মেঘবালিকা- আমি তোমার জন্যে লিখি!

প্রবল বৃষ্টিতে ভিজে যাচ্ছিলাম।

আকাশ থেকে ভালবাসা নেমে এসে ধুয়ে দিয়ে যাচ্ছিল আমায়- সিক্ত করছিল- পবিত্র শীতলতায়।

আমার ললাট, দুচোখের পাতা, নাকের ডগা- দু হাতের অনাবৃত পিঠ ছুয়ে যাচ্ছিল সে- বুকের শাটে লেপ্টে ছিল শার্ট।

মেঘবালিকা তুমি কি করো?

খুব কি বৃষ্টি হয় সেখানে?

মেঘবালিকা বৃষ্টিতে তুমি ভিজো না?

 

মেঘবালিকা তখন জানালার ধারে। তার হৃদয়ের গান আজ বৃষ্টির সুরে বাজে- দু হাত বাড়িয়ে আটকাতে চায় সে গান- তার হাতের কোমল ত্বকে বৃষ্টির ফোটা পড়ে।

খুব এক পশলা বৃষ্টি হয়ে আজ ঝরে যাবো
তোমার কাচখোলা জানালার পাশে
ঝিরি বাতাসের সাথে মিতালি করে
জলকণা হয়ে আসবো তোমার কাছে

খুব তো বৃষ্টি দেখো জানালায় দাঁড়িয়ে
লক্ষী মেয়ে হয়ে- সারাটি দিন ধরে
দেখেছো কি  একটি বার আমায়
দুটি চোখ তুলে-কখনো অমন করে?

দেখি তো দুটি হাত বাড়িয়ে দাও-
অবাধ্য বৃষ্টি তাদের বারবার  ছুয়ে যায় ।
এত দিন প্রতীক্ষা করে আছি তবু
হাতদুটি কেন  ধরতে দাওনি আমায় ?

মানবোনা আর তাই আজ বৃষ্টি হবো
ঝড়ো বাতাসের সাথে শত শত জলকণায় ভাসি
ছুঁয়ে যাবো প্রিয়া লাল ঠোট আর উদ্ধত চিবুক
ভিজবে তোমার কোমল ত্বক-ঐ  উচ্ছল কেশ রাশি!

(আমি তাই আজ বৃষ্টি হবো)

আবেগী বালক ভালবাসা চায়- ভালবাসার খোজ রাখেনা।

মেঘবালিকা তখন কাদছিলো জানালার ধারে- আকাশের কান্নায় বারবার ধুয়ে যায় তার কান্নার জলের রেখা, বাতাসের গর্জনের চাপা পড়ে তার কান্নার শব্দ।

সে শুধু কাদে- একা ও নিঃশব্দে!

আজ দুপুরের ধুম বৃষ্টিতে-
বালিকা একা দাঁড়িয়ে ছিলো জানালার পাশে ঠায়।
আর তখন দমকা বাতাসে
শীতল জলের পরশে
বালিকার চোখ মুখ- সুউচ্চ গ্রীবা- কোমল ত্বক ভিজে যায়।।
বালিকা কাঁদে- নিঃশব্দে কাঁদে
সাথে তার কাঁদে দখিনের কালো মেঘ
দশদিক কাঁপানো উন্মত্ত প্রবল বজ্র-নিনাদে।

একাকী সংগোপনে- এই জানালার পাশে
এভাবে অনেক দিন কেঁদেছে বালিকা,
কান্নাটাই আছে তার- আর সব ক্ষয়ে গেছে- ঝরে গেছে
হাসিগুলো নেই আর- হয়েছে প্রহেলিকা।

বালিকার মনে ব্যথা- লুকানো গোপন ব্যথা,
বালিকা ভীষণ একা- সঙ্গীহীন বড় একা।
সবাই দেখে বালিকার রূপ- রূপবতী বালিকা,
বালিকার মন খানা- মানবীর শোকমালা- শুধুই হয় নি দেখা!

(বালিকা যখন কাদে)

 

মেঘবালিকা- আমি তোমার জন্যে লিখি, সবাই বোঝে- শুধু তুমি বুঝতে পারো না!

 

মিজানুর রহমান পলাশ
১১ ই মে, ২০১২
নজরুল ইসলাম হল

http://palash90.blogspot.com/

(ব্যবহৃত দুটি কবিতাই লেখকের নিজস্ব)

মিজানুর রহমান পলাশ সম্পর্কে

এখানে রাত্রি নামে, উড়ে যায় সাদা বক/ জোনাক পোকায় চড়ে স্বপ্ন আলো/ দেখেনা সে মালতী লতা, পলাশ ফুলের শোভা/ কিশোরীর কালো চোখ, আধার কালো !/
এই লেখাটি পোস্ট করা হয়েছে কবিতা, সাহিত্য-এ। স্থায়ী লিংক বুকমার্ক করুন।

8 Responses to মেঘবালিকা- আমি তোমার জন্যে লিখি!

  1. জনৈক বলেছেনঃ

    মেঘবালিকার জন্য লিখলে, তা কি আমাদের পড়া সাজে? :thinking:

  2. মিজানুর রহমান পলাশ বলেছেনঃ

    যেহেতু এটি একটি গদ্যাশ্রয়ী কবিতা পোষ্ট- তাই আলোচনা এবং সমালোচনা কবিতাকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠলে খুশি হবো।

    আর ভালো লাগুক মন্দ লাগুক- রেটিংটা ব্যবহার করুন, এতে লেখকের নিজেকে মুল্যায়নে সুবিধা হয়!

  3. সজীব বলেছেনঃ

    গলে পড়েছি প্রেমো মালা , মরন ভালা
    প্রানে আর সহে না দারুন জ্বালা ।
    লেখা পড়ে প্রেম জেগে উঠলো তো ভাইয়া :brokenheart: :thinking: :love:

  4. বোহেমিয়ান বলেছেনঃ

    রেটিং দিয়েছি।
    দারুণ!

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।