খুব যে ঘুরেছি এক জীবনে তা নয়। তবে স্বপ্ন দেখতে বাধা কোথায়? কখনো হাতে টাকা হলে এবং সামর্থ্য থাকলে কোথায় কোথায় যাবো, অনেক ভেবেছি। এ ভাবনা যেন শেষ হবার নয়! হিমালয়ের বরফের রাজ্য থেকে ইউরোপের অপরূপ মধ্যযুগীয় স্থাপত্য ঘুরে গ্র্যান্ড ক্যানিয়ন বা আমাজনের গভীর অরণ্য-কোন কিছুই স্বপ্ন থেকে বাদ পড়ে না। এমন কিছু জায়গার কথাই আসবে এ পোস্টে, যেখানে একবার অন্তত যেতে চাই।
এক যে ছিল কোরাল। সেই প্রাণী, তার সমস্ত বংশধর মিলে ছয় লাখ বছর ধরে বুনে চললো এক বিশাল স্থাপনা। তারা হয়তো কোনদিন দেখলো না, কী অপরূপ সৃষ্টি গড়েছে,কিন্তু, আমার মতো মানুষেরা এর সৌন্দর্যে ছুটে যেতে চায় পৃথিবীর দূর প্রান্ত থেকে।
২৬০০ কি.মি. এই রীফের উপর নির্ভর করে বাঁচে ১০০০০ প্রজাতির জীব।
একটা প্রাণী ও তার সমস্ত বংশধরেরা লাখ বছর ধরে গড়ে চললো এই রীফ, আমি এই মহান সৃষ্টি না দেখে থাকবো, ভাবতে পারি না।
পাথুরে প্রাচীরে শো শো করে বয়ে চলা বাতাস আর বহু নিচে বয়ে চলা কলোরাডো নদী যেন মনে করিয়ে দেবে পৃথিবীটা কত্ত পুরনো। ১৭ মিলিয়ন বছর ধরে বয়ে চলা নদী পৃথিবীর বুক চিরে বসে গেছে মাইল-খানেক গভীরে।
গ্র্যান্ড ক্যানিয়নের কোটি বছর পুরনো নদী, বয়ে চলা বাতাস আর নিস্তব্ধতা যেন একাকীত্বকে করে তুলতে পারে অনেক বেশি আপন।
১১৮ টা ছোট্ট দ্বীপের মাঝে দিয়ে বয়ে চলা অসংখ্য খাল আর দ্বীপগুলোকে সংযোগ করা অসংখ্য ব্রিজ: একটাই অসাধারণ শহর, ভেনিস। আমি কল্পনায় দেখতে পাই, একটা নৌকায় করে শহরের খালগুলোতে ঘুরে বেড়ানো, গভীর রাতে ঘরের পেছনে পানিতে পা ডুবিয়ে বসে থাকা, স্রোতধারায় ভেসে যাওয়া সমগ্র ভাবনা।
বাড়তে থাকা জলরাশি শহরটাকে ডুবিয়ে দেয়ার আগেই যেতে চাই ভেনিস-এ।
প্রায় আড়াই হাজার মিটার পর্বতের উপরে অবস্থিত এক অপূর্ব শহর, চোখ ধাঁধানো সৌন্দর্য, বিস্ময়কর স্থাপনা, কৃষিকাজের মানানসই ব্যবস্থা-প্রতিটি জিনিসে যেন ইনকা সভ্যতার বুদ্ধিমত্তার প্রগাঢ় ছাপ। ছয়শ বছর আগে এমন উঁচু স্থানে এমন অসাধারণ স্থাপনা যারা নির্মাণ করেছেন, তাদের সভ্যতা হিংসা করার মতো এগিয়ে ছিল বাকী পৃথিবী থেকে।
চারদিকে ঘুরতে থাকা ধোঁয়াটে কুয়াশার মাঝে হারিয়ে যেতে চাই হারানো সভ্যতার অপরূপ শহরের অলিগলিতে।
কাশ্মীর নামের সাথে সাথে চোখে ভেসে ওঠে যুদ্ধে আহত এক বিশাল এলাকার কথা। পৃথিবীর বুকে তাকে নিয়ে টানাটানি করা তিন দেশের যুদ্ধের দামামার মাঝে হারিয়ে যায় তার সৌন্দর্যের গল্পগাথা।
যতদূর চোখ যায় পাহাড়-সারি, টলটলে পানির লেক, রঙিন ফুলের বাগান, সবুজের সমারোহ, শীতের তুষারশুভ্র প্রান্তর-পৃথিবীর সব সৌন্দর্য যেন জমা হয়েছে এখানে এসে।
পৃথিবীর মাঝে “এক টুকরো স্বর্গ” কাশ্মীর দেখে চোখ জুড়ানোর বড্ড ইচ্ছে হয়।
আমি জানি না, এর মাঝে কোথাও যেতে পারবো কি না। কিন্তু, স্বপ্ন দেখে যাই, নিশ্চয়ই যাবো। মন ভরিয়ে, চোখ জুড়িয়ে উপভোগ করবো প্রকৃতির সৌন্দর্য।
ছবি: ইন্টারনেট
[পরবর্তী পর্বে আরো কিছু এমন আরো জায়গার কথা বলতে চাই, যদি পাঠক পড়তে চায়।]
এই পোস্টটি ব্লগারের ৫০তম পোস্ট। প্রত্যেক পাঠককে ধন্যবাদ জানাচ্ছি, যাদের কারণে ব্লগিং এর উৎসাহ পাই।
প্রথমেই অভিনন্দন! 😀 (এবং বুকভরা হিংসা, আপনার আগে লেখা শুরু করছিলাম এই ব্লগে!) 😛
ছবিগুলি নিয়ে মন্তব্য নিষ্প্রয়োজন!
এবার ছুটিতে কাশ্মীর নিয়ে একটা ভ্রমণ কাহিনী পড়লাম। এত সুন্দর, এত সুন্দর! লেখক তেমন বিখ্যাত কেউ না, কিন্তু কাশ্মীরের সৌন্দর্য বইয়ের অক্ষরে অক্ষরে যেন চুঁয়ে পড়ছিল!
জানি না কেন, আমি সুন্দর জায়গার ছবি দেখলে অনেক মুগ্ধ হই, কিন্তু সেভাবে যাওয়ার স্বপ্ন দেখি না। 🙁
ধন্যবাদ 😀
সুন্দর জায়গা দেখলেই আমার ইচ্ছে হয় একটু সেখানে বসে সেখানের সৌন্দর্যের অংশ হয়ে যেতে……
মালদ্বীপের একটা জায়গার ছবি দেখছিলাম, কাচের মত পানি, মনে হয় যে নৌকাগুলি বাতাসে ভাসতেছে। দেখে খুব যেতে ইচ্ছা করছিল। 🙂
চলে যেতে পারবেন এক সময়, আশা করি 🙂
সুন্দর পোস্ট দিয়েছ স্বপ্ন। তোমার অর্ধশত পূর্তির অভিনন্দন
ধন্যবাদ তানিম 🙂
আমারে লয়া যাইয়েন পিলিজ :callme:
গত কয়েকদিন ধরেই ব্যক্তিগত কিছু কারণে ভী-ষ-ণ মন খারাপ ছিল। কোন কাজেই কনসেন্ট্রেট করতে পারছি না 🙁 হতাশা আর অভিমানে মন ছেয়ে আছে।
আজ সকালটাও শুরু হয়েছিল একই অনুভূতি নিয়ে। কিন্তু সরবে ঢুকেই মনটা ভাল হয়ে গেল! এত্ত সুন্দর এত্ত সুন্দর!!!!
আল্লাহ যদি কোনদিন সামর্থ্য দেন, প্রথম ইচ্ছা হজ্ব করার। আরও সামর্থ্য হলে এই জায়গাগুলো একদিন ভ্রমণ করব ইনশাআল্লাহ!
অভিনন্দন স্বপ্ন বিলাস ভাই!!
খেয়ালি স্বপ্নগুলো বিলাসিতা মোটে নয়
বর্ণিল অজানায় ঘটে অভিমানের পরাজয়!!
মন ভালো করে দিতে পেরেছি জেনে ভীষণ ভালো লাগছে! মনে হচ্ছে আমার পোস্ট সার্থক :happy:
পড়তে চাইনা মানে!! অবশ্যই চাই। চোখ দুইটা স্বপ্নালু হয়ে গেছে এই পোস্ট পড়ে।
আরো চাই।
চোখ দুইটা স্বপ্নালু হয়ে গেছে এই পোস্ট পড়ে।
পুরোপুরি সহমত!!! 😀
যত তাড়াতাড়ি পারি, পরের পর্ব দিয়ে দিবো 😀
লেখার শেষে এই স্থানগুলো সম্পর্কে ফারদার পড়াশোনার জন্য কিছু লিঙ্কু দেয়া যেতে পারে! আমি নিজেই গুগল করে হালকা ঘাঁটাঘাঁটি করলাম, অনেকে হয়তো রেডিমেড লিঙ্কু পেলে আরও খানিকটা জানার আগ্রহ পাবেন 😀
শিরোনামে ছোট্ট একটা টেকনিক্যাল মিস্টেক আছে সম্ভবত, ‘সৌন্দর্যের’ এর আগে একটা স্পেস হবে!
“অপেক্ষা: সৌন্দর্যের”
শিরোনামের ভুলটা ঠিক করলাম। 🙂
প্রতিটা স্থানের নামের মধ্যে ক্লিক করলেই উইকিপিডিয়ার লিংকে যাওয়ার কথা 😀
তাইতো!!
হুদাই গুগলরে ডিস্টাব দিলাম 8)
😛
অসাধারণ…
(মাচু পিচু যামুউউউউউউউউউউউ)
ধন্যবাদ!
টাকা থাকলে দৌড় দেন 😀
মাচু পিচু যাবার ইচ্ছে আমার অনেক দিনের। 🙁
আমার যে কত্ত জায়গায় যাওয়ার ইচ্ছা…… 🙁
অসাধারণ, কেমন একটা দম বন্ধ করা অবস্থা হয়ে যায় এই অসাধারণ সৌন্দর্য দেখার পর!
কেন জানি এই লাইনটা খুব বেশি মনে পড়ছে, “সিংহল সমুদ্র থেকে নিশীথের অন্ধকারে মালয় সাগরে……”
যেতেই হবে, আগে বান্দরবন পুরোটা দাবড়িয়ে তারপর এইসব… 😀
বাংলাদেশ পুরোটা ঘুরেই তো তারপর! বাংলাদেশেরই তেমন কিছু দেখা হলো না 🙁
ভেনিস-টা দেখুন। আবাসিক এলাকা একদম লেকের সথে। তারপরেও পানি কতো পরিষ্কার! ইস্!
পরিকল্পনা ও তা বাস্তবায়ন করার মতো মানুষ থাকতে হয়। আমাদের দেশে এমন করার মতো লোক যে কবে হবে……
test comment
test reply 😛
অভিনন্দন! অভিনন্দন!!
অবশেষে কমেন্ট করতে পারছি!! ইয়েই…………
ঠিক আমার মনের মতো একটা পোস্ট, ভ্রমণ আমার অসম্ভব প্রিয় এবং এটা নিয়ে অজস্র স্বপ্ন ও পরিকল্পনা আছে………
আমি একবার স্বপ্ন দেখেছিলাম আমরা কোন একটা দ্বীপে বেড়াতে গিয়েছি…স্বচ্ছ নীল অতলান্ত জলধারা সেখানে…… এই স্বপ্নটা অবশ্য পুরণ করতে চাই…
ক্যারিবীয়ান দ্বীপে যেতে চাই………
এই জায়গা গুলো তে যেতে অবশ্যই চাই… তবে আমার তালিকার শুরুর দিকে আছে মিশর, পেট্রা তারপর গ্রেট ব্যারিয়ার রীফ……মাচুপিচু… আর ভেনিস……
আন্দিজ পর্বতমালাতেও যেতে চাই……
ইচ্ছে গুলো পুরণ হোক ……… আর পরের পর্ব অতি অবশ্যই চাই…………
বাই দ্য ওয়ে, হাফ সেঞ্চুরির খাওয়া-দাওয়া!!!
😀
আমারও ঘোরার খুব ইচ্ছা, কিন্তু, বিভন্ন কারণে হয়ে ওঠে না। তবু, স্বপ্ন দেখতে বাধা কোথায়?
খাওয়া-দাওয়া? 😛
test comment….