প্রতিদিনের রুটিন?
হুমম। সকাল দশটায় ঘুম থেকে উঠা — সোফায় গা এলিয়ে চা খেতে খেতে পত্রিকায় চোখ বুলানো — ফেসবুকে একটা স্ট্যাটাস দেয়া — দুপুরের খাবার শেষে একটা আরামের ঘুম — ঘুম থেকে উঠে একবার নোটিফিকেশন চেক করা — বন্ধুদের নিয়ে ঘুরতে বের হওয়া — অতঃপর রাতের খাবার শেষে আরেকটি স্ট্যাটাস দেয়া:
“ধুর লাইফ আর ভাল্লাগে না!!”
এবার ভুলানন্দ নৈশ উচ্চবিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের রুটিন শুনুন।
ভোর পাঁচটায় ঘুম থেকে উঠা। সকাল ন’টা পর্যন্ত যতটুকু সম্ভব ঘরের কাজে সাহায্য করা। ন’টা- পাঁচটা কাজের টাইম! বেঁচে থাকা দায়, বিলাসিতা কেমনে করিব হায়? পরিবার চালানোর গুরুদায়িত্ব এই অল্প বয়সেই তাঁদের নিতে হয়েছে, উপার্জনের পথ নিজেদেরই খুঁজে নিতে হয়েছে। অতএব দুপুরের খাবার হাতে নিয়ে বের হও ‘অফিস’ করতে।
কিন্তু পড়াশোনা?
স্বপ্ন তো হার মানে না!! সারাদিন কাজ শেষে সন্ধ্যাটা তাঁরা শুয়ে বসে নষ্ট করেন না, বরং এবার ছুটে যান জ্ঞানের আলোকের সন্ধানে। সাড়ে ছয়টা থেকে সাড়ে দশটা পর্যন্ত নৈশবিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেন তাঁরা।
সিলেটের চৌহাট্টায় অবস্থিত এই ভুলানন্দ নৈশ বিদ্যালয়। পঞ্চম থেকে দশম শ্রেণী পর্যন্ত ২৩৩ জন শিক্ষার্থী আছেন এই প্রতিষ্ঠানে, ৯জন শিক্ষক তাঁদের জ্ঞানের পথনির্দেশনা দেন। সিলেট সিটি কর্পোরেশনের সামান্য অর্থায়নে চলছে স্কুলের কার্যক্রম।
দুখের সঙ্গে বসবাস, সুখের পানে পদযাত্রা! শিক্ষার্থীরা পড়াশোনা করতে চান, ভর্তি হওয়ার, বেতন দেবার সামর্থ্য হয়তোবা সবার নেই। চিন্তার কিছু নেই –ভর্তি ফি, পড়াশোনার খরচ এখানে নেয়া হয় না! স্কুলের কোন বাড়তি ফান্ডিং এর ব্যবস্থা নেই, গড়ে তোলা যাচ্ছে না লাইব্রেরিটাও, শিক্ষকদের বেতনও অতি নগন্য। তবুও হার মানেন না তাঁরা, লড়াই করে যান প্রতিদিন– স্বপ্নকে নিজের করে নেয়ার জন্য।
এবারে সুখবরটা দেই। এ বছর SSC পরীক্ষায় শতভাগ পাশের গৌরব অর্জন করেছে এই স্কুলের শিক্ষার্থীরা!! ষোল জন পরীক্ষার্থী ছিলেন, ৩ জন A পেয়েছেন, বাকি সবাই A- !! :love:
একবার ভাবুন তো, সারাদিন কঠোর পরিশ্রম করে জীবিকা নির্বাহের পর রাতে ক্লান্ত দেহে পড়াশোনা করা– এরপরও এতো দুর্দান্ত ফলাফল!
শ্রদ্ধা। শ্রদ্ধা। শ্রদ্ধা।।
এ ধরণের মানুষের কথা যখন শুনি, পড়ি– গর্বে বুকটা ফুলে উঠে। এঁরাই তো আমাদের দেশের শ্রেষ্ঠ নাগরিক!! দেশের সবার জন্যই এঁরা অনুপ্রেরণা– হার না মানা মানসিকতার, জ্ঞানের রাজ্যে বিজয়কেতন উড়াবার!
আপনারা এগিয়ে যান! আমাদের পক্ষ থেকে অনেক অনেক অনেক অনেক শুভেচ্ছা আর ভালোবাসা রইল আপনাদের জন্য!! :love:
স্কুলটির ফেসবুক পেজের লিঙ্ক।
কী চমৎকার!
শুভ কামনা তাদের জন্য। 🙂
:love:
খুব মন ভালো হয়ে গেল খবরটাতে রাইয়্যান! সেইসাথে ফেইসবুক লিংকটার জন্য ও ধন্যবাদ। 🙂
:penguindance:
শ্রদ্ধা ও শুভকামনা রইলো প্রতিটা শিক্ষার্থীর প্রতি……
এবং স্যারদের প্রতিও!! 😀 :huzur:
দারুণ দারুণ!
:love: 😀
কী দারুণ ওদের মানসিক শক্তি! আমি এই রেজাল্টের মহাসাফল্যের যুগে এদেরকেই সবচাইতে বেশি ‘হিরো’ হিসেবে পেলাম। অনেক শুভকামনা রইলো ওদের জন্য
“রেজাল্টের মহাসাফল্যের যুগে এদেরকেই সবচাইতে বেশি ‘হিরো’ হিসেবে পেলাম।”
শতভাগ সহমত!!!!
ধন্যবাদ এমন একটা পোস্টের জন্য………
শ্রদ্ধা!
ছাত্র-শিক্ষক সবার প্রতি………
কোথাও না কোথাও স্বপ্নের দেখা মেলেই……………… 🙂
:love: :happy:
অনেকদিন পর ঘাটাঘাটি করতে করতে হঠাৎই নামটা সামনে এসে গেল।
ভাবতেই ভাল লাগে, এই অসাধারণ প্রতিষ্ঠানটার সাথে আস্তে আস্তে আমিও মিশে যাচ্ছি, যাব… … …
ধন্যবাদ, রাইয়্যান ভাইয়াকে, ওদের ফোকাস করবার জন্যে! 😀