লাস্ট ম্যান স্ট্যান্ডিং- পর্ব ১: ওয়ার্ম আপ

আমার দেড় বছরের বেশী সময়ের সুপারভাইসর প্রফেসর রবার্ট। বাপের বয়সী এই লোকটাকে দেখলেই ভীষণ রকম শ্রদ্ধা হয়। পাওয়ার ট্যাকের র্যাোঙ্কিং এ সন্দেহাতীতভাবে পুরা ওয়ার্ল্ডেরই সেরা মাথাগুলার একটা। এই সিক্সটি টাচিং এজেও ভীষণ রকম ফিট। লম্বা ডিসটেন্সে সাইক্লিং করেন রেগুলার। ভীষণ অবাক আমায় দেখে..
-তুমি বাস কার্ড ইউস করো কেনো, ইয়াং ম্যান?? সাইকেল চালাবা! ফিজিক্যাল এক্টিভিটি না থাকলে মাথা খুলবে কেমনে?….বলেই শুরু করে দিলেন সকার-স্কি-সাইক্লিং এর লম্বা গল্প।

আমি কনভেনশনাল বাঙ্গালী ছাত্র। বরাবরের মতো হাঁ-হুঁ, জ্বী-জ্বী করে ঝিমাচ্ছিলাম আর পার করে দিচ্ছিলাম। এই এক টপিক শুনে নড়েচড়ে বসলাম। স্পোর্টস?
আরে! রাখো তোমার স্কী-সকার। সবসময় তুমি বলো আমি শুনি, আজকে আমার কাহিনী শুনো…

ঘন্টা দেড়েক পরে একগাদা গাল-গল্প শুনিয়ে, লেকচার থামিয়ে পানি মুখে দিতে গিয়ে মনে হলো অন্য চোখে তাকালেন আজকে প্রফেসর আমার দিকে .. একটু বিস্ময়, একটু কৌতুহল নিয়ে *SMILE*

এর কদিন পর এই ঘটনা লিখে রাখবো বলে নিজের ডায়েরী খুলে নিজেই হা করে তাকিয়ে আছি অনেকক্ষণ
২০, ১৩, ৪৫, ২২, ৫, ৭৭, ৩০, ৪৩….
এহ! । চোখ ঘষে আবার দেখতে হলো- কয় যুগ আগের কথা! প্রথম দেখায় মনে করেছি স্কুলের উইকলি টেস্টের নাম্বার মনে হয়। পরে বুঝলাম টুকে রাখা কয়েকটা ইনিংস ওগুলো।
উপরওয়ালা চিন্তা করার জন্য এত্তো বড় একটা মাথা দিয়েছেন, এত জায়গায় ঘুরে এতকিছু দেখার জন্য ২টা চোখ দিয়েছেন আর লিখার জন্য এত সুন্দর হাত দিয়েছেন.. তারপরো হাত গুটিয়ে বসে থাকাটা কেমন নিজের কাছেই নিজেকে ইরেস্পন্সিবল মনে হয়। গড! ইটস ইউর ক্রিয়েশন! হেল্প হিম!

মাথায় যা আসে তাই টাইপ করবো আজকে। New Word Document খুলে বসে গেলাম, আর কিছু মনে নাই। পাগলের মতো আঙ্গুল উড়ে বেড়াচ্ছে কি-বোর্ডে আর মনটা ভাসছিলো সেই ৯২ এর রোজার দিনগুলিতে!

ওহ নো! আই ওয়াস এ কিড অফ সিক্স ইয়ার দেন!
এখনো পরিষ্কার দেখতে পাচ্ছি। বাসা ভর্তি সব পাকু সাপোর্টার। ইঞ্জির সেমির ইনিংসটা!, আর ফাইনালে আকরামের লুইসকে বোল্ড করা অসাধারণ কাটারটা!

আরো কিছু বছর পরের কথা। আমাদের ক্রিকেট উৎপাত ততদিনে মেনে নিয়েছে আশেপাশের মানুষগুলো। নতুন স্কুল প্যান্ট ডাইভ দিতে গিয়ে হাঁটু ছিঁড়ে ফেলেছি, ভয়ে বাসায় দেখাতে পারিনি। ওটা পড়েই হপ্তা পার। খালার বাসার সোফাটা তো আজো ভাঙ্গা! রশিদ লতিফের ডাইভ প্র্যাকটিস করতে গিয়ে!

বলছি সেই ‘৯৫-‘৯৮ এর কথা!
স্কুল আর প্যারেডে খেলি, আর গন্ডি বড় হতে থাকে আস্তে আস্তে। ঢাকা থেকে BKSPর ফ্রেন্ডরা আসলে হা হয়ে গল্প শুনি।

প্রথম বড় মাঠে ম্যাচ খেলার ফিলিংসটা এখনো টগবগে। ক্লাস আর স্কুল টিমে ওয়ান ডাউন পজিশনটা তখনো নড়বড়ে, তারপরো ওটাই আমার বেস্ট চয়েস। খালি প্রমাদ গুনছিলাম, এতো বড় বাউন্ডারি! মাথায় একটাই চিন্তা, নাসিরাবাদের পেসম্যান দুইটার এতো পেস, কেমনে সামলাবো??নির্মাণ ক্রিকেট শুরু হওয়ার আগে ৬টা প্র্যাকটিস ম্যাচ, সবার হাতে প্র্যাকটিস টাইম ম্যাচসহ সিডিউল ধরা।

আরো কবছর পরে…

ঢাকার ফ্রেন্ডদের অনেকের ফার্স্ট ডিভিশন এক্সপেরিয়েন্স হয়ে গেছে। আফতাব তো খুব তাড়াতাড়িই ঢুকে গেলো এ টিমে। এনটিনিকে টানা চারটা চার মেরে প্রথম বারের মতো আলোচনায়। ও বলসে বুকে সাহস রাখতে, তাইলে ওই লেভেলে যে কোন পেসারকে খেলা যায়। তখনকার Under-19 কোচ শন উইলিয়ামস নাকি বলসে নেক্সট টুরেই ন্যাশনাল টিমে আসার চান্স আছে।

নাহ! এতো এতো স্মৃতি! এক পর্বে হবে না!
ওয়ার্ম আপ করে আসি তার আগে, যাবেন কেউ?
(চলবে)

Whatever I write these days, it ends up with damn serious mood. I extremely feel to finish this old note ASAP.

ওস্তাদ সম্পর্কে

http://ostadzdiary.blogspot.com আমি বাংলার ছেলে, বাংলা মায়ের দুরন্ত,দামাল ছেলে হয়েই থাকতে চাই। গত দুই বছর ধরে বিদেশে। ইংলিশটা দিন দিন ভালও হচ্ছে। আপাতত এটাতেই চালাচ্ছি। বাংলা লিখালিখি একদম বন্ধ হয়ে গেছে। তবে... যেটা সত্যি... বাংলা ভাষা ছাড়া অন্য কোন ভাষায় কথা বলে কখনই শান্তি পাব না। …পাওয়া সম্ভব না। শান্তি শুধু বাংলাতেই। জয় বাংলা!
এই লেখাটি পোস্ট করা হয়েছে খেলাধুলা, স্মৃতিচারণ-এ। স্থায়ী লিংক বুকমার্ক করুন।

10 Responses to লাস্ট ম্যান স্ট্যান্ডিং- পর্ব ১: ওয়ার্ম আপ

  1. জ্ঞানচোর বলেছেনঃ

    ওহ.. মাঝে মধ্যে মনে হয়, সে সময়কার ক্রিকেটে এক্সট্রা কিছু ছিল। এখন কি জানি নাই নাই।

    ওয়ার্ম আপটা দারূণ হয়েছে। এবার দেখি, ম্যাচ কেমন হয়?

  2. ওয়ার্ম আপটা পড়ে বেশ লাগলো,

    কেন জানি আমাদের দেশে খেলাধুলা নিয়ে খুব বেশি লেখা হয় নি এখন পর্যন্ত!!

    ফুল ইনিংসের অপেক্ষায়! 😀

  3. ওস্তাদ বলেছেনঃ

    ওয়ার্ম আপ করতে দুজন পেলাম, খারাপ না 🙂

  4. সামিরা বলেছেনঃ

    অনেক আগে কোথায় যেন পড়েছিলাম মনে হয় লেখাটা।
    ভাল লেগেছে। 😀
    :welcome:

    • জ্ঞানচোর বলেছেনঃ

      এই সেরেছে। সামিরা আপু। আপনার শকুনের চোখ।

      ইনিংসের উত্তেজনায় ওয়েলকাম জানাতেই ভুলে গ্যাছে সবাই। 😛

      :welcome:

  5. ওস্তাদ বলেছেনঃ

    থ্যাঙ্কু!
    এটা পুরাই ভার্জিন লেখা
    আগে তো দিই নাই কোথাও।
    ২য় পর্ব প্যান্ডিং হয়ে আছে, গতকাল সাবমিট করার পর। বুঝলাম না কেন।

  6. অনাবিল বলেছেনঃ

    খেলাধুলা আসলেই চমৎকার একটা জিনিস। অবশ্য ক্রিকেট খুব একটা বুঝি না…

    সরবে স্বাগতম!
    লেখা চলুক……

  7. ফিনিক্স বলেছেনঃ

    পরের পর্ব আগেই পড়ে ফেলেছি। 😛
    ওয়ার্ম আপটাও ভালো লাগলো। 🙂

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।