভাবে সামাজিকীকরণ হচ্ছে!!!
কখনও দেখি একজন আগের দিন ম্যারেড, আর পরের দিন সিঙ্গেল!!! :thinking:
কি বিচিত্র!! 🙁
আসলেই বিচিত্র 😐