বলেছিলে তাই , চিঠি লিখে যায়

চৈতি ,

 

কেমন আছ তুমি? কোথায় আছ আছ তুমি, তার খোঁজ এখন আর করিনা।যার বাস মনে তাকে বাইরে খোঁজা খুঁজি করে কি লাভ! অনেকদিন পর এই সত্যের অনুসন্ধান পেয়ে এখন আমি শান্ত আর স্থির।

 

কেমন আছ, এ কথা জিজ্ঞাসা করায় বলতে পার যার বাস মনে সে কেমন আছে সেটা আমি জানিনা? একটু অবাক হতেই পার, তবুও শুধালাম এইজন্য তোমার কোন পরিবর্তনই হয় নাই এতদিন পরেও, ঠিক যে রকম ছিলে সে রকমই আছ হৃদয়ে। তোমার তাতে ভাল লাগছে কিনা, তাই জানতে চাইলাম আর কি । সবায় তো পরিবর্তন পছন্দ করে, তুমিও করো। তাই তো চলে গেলে, কিন্তু রয়ে গেলে মনের মুক্ত মঞ্চে। আর তোমার সেই নাটক গুলো প্রতিনিয়তই রিপিট হয় আমার মনের মঞ্চে, কি যে সুখ ও বেদনা তাতে তোমাকে বোঝায় কি করে!!! দুঃখ সুখের মিলন বড়ই অদ্ভুত !

 

তোমার কি মনে আছে হারিয়ে যাওয়ার দিনটি??? সেইদিন থেকেই আমি যে তোমাকে পাগলের মত হন্যে হয়ে খুঁজেছিলাম। দেখ কি বোকা আমি! যে তোমার উপস্থিতি আমার অস্তিত্ব তাকেই আমি খুঁজে বেড়িয়েছি এখানে সেখানে আরও কত জায়গায়, ভাবলেই এখন হাসি পায় । সেই বোকামিতে তখন যতটা কষ্ট হয়েছিল এখন মনে করলে ততটাই হাসি পায়।

 

তোমার সেই দুষ্টু – মিষ্টি হাসি , বাঁকা চোখের চাহনি ,মায়ায় জড়ানো অদ্ভুত সুন্দর প্রেম আলাপ ,তোমার বাচনভঙ্গি আমার মাঝে এখনও জীবন্ত । যতই দিন যাচ্ছে এগুলো যেন সামনের মেঘ কেটে ততই উজ্জ্বল হয়ে উঠতেছে । তুমি নিশ্চয়ই দেখেছ মেঘযুক্ত আকাশে যখন পূর্ণিমার চাঁদ  মেঘের  আড়াল থেকে ধীরে ধীরে যখন সামনে চলে আসে , তখন অন্য সময়ের চেয়ে বেশি উজ্জ্বল ও ভাল লাগে । আমার স্মৃতিগুলোর ও এমন দশা হয়েছে । প্রথম ভাললাগার মুহূর্ত গুলো আজ অন্য রকম জীবন্ত হয়ে ভেসে উঠেছে চোখের সামনে, আমি যেন বাস্তবে তোমাকে দেখছি । জানি এগুলোর এক কানাকড়িও মূল্য তোমার কাছে নেই। যা হয়েছিল সেগুলো নিয়ে পরে থাকলে তো আর জীবন চলে না,  তা আমি জানি, কিন্তু আমি যে তোমার মত হতে পারি না, তোমাকে ভুলতে পারিনা । বৃত্তের মত তোমার চারপাশেই ঘুরপাক খায়।

 

যখন আমি অপলক চোখে চেয়ে থাকতাম তোমার দিকে, তুমি যেন আমাকে না দেখ এজন্য আড়াল করে রাখতাম  নিজেকে। হাজারো ছেলে যাকে পাবার জন্য ব্যাকুল তাদের মাঝে আমি অতি নগন্য। তুমি যে নিঃসন্দেহে রাজকন্যা ছিলে তা তোমার অজানা ছিল না। আমি তোমাকে দূর থেকে দেখতে পেলেই ধন্য  হতাম , মনের অজান্তে চলে আসত

 

“আমি দূর হতে তোমারে দেখেছি ,

আর মুগ্ধ এ চোখে চেয়ে থেকেছি “

 

আমার এই ভালবাসা কখন কিভাবে তুমি বুঝতে পারলে জানিনা, আমি কখনও নিজেকেও জানতে দিতে সাহস পেতাম  না যে আমি তোমাকে ভালবাসি । ভাল মনে হয় সত্যিই বেসেছিলাম ,তাই সবার প্রকাশ্য ভালবাসা ,আমার নীরব ভালবাশার কাছে হার মানল । ধীরে ধীরে তুমি এলে , কিন্তু ভয় হচ্ছিল আমার  কারণ কোন কিছু গড়েই ভাঙ্গার জন্য , আর ভাঙ্গে গড়ার জন্য । তবুও নিজেকে বুঝালাম ,তোমাকে বুঝালাম কিন্তু কোনটাতেই কাজ হলনা । হয়ত আবেগের বশে দুজনই পরাজিত হয়েছিলাম । কিন্তু তোমার যেদিন ঘোর ভাঙল ,সেদিন তুমি আমাকে ঘোরের মধ্যে ফেলে চলে গেলে …… এখন বড় একা আমি , বড় শূন্য আমি ।

 

এসব ভেবে আগে অনেক কষ্ট পেতাম দুঃখের কষ্ট, কিন্তু এখন এটাই আমার সুখ এতেই আমার শান্তি ……………… তোমার কথা ভাবতে ভাবতে যখন হারিয়ে যায়, কোন ফাকে যে চোখের দু- কোনে জল গড়িয়ে পড়ে বুঝতেই পারিনা ………………

 

এখন আমার সব অনুভূতি হারিয়ে গেছে । আগে অল্পতেই অনেক কষ্ট পেতাম আবার অল্পতেই অনেক আনন্দ পেতাম । দুইটার মাত্রায় ছিল বেশি কিন্তু এখন আর কষ্ট – আনন্দের পার্থক্য বুঝি না । কষ্ট পেতে পেতে অনুভূতি সব ভোতা হয়ে গেছে  । আগে হারানোর ভয় ছিল , তুমি হারানোর পর আমার আর কোনদিন কোন কিছু হারানোর ভয় হয় নি ………

 

তুমি আমাকে দিয়ে গেছ  জগতের সবচেয়ে অদ্ভুত অনুভূতি , তাইতো তোমাকে এখনও ভালবাসি । তুমি চলে না গেলে হয়ত অনেক কিছুই অজানা থেকে যেত পৃথিবীতে ……………ভালবাসি ভালবাসি ভালবাসি তোমাকে, অনেক বেশি ভালবাসি

জিপি

সজীব সম্পর্কে

জীবন ও জগত দুইটাই রহস্যময় । মানুষ আরও বেশি মাত্রায় রহস্যময় ।
এই লেখাটি পোস্ট করা হয়েছে পাগলামি, সাহিত্য, স্মৃতিচারণ-এ এবং ট্যাগ হয়েছে , , স্থায়ী লিংক বুকমার্ক করুন।

6 Responses to বলেছিলে তাই , চিঠি লিখে যায়

  1. বোহেমিয়ান বলেছেনঃ

    আমার ভালো লাগছে।

    লেখালেখি চলুক ভাইয়া।

  2. সামিরা বলেছেনঃ

    সামনে আরো ভাল লেখা আশা করছি। 🙂

  3. অনাবিল বলেছেনঃ

    ভালোবাসা…………… 🙂

    কিছু টাইপো আছে…… সবায়> সবাই

    লেখালেখি চলুক………… 🙂

  4. সজীব বলেছেনঃ

    ভাইয়া আমি মন্তব্য টা বুঝতে পারি নাই :thinking:

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।