ইদানীং ফেসবুকে মানুষের খুব প্রিয় কাজ ইসলাম সম্পর্কে বিভিন্ন গ্রুপের বিভিন্ন মিরাকলের ছবি শেয়ার দেয়া। এইসব ছবির কল্যানে এখন পর্যন্ত আমরা নিল আর্মস্ট্রং এর চাঁদে আযান থেকে শুরু করে শুন্যে ভাসমান পাথর সবই দেখে ফেলেছি এবং শেয়ার দিয়ে অনেক সওয়াব লাভ করেছি।
আসুন দেখি, সেই সব কতটা সত্যি।
চাঁদে আযান:
কথিত ঘটনা:
নিল আর্মস্ট্রং যখন চাঁদে যান, তখন সে ও তার সঙ্গীরা এক বিস্ময়কর শব্দ শুনতে পান, যা তারা চিনতে পারেন নি। পরবর্তীতে অনেক পরে তিনি যখন মিশরে ঘরতে যান তখন সেই শব্দ শুনতে পেয়ে বিস্মিত হন। তার এক বন্ধু তাকে বলে, এটা আযানের শব্দ। এই কথা শুনে নিল আর্মস্ট্রং মুসলমান হয়ে যান।
খুঁত:
চাঁদে কোন বাতাস নেই, তাই শব্দ শোনার উপায় নেই।
তাহলে কী?:
নিল আর্মস্ট্রং এর পক্ষ থেকে এ বিষয়ে এক চিঠিতে ১৯৮৩ সালে বলা হয়, এই ঘটনা সম্পূর্ণ মিথ্যা।
এমনকি স্টেট ডিপার্টমেন্ট থেকে এই ঘটনার বিরোধীতা করা হয়।
ফুসফুসে কালেমা:
কথিত ঘটনা:
মানুষের ফুসফুসের গঠনা নাকি কালেমার মতন!
আসুন, ছবি দেখি।
খুঁত:
জীববিজ্ঞান পড়েছেন, এমন সবাই জানেন মানুষের ফুসফুসের গঠন এমন বিচ্ছিন্ন অংশের মত নয়।
তাহলে কী?:
মানুষের ফুসফুসের সত্যিকারের ছবি।
দেখেই বুঝতে পারছেন, বানানো ছবিটার সাথে সত্যকারের ফুসফুসের ছবির মিল কল্পনাতেই সম্ভব।
ক্যাকটাসে আলাহু:
কথিত ঘটনা:
ক্যাকটাসের ডালপালায় আল্লাহর নাম দেখা গিয়েছে!
খুঁত:
কখনো দেখেছেন, গাছের একটা ডাল যেই কাণ্ড থেকে গজিয়েছে সেখানেই আবার যেয়ে মিশেছে? শেষ প্রান্তের ‘হা’ এর দিকে লক্ষ্য করুন তাহলে।
ডানপাশের দু’টা ডাল যেমন সমান্তরাল, এমন কখনো কোন গাছে দেখেছেন?
তাহলে কী:
প্রচার লাভের জন্য কেউ ডালটা ভেঙে জোড়া দিয়ে এই ছবি বানিয়েছে।
দ্যা ১০ মিটার মানব:
কথিত ঘটনা:
সৌদি আরব এ প্রত্নতাত্ত্বিক গবেষণায় এক দশ মিটার লম্বা মানুষের হাড়গোড় পাওয়া গিয়েছে।
খুঁত:
আসুন, আসল ছবিটা দেখি।
মাথাটা কোথায়?
তাহলে কী?
নিউ ইয়র্কে ২০০০ সালে এক প্রত্নতাত্ত্বিক গবেষণায় এই কংকাল পাওয়া যায়। এটি একটি ম্যামথের ছবি। ম্যামথ একটি বিলপ্ত প্রাণী যারা সাড়ে তিন মিলিয়ন বছর থেকে ১০০০০ বছর আগে পর্যন্ত ছিল।
এটি মোটেই কোন মানুষের কংকাল নয়।
ভাসমান পাথর:
কথিত ঘটনা:
জেরুজালেম এ একটা ভাসমান পাথর আছে, যেটা বছরে কিছু কিছু সময় শুন্যে ভেসে থাকে!
খুঁত:
একটা পাথর শুন্যে ভাসে আর তা দেখার জন্য আশেপাশে কোন মানুষ নেই! পেছনে বাড়িঘর, গাড়ি দেখা যায়, তবুও এই পাথর দেখার আগ্রহ কারো নেই!
তাহলে কী?:
পাথরের আসল ছবি দেখি।
এখন কি বুঝতে পারছেন, ফটোশপ দিয়ে পাথরের নিচের অংশটা নাই করে এটাকে ভাসমান বানিয়ে দিয়েছে?
শেষ কথা:
এমন হাজারো পোস্টের স্রোতে ফেসবুকের পাতা ভেসে যায় প্রতিদিন। যা-ই শেয়ার দিন না কেন, আগে যাচাই করে নিন। ধর্ম বিশ্বাস থাকা ভালো, কিন্তু, প্রতিদিন ‘মিরাকল’ দেখে ধর্মে বিশ্বাস করা হয় না, জাদুতে বিশ্বাস করা হয়।
কখনো এরকম কিছু শেয়ার করিনাই। করবোও না। 🙂
🙂
দুনিয়া ভন্ডামিতে ভরা। :love:
আরেকটাও আছে সুনিতা উইলিয়ামস ও মুসলমান। ডাহা মিথ্যা। প্রচার করতে চাইলে ইউসুফ ইসলামের কথা বললেই তো হয়।
বেশী জনপ্রিয়গুলোর কথাই লিখলাম…
এই সব মিরাকল দেখে কেউ নতুন করে বিশ্বাসী হয় বলেত আমার মনে হয়না , একজনও হয় বলে মনে হয়না।
মানুষ এত টাইম পাই কই ?? 😡
টাইম আর কোথায় পাবে, জীবন থেকেই নষ্ট করে……
পোস্টের নামটা ঠিক হলো বলে মনে হচ্ছে না। ইসলামীকরণ অনেক কিছুই বুঝায়! জামাতি হিজবুতি সেকুলারি আরও অনেক প্রকারের। তোরটার মানে সারকাজম হলেও অন্যভাবে দেয়া উচিৎ ছিলো। নামটা দেখে আগ্রহ জাগে বলেও তো মনে হয় না।
তবে তোর মতো সহজ করে আর কেউ এভাবে লিখতে পারত বলে মনে হয় না।
আর যে সাইটটার লিঙ্ক দিয়েছিস সেটাও একটা কঠিন ভুল হয়েছে। আমার মনে হয় রেফারেন্স দেবার সময় রেফারেন্স এর গ্রহণযোগ্যতার দিকটাও দেখা উচিৎ। যেই রেফারেন্স দিয়েছিস সেটাতে দেয়া আছে কারা কারা ইসলাম ছেড়েছে সেটা!
এইটা আসলে একটা ইসলাম বিরোধী সাইট। (ইসলাম বিরোধী হলে আমার সমস্যা নাই। )
আর্মস্ট্রং এর ঘটনা অন্য গ্রহণযোগ্য সাইট থেকে দিলে ভালো হত। (যেহেতু টার্গেট অডিয়েন্স মুসলিম)
আর লিঙ্ক যেভাবে দেয়া হয়েছে এতে গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন থেকে যায়। স্ট্যাণ্ডার্ড সিস্টেমে দিলে নিচে একসাথে সব লিঙ্ক দেখা যায়। ফলে লিঙ্কগুলো কোন সাইট সেটাও চোখে পড়ে। (উইকি ইসলাম এর ব্যাপারও চোখে পড়ত অনেকের )
এখন কিন্তু সেটা ক্লিক করে দেখতে হচ্ছে।
সমালোচনার জন্য ধন্যবাদ।
১. আমি নামকরণে সবসময় কাঁচা। ভালো নাম দিতে পারি না।
২. এক জায়গা থেকে দেখছিলাম তা নয়, তবে লিংকগুলো সবই মোটামুটি ওখানে পাওয়ায় দিয়েছি। ভবিষ্যৎ-এ আরো খেয়াল রাখবো বিষয়টা নিয়ে।
৩. লিংক দেয়ার সিস্টেমটা আমি এখনও বুঝি না……
প্রথম আলোতেও খবরটা এসেছে ((https://www.facebook.com/?ref=logo))
এই রকম। শুধু লেখার পর একটা স্পেস দিয়ে ডাবল ব্র্যাকেট।
আচ্ছা!
লেখা ভাল লেগেছে। আরো কিছু ইনফরমেশন পেয়েছিলাম ফেবু-র একটা নোটে। কী যে অবস্থা! 🙁
“রেফারেন্স দেবার সময় রেফারেন্স এর গ্রহণযোগ্যতার দিকটাও দেখা উচিৎ” – সহমত। ঐ সাইটটায় আধ থেকে এক ঘণ্টা চোখ বুলালে আপনি নিজে থেকেই লিঙ্কগুলো রিমুভ করে দেবেন!
ধন্যবাদ।
লিংকগুলো পরিবর্তন করার চেষ্টা করবো………
মানুষের কান্ডকারখানা দেখে মনে হয় না তারা দেখতে পায়… :@
🙁
ভাসমান পাথর:
কথিত ঘটনা:
জেরুজালেম এ একটা ভাসমান পাথর আছে, যেটা বছরে কিছু কিছু সময় শুন্যে ভেসে থাকে!
খুঁত:
একটা পাথর শুন্যে ভাসে আর তা দেখার জন্য আশেপাশে কোন মানুষ নেই! পেছনে বাড়িঘর, গাড়ি দেখা যায়, তবুও এই পাথর দেখার আগ্রহ কারো নেই!
তাহলে কী?:
পাথরের আসল ছবি দেখি।
(লিংক)
এখন কি বুঝতে পারছেন, ফটোশপ দিয়ে পাথরের নিচের অংশটা নাই করে এটাকে ভাসমান বানিয়ে দিয়েছে?
———————————————–
আপার দেয়া লিঙ্ক এ গিয়ে দেখলাম এটা সৌদি আরবে। কিন্ত এখানে জেরুজালেম। why