সরবে আজ থেকে লেখা শুরু করলাম। প্রথম দিনে আমার একটা পুরোনো লেখা সবার সাথে শেয়ার করছি। লেখাটা রস+আলোতে ছাপা হয়েছিল। :happy:
একদিন মীনা আর মিঠু রাস্তা দিয়ে যাচ্ছিলো। হঠাৎ মীনা দেখলো, কিছু ছেলে মেয়ে একসাথে সুর করে কি যেন বলছে! মীনা আর মিঠু চুপি চুপি ছেলেমেয়েগুলোর পেছনে যেয়ে উঁকি দিলো! মীনা দেখতে পেলো- তাদের সামনে ল্যাপটপে ফেসবুকের হোমপেজ বের করা। সেখান থেকেই তারা …আসিফ শুভ নামের এক ব্যাক্তির স্ট্যাটাস সুর করে পড়ছে! আসিফ শুভ সাহেব লিখেছেন-
“আতা গাছে তোতা পাখি
নারিকেল গাছে ডাব!
এতো ডাকি তবু কথা
কউ না কেন Love?”
বেশ কয়েকবার তারা সুর করে এই স্ট্যাটাসটা পড়লো!! তারপর তাদের মধ্যকার একটা ছেলে বলতে শুরু করলোঃ “বন্ধুরা, এবার একটা গল্প শোনাই! অনেকদিন আগে ফেসবুকে কিছু পেজ ছিলো। পেজগুলোতে অনেক লাইকার ছিলো। লাইকার থাকলে কি হবে, তাদের পোস্টে কোনো লাইক ছিলো না! একদিন হলো কি!! পেজগুলোর অ্যাডমিনগণ সবার হোমপেজে এসে ভিক্ষা করা শুরু করলো- আমাকে লাইক দাও! আমাকে লাইক দাও!! ভালো লাগলে লাইক মাস্ট!!!”
গল্পকথক ছেলেটা গল্প থামিয়ে তার বন্ধুদের প্রশ্ন করলো- “বলোতো, অ্যাডমিনরা কি বলে ভিক্ষা করছিলো??”
পেছন থেকে মিঠু চেঁচিয়ে উত্তর দিয়ে দিলো- “আমাকে লাইক দাও! ভালো লাগলে লাইক মাস্ট!”
মিঠুর কথা শুনে সবাই হো হো করে হেসে ফেললো! আর তখনই মীনা দৌড়ে পালালো! মিঠুও উড়াল দিলো!
মীনা বাড়িতে এসে দেখলো, গ্রামের মাতবর চাচা মীনার বাবাকে বলছেন, “কাল রাইতে চোরডা আমার পোলার কাছ থেকে ফ্লেক্সিলোড নিয়া নিছে। ফেসবুকে মাইয়া সাইজা আমার পোলারে পটাইছে। আচ্ছা, আমি এহন যাই। তুমি ফেসবুকে চোখকান কান খোলা রাখবা। চোরডারে ধরতে হইবো!”
এই কথা বলে চাচা চলে গেলেন।
তখনই রাজু ফেসবুকিং শেষ করে ঘর থেকে বের হলো! বাবা রাজুকে জিজ্ঞেস করলেন, “রাজু, ফেসবুকে কি শিখলা বাবা?”
রাজু উচ্ছ্বসিত হয়ে বললো, “অনেক কিছু! আমি এহন ফেসবুকে স্ট্যাটাস লেখতে পারি!”
ছেলের সাফল্যে গর্বিত বাবা বললেন, “খুব ভালা কথা! তুমি কিন্তু মন দিয়ে ফেসবুকিং করবা!”
এদিকে মীনা মন খারাপ করে বললো, “বাবা, আমিও ফেসবুকে যাইতে চাই।।।”
রাজুও সমর্থন জানালো, “আমার লগে যাইতে পারে! আমি যামু ক্রোম দিয়া, আর মীনা যাইবো ফায়ারফক্স দিয়া!”
কিন্তু বাবা শোনালেন নিরাশার বাণী, “না মীনা, তুমি থাকবা তোমার মায়ের লগে।”
মীনার কন্ঠে আকুতি, “কিন্তু বাবা, আমি ফেসবুকিং শিখতে চাই!”
বাবা বললেন, “মাইয়াগো ফেসবুকে যাওনের দরকার নাই।”
মীনার মা বললেন, “তুমি শিখবা ঘরবাড়ির কাম।”
মীনা আবারো বললো, “কিন্তু মা, আমারো ফেসবুকে স্ট্যাটাস থাকা উচিত।”
মা বিরক্ত হয়ে বললেন, “ক্যান মীনা?? কি দরকার এসবের? অহন একটু টিভিতে স্টার প্লাস ছাইড়া দাও তো! ছিরিয়াল শুরু হইয়া গেলো!”
পরদিন সকালে রাজু ফেসবুকিং করতে বসলো। হঠাত মীনার মাথায় একটা বুদ্ধি আসলো!!! মীনা মিঠুকে বললো, “আচ্ছা, মিঠু, তুমি গত কাইলের ঐ জায়গায় যাও! ঐ পোলা মাইয়ারা ফেসবুক নিয়া কি কি কথা কয়, জাইনা আহো। তহন তুমি আমারে শিখাইতে পারবা! লক্ষী মিঠু, যাও”
মিঠু উড়তে উড়তে সেই ছেলেমেয়েগুলোর কাছে গেলো! ছেলেটাকে সবাইকে বলছিলো, “আজ আমরা শিখবো কিভাবে ফেসবুকের ফেক আইডি সনাক্ত করা যায়!
১) ফেক আইডিগুলো মেয়েরূপী হয়।
২) এদের প্রোফাইল পিকচারগুলোর একটার সাথে অন্যটার কোনো মিল থাকে না!
৩) এদের ফ্রেন্ডলিস্ট পরিপূর্ণ!
৪) এরা স্ট্যাটাস দেয়- আমার খুবই মন খারাপ। কেউ আমার মন ভালো করতে পারবে??
তখনই গাধারা সেই ফেক আইডির ইনবক্সে তেলের বন্যা বানায় ফেলে!
৪) এদের bio তে লেখা থাকে- i am so sweet, nice, cute, simple, friendly garl! (girl বানানটা অধিকাংশ ক্ষেত্রে ভুল থাকে!)
৫) …
৬) …
৭) …
মিঠু খুব মনোযোগ দিয়ে শুনলো! তারপর মীনার কাছে যেয়ে এগুলো বললো! মীনা পয়েন্ট গুলো মুখস্থ করে নিলো।
দুপুরবেলায় রাজু হঠাত ফেসবুকিং ছেড়ে বাইরে দৌড় দিলো!! এই সুযোগে ঘরে যেয়ে মীনা তখন পিসির স্ক্রীনে চোখ রাখলো। হ্যা, লগ ইন করাই আছে! প্রথমেই সে রাজুর প্রোফাইলে গেলো! রাজুর আইডি নেম দেখে তো মীনা অবাক! স্ক্রীনে বড় বড় অক্ষরে লেখা- Romeo Raju! রাজু আবার স্ট্যাটাস দিয়েছেঃ who wanna be my ছাম্মাক ছাল্লো??!!
chat history দেখে মীনার চক্ষু চড়কগাছ!!
angelina jolie- hey handsome, ki koro?
Romeo Raju- wow!! thanku!! tomar msg peye khub valo asi! tumi kmon aso?
angelina jolie- jano, ami valo nai.. amar mobile e balance nai.
Romeo Raju- ami thakte how is this possible on planet earth?? tomar mob num daOOO!!!
angelina jolie- eto sweetly bolla! okay, 017********
Romeo Raju- plz wait!!!
এরপর আর কিছু নাই! তারমানে রাজু এই মেয়েকেই ফ্লেক্সিলোড দিতে বাইরে গেছে!! মীনার মনে একটা সন্দেহ জাগলো!! এটা ফেক আইডি না তো? মীনা angelina jolieর প্রোফাইলে গেলো! অনুসন্ধান শুরু করলো মীনা! হ্যা, যা ভেবেছিলো!
এর প্রোফাইল পিকচারগুলোর একটার সাথে অন্যটার অন্য মিল নাই! এর ফ্রেন্ডলিস্ট পরিপূর্ণ! এ স্ট্যাটাস দিয়েছে- i am so lonely broken angel..সেখানে আবার রাজুর তৈলাক্ত কমেন্ট!! এর bio তে লেখাঃ i am so sweet, nice, cute, simple, awesome, ছুন্দর, friendly garl!
মীনার আর বুঝতে বাকি রইলো না যে এটা ফেক আইডি! মীনা তার উপস্থিত বুদ্ধি দিয়ে angelina jolieর ইমেইল ঠিকানা লিখে রাখলো! এবং তখনি ফেক আইডি প্রতিরোধক পুলিশের কাছে ফোন করলো!
-হ্যালো, পুলিশ আংকেল?দ
=পুলিশ ইন্সপেক্টর ওমুক তমুক বলছি! কি করতে পারি?
-আমি একটা ফেক ফেসবুক আইডি ধরেছি! angelina jolie. email address: [email protected]
=really??!! আমরা একেই এতোদিন ধরে খুজছিলাম!! বার বার আইডি deactivate আর আইডি পরিবর্তন করে শইতানটা পার পেয়ে যাচ্ছিলো! এবার আর কেউ কালপ্রিটটাকে আমার হাত থেকে বাচাতে পারবে না!! প্রোমোশন আমার হবেই!!
……..
angelina jolie নামধারী দুষ্টু ছেলে দিপুকে গ্রেপ্তার করলো পুলিশ! সব শুনে মাতবর চাচা বললেন, “আরেহহহ!! এইডাই তো সেই চোর! angelina jolie নামেই আমার পোলাকে মেসেজ পাঠাইছিলো! মীনা, তোমার লাইগা চোরডারে ধরতে পারলাম! তুমি এই চোরডারে চিনলা কেমনে??
মীনা হেসে ব্বললো, “আমি একটু ফেসবুকিং করছিলাম!!”
মীনার বাবা বললেন, “তুমি কি করছিলা কইলা?”মীনার হাসি হাসি উত্তর, “আমি ফেক আইডি সনাক্তকরনের লাইগা অনুসন্ধান করছিলাম!”
চাচা তখন মীনার বাবাকে বললো, “বাহ! তুমি মিয়া তোমার মাইয়ারে ফেসবুকে দিয়া খুবই বুদ্ধিমানের কাজ করছো!”
মীনার বাবা আমতা আমতা করা শুরু করলেন, “ইয়ে মানে, ইয়ে ইয়ে…”
বুড়ি মহিলা বললেন, “হ, মাইয়াগো ফেসবুকিং করানো খুবই ভালা! আমার মাইয়া রত্নার একটা পেজ আছে! কত্তো লাইক পায়!”
অন্য আরেক লোক বললো, “আমার মাইয়াডা ফেসবুকিং করছে! হে এহন নোট লিখবার পারে!!”
চাচা আবার বললেন, “হুম, সব মাইয়াগো ফেসবুকে যাওন উচিত!”
মীনার বাবা তার ভুল বুঝতে পেরে মীনাকে বললেন, “মীনা, কাল থেইকা তুমি ফেসবুকে যাইবা।”
মীনা আনন্দে ফেটে পড়লো, “হাচা কইছো বাবা?”
বাবা ভরসা দিয়ে বল্লেন,”হাচা কইছি মা!”
পরদিন থেকে মীনা ফেসবুকিং শুরু করলো মনের সুখে!!
-আসিফ শুভ
অছাম!!!! :love: :love: :love:
রাজু উচ্ছ্বসিত হয়ে বললো, “অনেক কিছু! আমি এহন ফেসবুকে স্ট্যাটাস লেখতে পারি!”
ছেলের সাফল্যে গর্বিত বাবা বললেন, “খুব ভালা কথা! তুমি কিন্তু মন দিয়ে ফেসবুকিং করবা!”
বুড়ি মহিলা বললেন, “হ, মাইয়াগো ফেসবুকিং করানো খুবই ভালা! আমার মাইয়া রত্নার একটা পেজ আছে! কত্তো লাইক পায়!”
অন্য আরেক লোক বললো, “আমার মাইয়াডা ফেসবুকিং করছে! হে এহন নোট লিখবার পারে!!”
চাচা আবার বললেন, “হুম, সব মাইয়াগো ফেসবুকে যাওন উচিত!”
:love: :love: :love:
রস আলোতেই পড়ছিলাম- খুব মজার লেখা।
হাহাহাহা!
প্রথম দিকে একটু কেমন যেন মনে হল, কিন্তু সবটা পড়ে – দারুণ মজার! 😀
দারুণ! :love:
খিক খিক আরো মজার মজার লেখা চাই
হা হা হা হা হা………
খুবই মজার!
আমি যামু ক্রোম দিয়া, আর মীনা যাইবো ফায়ারফক্স দিয়া!”
=)) 🙄
সরবে স্বাগতম!
😀
:welcome:
দারুণ মোজা পেলাম। হা হা হা হা হা!
‘girl বানানটা অধিকাংশ ক্ষেত্রে ভুল থাকে!’ =))
*মজা