একবার একটি মেয়ের সাথে গল্প করছিলাম। এই মেয়েটির বর্ণনা নচিকেতা খুব শুদ্ধ করে বলেছিলো ‘যে মেয়েটি রোজ রাতে, বদলায় হাতে হাতে’।
যারা সাধু সুশীল তারা আর সামনে না পড়লেও চলবে। কারণ, এই সমাজে রাত্রির প্রদীপ এর মত ঐ মেয়ে গুলোকে বাঁচিয়ে রেখে গনতন্ত্রের কথা আমি বলতে চাই না। সেই মেয়েটির শেষ কথা গুলো ছিল ‘ জানেন বেঁচে থাকার জন্য কষ্ট হয়, নিজের জন্য মায়া হয়’।
ক’দিন আগে ইন্ডিপেন্ডেন্ট টেলিভিশনে ‘ তালাশ’ নামে একটি অপরাধ ভিত্তিক অনুষ্ঠানে দেখছিলাম। একজন পেশাদার খুনির কথা। সে তার ‘অপারেশন’ ( খুন) করে এসে ভাত খেতে বসেছে। হাতে রক্ত। তাই দেখে জুনিয়র খুনি বলছে “ বস! হাত মুখ ধুয়ে নেবেন না”।
বসের উত্তর “ লাগবে না”. এটা কি খুব ভয়ংকর! হাত পা শীতল হয়ে গিয়েছিল তার উত্তর শুনে। ক’দিন আগে রাতে বাসার কাছে ছিনতাইকারীর মুখোমুখি হতে হয়েছিল। কপালে এবং মাথার পিছনের দিকে দুটি বস্তর ছোঁয়া পেয়েছিলাম। সেই অস্ত্র তাক করা এবং সবকিছু ( মোটরবাইক সহ) তাদেরকে দিয়ে দেবার আদেশ আওয়াজের কথা মনে পড়ে যাওয়ায় বুঝতে পেরেছিলাম এরা কতটা ভয়ংকর হতে পারে।
ভাবছেন এসব কাহিনীর মানে কি! মানে কিছু না। অনিশ্চিত ভবিষ্যতের দিকে তাকালে আমার এসব ঘটনার কোন মানে প্রয়োজন হয় না। কারন আমি এই ভবিষ্যতের শুধুই দর্শক। দেশ আর ভাগ্য নিয়ে খেলে অন্যরা। আমরা হই ‘বল’। শুধুই লাথি খাওয়া ছাড়া আর কিছুই করার থাকে না।
বুধবার বিএনপি জোটের শীর্ষ ৩৩ নেতা ( জামাত বাদে) গ্রেপ্তার হয়েছেন। ফলাফল –বৃহস্পতিবার বার সারাদেশে হরতাল। আবার গাড়ি পোড়ানো, মানুষ খুন, ব্যবসা পাতি বন্ধ। বাজারে বাড়তি দাম। দুই জোটকে সুশীলদের গালিবাজি, জ্ঞানবাজি। আমরা বেকুব হা করে গনতন্ত্রের ভবিষ্যৎ অন্ধকার দেখি।
এই গনতন্ত্রের জন্য আমার মায়া হয় না। আমি বোধহয় নিজেকে একটি স্বাধীন রাষ্ট্রের নাগরিক মনে করি না। এসব কথা বললে কারো আঁতে ঘা লাগতে পারে। এমন দেশদ্রোহী কথা! রাগ না করে একবার নিজের পকেটের দিকে তাকান। ক’ টাকা আছে? এবার ক্ষমতাবানদের পকেটের দিকটা দেখে আসুন। আসল মানে বুঝে যাবেন।
২০০৭ সাল। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আই বি এ অডিটোরিয়াম। ইইউ এর তৎকালীন বাংলাদেশ প্রধান শিক্ষার্থীদের জন্য বক্তব্য দিতে এসেছেন। রাজনৈতিক প্রসঙ্গ টেনে এক পর্যায়ে বললেন “ বাংলাদেশ হচ্ছে একটি ল্যাবরেটরির মত, এখানে অনেক গবেষণা করা যায়”।
প্রশ্নোত্তর পর্বে বললেন “ ইইউ এক সময় চীন থেকে সবচে বেশি তৈরি পোশাক আমদানি করতো। এখন আর করে না। এখন বাংলাদেশ থেকে করে” . আমার প্রশ্ন ছিল “ যেভাবে একদিন আপনারা চীন থেকে আমদানি বন্ধ করেছেন সে ভাবেই বাংলাদেশ থেকে তো যেকোনো সময় আমদানি বন্ধ করতে পারেন। আমাদের শিল্প কি তখন হুমকির মুখে পড়বে না?” তার উত্তর ছিল ‘ বাংলাদেশ কে প্রতিযোগিতা করে টিকে থাকতে হবে”. উত্তর টা আমার কাছে কোন দিন সোজা মনে হয়নি। আসল ঘটনা হল পশ্চিমা বিশ্ব চীনকে অর্থনৈতিক সঙ্গী করেছিলো সে সময় সোভিয়েত পরাশক্তির বিকল্প সমাজতান্ত্রিক শক্তি দেখবার জন্য। কারণ মস্কো আর পিকিং নীতিমালা প্রনয়নে দু ধারার ছিল। আর মস্কো ছিল পশ্চিমা পুঁজিতন্ত্রের মুল প্রতিদ্বন্দ্বী। তবে পশ্চিমারা যখন চীন থেকে মুখ ফেরাতে চাইল ততদিনে চীন বহুদুর পাড়ি দিয়ে পুজিতান্ত্রিক সমাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করে ফেলেছে।
মুলত পরাশক্তিগুলোকে নিয়ন্ত্রণ করে কিছু কর্পোরেট জায়ান্ট। এই জায়ান্টদের হাতেই থাকে সব কিছুর মুল চাবি। এক একটি দেশের সম্পদ নিয়ে ব্যবসা করেই তারা মুনাফা বাড়াতে থাকে। আর এদের লোভের সব দায়ভার বহন করে পরাশক্তি রাষ্ট্র। জনতার রায় সেখানে মূল্যহীন। শুধু হাইতির কথাই ধরুন। এই দেশটির নাম শুনলে আপনার সামনে ভুমিকম্প পীড়িত কিছু কালো কালো মানুষের চেহারা ভেসে উঠবে। প্রাকৃতিক সম্পদে সচ্ছল শান্তিপ্রিয় এই দেশটিতে প্রথম কলোনি স্থাপন করে অভিজাত ফ্রেঞ্চ। এই দখল এর বিরুদ্ধে এক সময় দেশটির মানুষ রুখে দাঁড়ায়। যদিও ততদিনে অনেক দেরি হয়ে গেছে। ফ্রেঞ্চ কবল থেকে মুক্ত হয়ে দেশটি যখন ভবিষ্যৎ নির্মাণের চেষ্টায় তখন বাধ সাধে আমেরিকার কর্পোরেট। কারণ এই রাষ্ট্রের নীতিগুলো কর্পোরেট সমর্থক ছিল না। ব্যস! নির্বাচিত শাসক উৎখাত হল। সহযোগিতা করলো যুক্তরাষ্ট্র, সমর্থন করল ফ্রান্স।
গত একশ বছরে পৃথিবীর সর্বত্রই বড় বড় শক্তি গুলো ছোট রাষ্ট্র গুলোকে নিয়ন্ত্রণ করেছে গনতন্ত্রের নামে। এই গনতন্ত্র যখন কর্পোরেট স্বার্থ উপযোগী নীতিমালা করেছে তখন তারা ঐ সরকার কে সমর্থন করেছে। এমনকি যখন সামরিক সরকার দরকার তখন সামরিক সরকারকেও তারা সমর্থন করে এসেছে। যখন যাকে বন্ধু বানাবার দরকার তখন তাকে বন্ধু বানিয়েছে, শত্রু বানাবার দরকার হলে তাই। তালেবানদের স্রষ্টাও তারা আবার আজরাইল ও তারা।
১৯৮৫ সালে তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট অভিনেতা রোনাল্ড রিগান শীর্ষ তালেবান নেতাদের হোয়াইট হাউজে আমন্ত্রন জানিয়ে তাদের কে তুলনা করেছিলেন ‘ আমেরিকার প্রতিষ্ঠাতাদের’ সাথে। এক বছরে তালেবানদের জন্য ৬৭৩ মিলিয়ন ডলার সাহায্য দেয়া হয়। এর একটাই কারণ ছিল সোভিয়েত কে শায়েস্তা করা। ১৯৭৮ সালে আমেরিকান প্রেসিডেন্ট জিমি কার্টারকে সি আই এ প্রস্তাব দিয়েছিল সোভিয়েত এর জন্য কোন একটি ভিয়েতনাম বানানো। কারণ ভিয়েতনামে পরাজয় আমেরিকানদের ভুতের মত তাড়া করে বেড়ায়। এই প্রকল্প হিসেবে ভু- কৌশলগত কারণে আফগানিস্তান কে বেছে নেয়।
কেজিবির ( রাশিয়ান গোয়েন্দা সংস্থা) মাধ্যমে খবর পায় সোভিয়েত । তবে তৎকালীন সোভিয়েত সেনা প্রধান পলিতবুরো ( নীতি নির্ধারণ কারী সবচে বড় ফোরাম ) কে বলেছিলেন আফগান আক্রমণ না করার জন্য। তার কথা শোনা হয় নি। আর শেষ পরিনতি সবার জানা। তালেবানদের হাতে চরম মার খেয়ে ছাড়তে হয় মরু আর পাহাড়ের আফগান। এই তালেবানদের পক্ষে সাফাই গাওয়ার জন্য আমেরিকা জনসংযোগ কোম্পানি গুলোর পেছনে লাখ লাখ ডলার খরচ করেছিলো। মুসলমানরা গুজবে বিশ্বাস করায় এই কাজ আরো সহজ হয়ে গিয়েছিল।
বাংলাদেশেও সেই সময়কার একটি অনুবাদ বের হয় ‘আফগানিস্তানে আমি আল্লাহকে দেখেছি’. এক মার্কিন সাংবাদিকের চোখে দেখানো হয় যে তিনি দেখেছেন “আফগানিস্তানে মুজাহিদদের উপর সোভিয়েত বিমান বোমা বর্ষণ করছে, আর অতিকায় পাখি ডানা মেলে সে বোমা থেকে মুজাহিদদের কে হেফাজত করছে। এ যেন কোরআনের সেই কথার প্রতিফলন যে আল্লাহ্ তার জন্য লড়াইয়ে তোমাদের কে এমন ভাবে সাহায্য করবেন যে তোমরা কখনও কল্পনা করো নি”. ব্যস! পুরো মুসলিম বিশ্ব তালেবানদের পক্ষে চলে যায়।
এখন তো আফগান যুদ্ধ শেষ। লাভ হয়েছে পশ্চিমাদের জ্বালানী কোম্পানি গুলোর। তুরস্ক হয়ে চীন পর্যন্ত যে বিশাল গ্যাস পাইপ লাইনের কাজ চলছে এখান তাতে এখন আফগানিস্তান সবচে গুরুত্বপূর্ণ কানেক্টর। এর সাথে ভারত এবং ইরানের জ্বালানী ব্যবসাও জড়িত। কাজেই মুল ব্যবসা চাবি চলে গেল সেই লোভী কর্পোরেট জায়ান্টদের হাতে। মাঝখানে কত যুদ্ধ হল, কত প্রাণ গেল, কত রক্ত ঝরল – তাদের কি হল? অন্তত আমি যে ‘আফগান দুহিতা’র প্রেমে পড়তে চেয়েছিলাম তার সাথে দেখা হবার দিনক্ষণ পেছালো!
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের মুলে কিন্তু ছয় দফা ছিল, আর ছয় দফার মুল মন্ত্র ছিল অর্থনৈতিক স্বাধিকার। পাকিস্তানিদের লোভ ও এখানে ছিল – ‘পূর্ব পাকিস্তানের মানুষ চাই না, মাটি চাই’. এখনকার লোভীরা মাটি ও মানুষ দুই- ই চায়। কারণ কি? কারণ প্রাকৃতিক সম্পদ আর ১৬ কোটি মানুষের একটা বাজার যেখানে অনায়াসে ব্যবসা করা যাবে। এই ব্যবসা করবে করপরেট দানবরা।
ক’দিন আগে বাংলাদেশে প্রায় আয়তনসম সমুদ্র সীমা অধিকার করেছে। এই সমুদ্র অঞ্চল প্রাকৃতিক সম্পদে ভরপুর। ইতোমধ্যে এখানে গ্যাস ব্লকের ইজারা পেয়ে গেছে মার্কিন জ্বালানী কোম্পানিগুলো। বলা হয় বাংলাদেশের সক্ষমতা নাই তাই এখানে ঐ সব জ্বালানী অভিজ্ঞদের আনতে হবে! কাজেই বাংলাদেশ কে নিয়ন্ত্রণ করতে পারলে পুরো অর্থনৈতিক অঞ্চলের উপর আধিপত্য বজায় থাকবে। আর মজার ব্যপার হল এরা গ্যাস উত্তলন করে বিক্রি করবে ৮০% গ্যাস বাইরে বেচতে পারবে। বাংলাদেশে বেচার জন্য দামও নির্ধারণ করবে তারা। এখন সমুদ্র জয় করে সংবর্ধনা আর ধন্যবাদ পেতে পারেন । কিন্তু সময় আসছে যখন চুলো জালাবার জন্য ঐ জায়ান্টদের পায়ে ধরতে হবে।
খেয়াল করেছেন সমুদ্র বিজয়ের মাত্র ক’দিনের মাথায় হিলারি আপা আসলেন আর জ্ঞান দিয়ে গেলেন! কেন ইউনুস নিয়ে তো অনেক গোস্বা করে তিনি সে সময় বাংলাদেশ সফর বাতিল করেছিলেন। এখন উইড়া আইলেন ক্যান দিদি? বাংলাদেশের গনতন্ত্রের দিকে তাকিয়ে দেখুন- মানুষের মতামত কি নেয়া হয়েছে কি গ্যাস ব্লক ইজারা দেয়া নিয়ে! উল্টো যারা রাজপথে নেমেছিল তাদেরকে জনগনের টাকায় চালানো পুলিশ দিয়ে পিটুনি দিয়ে শিখিয়ে দিয়েছেন ক্ষমতার জোর কত!
এই কর্পোরেটদের ক্ষমতা আর লোভের সব দেনা শোধ করতে হয় সাধারণ মানুষকে। যুক্তরাষ্ট্রে অর্থনৈতিক পতনের পর বেইল আউট ব্যবস্থা নেয়া হল ট্রিলিয়ন ডলার খরচ করে। এই টাকা রাষ্ট্র দেবে। রাষ্ট্রকে ট্যাক্স দেয় জনগন। অর্থনৈতিক ঐ দুরাবস্থার জন্য কর্পোরেটরাই দায়ী ছিল। এখন জনগনের টাকায় তাদেরকেই বাঁচানো হল। ওদের কোন ক্ষতি হল না। হোয়াইট হাউজের ব্ল্যাক প্রেসিডেন্ট তাদের জানিয়ে দিলেন যত লোভ করুন না কেন আর যত অন্যায় করুন না কেন জনগনের শুকনো পকেট আছে ক্ষতি পোষাবার জন্য।
বাংলাদেশের শেয়ার বাজার দেখুন। যখন ধুমছে লাভ হচ্ছিল তখন লাভবান হয়েছে বড় কয়েকটা কোম্পানি। আবার যখন শেয়ার বাজার বাঁশ খেল, যার জন্য ঐ বড় কোম্পানি গুলোই দায়ী, তাদের কিন্তু লস হল না। ওরা কিন্তু ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের টাকা নিয়ে ভেগে গেল। এখন সরকার শেয়ার বাজারের জন্য হাজার কোটি টাকার প্রণোদনা প্যাকেজ দিয়েছে। কিভাবে? ঐ যে আপনি আর আমি দিন এনে দিন খেয়ে যে ট্যাক্স দেই, সে টাকায়! শেয়ার বাজারের লাভ কি আমারে কেউ দিছিল? কিন্তু ঐ দরবেশ, শুঁটকির হাতে পাহারাদার ‘বিড়াল’ তাদের কি হল? সরকার তদন্ত রিপোর্ট –ই প্রকাশ করতে দিল না। কোন ক্ষমতাবান কর্পোরেট এর কখনই কিছু হয় না।
অনেক কথা হল! দু’দিন আগে পত্রিকায় খবর দেখলাম সরকার কর্পোরেট ট্যাক্স কমানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আতঙ্কিত হই নি। সেদিন আবার অর্থমন্ত্রী বললেন ‘ সময় হলেই সভারিনিটি বন্ড ছাড়া হবে”. এই বন্ড ছেড়ে সরকার ঋণ নেবে। এই বন্ড সম্পর্কে যে যাই বলুক এটা আসলে কোন কর্পোরেট বা রাষ্ট্র থেকে নেয়া হয়। আর ঋণ গ্রহণকারী রাষ্ট্র বাধ্য থাকে ঐ ঋণ শোধ করার জন্য। এর জন্য বন্ধক দিতে হয় রাষ্ট্রের সার্বভৌমত্ব। না শোধ করতে পারলে পরিনত হতে হবে দাসে। আফ্রিকার ক্রীতদাস গুলোর কথা একবার চোখের সামনে আনুন। দাস প্রথা কি একটু সামান্য চোখ বুলিয়ে নিন। যে দেশ সিদ্ধান্ত নেয় তার মানুষ ও রাষ্ট্রের সার্বভৌমত্ব বন্ধক দেবার, তার কাছে ৩০ লাখ শহীদের রক্তের দাম আর দুই লাখ মা বোনের ইজ্জতের দাম কত যা দিয়ে তারা পাক হানাদারদের কাছ থেকে সার্বভৌমত্ব এনেছিল! বাংলাদেশের মানুষ কি সার্বভৌমত্ব বেচার জন্য কাউকে ভোট দিয়েছিল?
তাই গণতন্ত্রে কিছু আসে যায় না। শুধুর রাস্তার মধ্যে মানুষ মারামারি করবে। খুন করবে, রক্ত মাখা হাতে ভাত খাবে। এখানে যত দ্বন্দ্ব ততই যারা এই দ্বন্দ্ব থেকে দাদাগিরি ফলাতে পারবে আর লাভবান হবে ততই তারা এই রাস্তার সংঘর্ষ বজায় রাখবে। প্রয়োজনে ভাড়াটে খুনি দিয়ে খুন গুম সব করাবে। আর কর্পোরেট জায়ান্টদের পছন্দ ক্যান্ডিডেট গদি পাবে। কেউ বাংলাদেশ কে ল্যাবরেটরি বানাবে। আপনি এদের বিরুদ্ধে বলবেন! গনমাধ্যমের স্বাধীনতার ইতিহাসের ছাত্ররা জানেন – কারো মতামত দমিয়ে রাখার সবচে সহজ উপায় তাকে দেশদ্রোহী বলা। তাকে দেশদ্রোহী বানাবার জন্য সংবিধানে আছে ‘ জনজীবনে অশান্তি সৃষ্টি হতে পারে এমন মতামত প্রকাশ করা যাবে না’। আপনার মতামত যেহেতু জনজীবনে সম্ভাব্য অশান্তি সৃষ্টি করিলেও করিতে পারে তাই আপনি সংবিধান লঙ্ঘনের দায়ে অভিযুক্ত হবেন। অর্থাৎ দেশদ্রোহী! এর কঠোরতম শাস্তি মৃত্যুদণ্ড
এখন ঐ মেয়েটির মত বলতে ইচ্ছে করে ‘জানেন -বাঁচতে কষ্ট হয়’।
চমৎকার একটা প্রতিবাদী লেখা। নিও-কলোনিয়ালিজমের বিপক্ষে এ ধরনের লেখা আরো আসা উচিৎ।
সময় পেলে আলোচনা করবো। 🙂
আমার ও লেখার ইচ্ছে আছে।
দেখা যাক কত দুর লিখে যেতে পারি।
আশা করি তখন আলোচনায় আসবেন।
দারুণ লেখা। কিন্তু সমস্যা হইল যাদের আগে থেকে আইডিয়া আছে তাঁরাই কেবল বুঝবে! আরও একটু সহজবোধ্য করা যাইত মনে হয়।
সাথে জরুরি লিঙ্ক। যেন আরও পড়তে পারে।
উপভোগ্য করার জন্য ছবি/কার্টুন!
তবে হ্যাঁ। ফিল করতে পারি কী কষ্টটা নিয়ে লিখেছেন। আমাদের বিজ্ঞান/ সংস্কৃতি/ধর্ম সব কিছুই ব্যবসায়ীদের হাতে!
বন্ড বিষয়ে কোন লিঙ্ক? এটা আমি শুনি নি।
বিজ্ঞান, ধর্ম, সাহিত্য এবং সংস্কৃতি দখলের গল্পগুলো লিখব।
মনে হয় লিখতে হবে। আর উপভোগ্য করার জন্য রেফারেন্স, ছবি, কার্টুন আর গ্রাফিক্স দিব।
এ প্রজন্ম চারপাশ টা জানলে বেঁচে থাকবার আনন্দই অন্য রকম হবে।
কিন্তু- ঐ ক্ষমতাবানদের প্রোপাগান্ডার ঢেউ এ তলিয়ে যাবো না তো? যা হোক একটু নড়াচড়া করতে তো আর দোষ নেই।
লেখাটা ভাল হয়েছে
আপনার লেখাগুলির শুরু আর শেষ ভাল লাগে আমার। এই লেখাতেও তাই।
খুব ভাল লেখা, সেটা বুঝতে পারলাম। কিন্তু জ্ঞানের অভাবে পুরোটা উপভোগ্য হল না।
অনেক মন খারাপ হলো পড়ে………
এই কর্পোরেটদের ক্ষমতা আর লোভের সব দেনা শোধ করতে হয় সাধারণ মানুষকে। কী নিষ্ঠুর সত্য একটা কথা…………
আচ্ছা, এই চক্র থেকে বের হবার কোন উপায় বা নির্দেশনা বলবেন কি? কোন আইডিয়া??
আর, বিজ্ঞান, ধর্ম, সাহিত্য এবং সংস্কৃতি দখলের গল্পগুলো পড়ার অপেক্ষায় আছি……
আগুনে প্রতিবাদ জমে না- বরফের মত শীতল হয়ে যায়। বড্ড শক্ত বড্ড কঠিন।
সেদিন আবার অর্থমন্ত্রী বললেন ‘ সময় হলেই সভারিনিটি বন্ড ছাড়া হবে”.
এটা কি সত্যি? ! এই লোকের কি মাথা ঠিক আছে?
ভুল সবই ভুল, কেউ অন্যের কথা, দেশের কথা বা মানুষের কথা ভাবে না। সবাই নিজের কথাই ভাবে। যতদিন বেঁচে আছে নিজের টাকা আরাম আর পাওয়ার নিয়েই ব্যস্ত থাকে। এক সময় সেটা বদ্ধ পাগল নয়ত মানসিক রোগের পর্যায় চলে যায়। আসলেই এই ছোট্ট জীবনের কোনই অর্থ নেই। শুধুই একটা পরীক্ষা।
আসলেই কি জীবনটার কোন মানে নেই? শুধুই কি পরীক্ষা?
তবে মুহিত সাহেব কেন এমন করছেন বুঝিনা। আমি সেদিন থেকেই ওনার ভক্ত যেদিন উনি ওনার প্রেমের গল্পটা বলেছিলেন। যখন যৌবনের উত্তাল দিনে তার স্থায়ীভাবে যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসের সুযোগ এসেছিল তখন একজন নারীর জন্য তিনি এদেশ ছেড়ে যান নি। সেই মহীয়সী এখনও ওনার বেটার হাফ। ভীষণ ভালো লেগেছিল ওনার কাছ থেকে এই কথাটা শুনে!
অসাধারণ একটা লেখা! বাংলাদেশের এমন একটা অবস্থা হচ্ছে, দেখে বুকের ভেতরটায় খুব কষ্ট হয়। মনে হয়, চোখের সামনে দেশটাকে বিক্রি করে দিচ্ছে। কিছু প্রতিবাদও করা যায় না। কিছু বললেই বলবে ‘দেশদ্রোহী’!
আশা করতেও ভয় হয় এখন……
বিশ্বাস রাখুন
সত্যি একদিন – ‘শোধ নেব সব ঋণ
আমার বোনের শাড়ি হারাবার
আমার পিতার সন্তান হারাবার
আর আমার মায়ের চোখের জল হারাবার
সব ঋণ নেব শোধ-
শোধ নেব ক্রোধের বদলে ভালবাসা মেখে
বুলেটের বদলে হাসি মেখে
দানবের বিপ্রতীপ মানব হয়ে
আকাশের মত উদার পিতার জায়নামাজ হয়ে
একদিন ঠিক ঠিক
সব ঋণ নেব শোধ
এই কবিতাটা কি আপনার লেখা?
কোশেশ রে ভাই!
চমৎকার 🙂
আমাদের সময়টা এমন অদ্ভুত কেন? আমরা কিছু বলতে গেলেই একজন একজন করে হারিয়ে যাচ্ছে, কেন জানি অনেক কিছু নিয়ে এখন স্বপ্ন দেখতে ভয় হয়…
কারণ তাদের লোভের শিকল সবাইকে হতাশ করতে চায়
আর আমরা যখন হতাশ হব তখন তো ওদেরই জয়
তাই আগুন জ্বেলে হতাশা নিয়ে তামাশা করবার সময় এসেছে
শৈশব থেকে নিস্তব্ধ হবার জন্য নয়