প্রিয় হুকোমুখো হ্যাংলা,
জানিস ক’দিন ধরে না এখানে ভারি বৃষ্টি হচ্ছে। আকাশ ভেঙে যেমন অঝোরে বৃষ্টি ঝরে, তেমনি আমার মনের ভেতরে অবিরত কথার বৃষ্টি ঝরে যাচ্ছে টুপ টুপ টুপ। আর সেজন্যই তো তোকে এই চিঠি লিখছি- উড়ো চিঠি। কী করবো বল? তোর ঠিকানাটাই যে আমার জানা নেই! নতুবা ডাকে করেই পাঠিয়ে দিতাম।
তুই নিশ্চয়ই ভ্রু কুঁচকে বসে আছিস। ভাবছিস, ঠিকানা না জেনে তবে কাকে না কাকে লিখছি আমি। হ্যাঁ রে, তোকেই লিখছি। তুই- আমার অনাগত সন্তান, আমাদের সন্তান, আমাদের ভবিষ্যত প্রজন্ম। মজার ব্যাপার কি জানিস? সব বাবা-মা তাদের সন্তানের সাথে কথা বলেন সন্তান মায়ের শরীরে তিল তিল করে বেড়ে উঠবার পর। সন্তানের অস্তিত্ব মায়ের শরীরের সাথে একাত্ম হতে শুরু করলেই তাদের মধ্যে আরম্ভ হয় এই কথার ফুলঝুরি। কিন্তু আমি না ভীষণ পাগলি। তোকে কোথা থেকে পাব, তোর বাবাকেই যে এখন অবধি খুঁজে পেলাম না! তাই বলে কি আমার কাছে তোর অস্তিত্ব মিথ্যে হয়ে যাবে? নাই বা হলি তুই আমার অস্তিত্বে বেড়ে ওঠা কেউ, তুই হয়ত অন্য কোন মায়ের শরীরে বাসা বাঁধবি। তবু আমি জানি, তোর সাথে আমাকে কথা বলতেই হবে, নাহলে তুই স্কুলের অ্যাসাইনমেন্টটা করবি কীভাবে? আজ স্কুল থেকে এই অ্যাসাইনমেন্টটা দিল বলেই না তুই তোর যুগ আর আমার যুগের তফাৎ খুঁজতে গিয়ে আমার এই চিঠিটা হাতে পেয়ে গেছিস! নাহলে এসব সম্ভব ছিল বল?
আচ্ছা, তোর স্কুলটা কি আমারটার মতই বিশাল বড়? তুইও কি আমার মত স্লেট-চকে হাতেখড়ি করেছিস? নাকি তোর স্কুলে এখন প্রোজেক্টরে পড়ায়? আর তুই সফট কপিতে বই পড়ে অনলাইনে পরীক্ষা দিস? বছরের শুরুতেই তুই নিশ্চয়ই আমার মত নতুন বই কিনে বুক ভরে তার ঘ্রাণ নিস না? আমার মত বাংলা বইটা খুলে সবার আগে গল্প-কবিতাগুলো পড়ে শেষ করে ফেলিস না?
জানিস, ছোটবেলায় আমি যে বাংলা বই পড়তাম তার নাম ছিল, আমার বই। বুকে জড়িয়ে ধরে সত্যিই মনে হত এটা ‘আমার বই’! প্রথম পাতা খুললেই চোখে পড়ত, পতাকা নির্মাণের নিয়মাবলী। তখন কি ছাই অতশত বুঝতাম? তবে পাতা ওল্টালেই দেখতে পেতাম ‘জাতীয় সঙ্গীত’ পুরোটা লেখা।
প্রথম শ্রেণিতে আমাদের প্রথম ছড়া ছিলো ‘আয় আয় চাঁদ মামা’।
আয় আয় চাঁদ মামা
টিপ দিয়ে যা
চাঁদের কপালে চাঁদ
টিপ দিয়ে যা।
ধান ভানলে কুঁড়ো দেব
মাছ কাটলে মুড়ো দেব
কালো গাইয়ের দুধ দেব
দুধ খাবার বাটি দেব
চাঁদের কপালে চাঁদ
টিপ দিয়ে যা।
তুই কি আমার মত প্রথম শ্রেণিতেই পড়া শুরু করেছিস? নাকি প্লে-প্রি-কেজি-আরো হাজারটা লেভেল পার করে তবেই তোর ক্লাস ওয়ান শুরু হয়েছে? আচ্ছা, ওয়ানে তুই ‘খরগোশ আর কচ্ছপের গল্প’ পড়েছিস? ‘সিংহ ও ইঁদুরের গল্পটা’ জানিস তুই? আমাদের ছিল, ছবিতে ছবিতে গল্প। তারপর ছিলো খান মুহম্মদ মঈনুদ্দীনের ‘কানা বগীর ছা’ ছড়াটা।
আরেকটা ছড়া ছিল। প্রায় আড়াই বছর বয়সের এক পিচ্চি মামাত বোন আজকাল ফোনে প্রায়ই আমাকে ছড়াটা শোনায়। ওর মুখে এই ছড়াটা শুনতে কী যে ভালো লাগে! প্রথম দুটো লাইন ও সুর করে সময় নিয়ে বলার পর বাকিটা এত তাড়াতাড়ি বলে যে মনে হয় ওর অনেক তাড়া আছে, এক্ষুণি ট্রেন ছেড়ে দেবে। তাই ছড়াটা কোনমতে শেষ করেই দৌড়োবে! ছড়ার নাম, আয়রে আয় টিয়ে। ওর মত করেই লিখে দেখাই তোকে, কেমন?
আয় আয় তিইইইয়ে
নায়ে ভলা দিইইইয়ে
না’ নিয়ে দেল বোয়াল মাতে
তাই না দেতে ভোঁদন নাতে
ওলে ভোদন ফিলে তা
থোতাল নাতন দেতে দা।
ছোটবেলায় পলিন আপা আমাদের ইংরেজি-বাংলা ছড়া সুর করে শেখাতেন, আমরা অভিনয় করতে করতে বলতাম। তুই কি সুর করে ছড়া পড়তি? তুই কি ‘ইন্তি বিন্তি’ এই ছড়াটা জানিস?
ইন্তি বিন্তি সিন্তি
উঁকি মারে গাছের আড়াল থেকে
চুপিসারে একদিন নাঁকি সুরে গাইছিল গান
তাই শুনে ইন্তি বিন্তির জুড়ে গেল প্রাণ।
ইন্তির খিদে পেল
গাছ থেকে নেমে এল
খিচুড়ি খাবে বলে কাঁদিল রে।
মা এসে ধোঁকা দিল
খাওয়া-দাওয়া ঘুঁচে গেল
ইন্তি বিন্তি রাগ করে শুতে গেল রে।
One Two নামের একটা রাইম ছিল আমাদের ক্লাস ওয়ানে। এটাও আপার শেখানো।
One two
Buckle up my shoe.
Three four
knock at the door.
Five six
Pick up the stick.
Seven eight
Lay them straight.
Nine ten
A big fat hen.
আরেকটা ছিলো, Row Your Boat, আমরা সুর করে গাইতে গাইতে নৌকা বাওয়ার ভঙ্গি করে বলতাম।
Row row row our boat
Gently down the stream.
Merrily merrily merrily merrily
Life is but a dream.
চল চল চলরে চল
নৌকা বেয়ে চল।
টলমল কালো জল
ভালো লাগে ভাই।
তুই ফর্রুখ আহমদ এর ছড়া পড়েছিস? ক্লাস ওয়ানে পড়া আমার খুব প্রিয় একটা ছড়া আছে তাঁর লেখা- ঝুমকো জবা।
জানিস, বাংলা বইটা না আমার ভীষণ প্রিয় ছিল। অনেক অনেকগুলো ছড়া-কবিতা আমার পুরোদস্তুর মুখস্থ আছে এখনও। একদিন আমার এক বন্ধুর সাথে বাজি ধরেছিলাম, ছোটবেলার ছড়া কার কতটা মনে আছে। ফোনে রাত পেরিয়ে প্রায় ভোর হয়ে গিয়েছিল, আমরা কেউই হার মানি নি! কত কত ছড়া যে সেদিন আবৃত্তি করেছিলাম, মনে নেই। আবৃত্তি মানে সুর করে করে ছোটবেলার মত করে বলা। এই যেমন তোকে এখন লিখছি আর সুর করে করে নিজেই নিজেকেই শোনাচ্ছি। তোর আমাকে আসলেই আস্ত পাগল বলে মনে হচ্ছে, না রে?
তোকে সুফিয়া কামালের ‘ছোটন ঘুমায়’ আর জসীম উদ্দীনের ‘মামার বাড়ি’ শুনাই, দাঁড়া।
ছোটন ঘুমায় মামার বাড়ি
গোল করো না গোল করো না আয় ছেলেরা, আয় মেয়েরা
ছোটন ঘুমায় খাটে। ফুল তুলিতে যাই,
এই ঘুমকে কিনতে হল ফুলের মালা গলায় দিয়ে
নওয়াব বাড়ির হাটে। মামার বাড়ি যাই।
সোনা নয় রূপা নয় ঝড়ের দিনে মামার দেশে
দিলাম মোতির মালা আম কুড়াতে সুখ,
তাই তো ছোটন ঘুমিয়ে আছে পাকা জামের শাখায় উঠি
ঘর করে উজালা। রঙিন করি মুখ।
এত এত ছড়া-কবিতা শোনালাম তোকে আর আমাদের জাতীয় কবি এবং কবিগুরুর ছড়া শোনাব না, তা কি হয়? তাহলে শোন, কাজী নজরুল ইসলামের ‘প্রভাতী’ আর রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘ছুটি’ কবিতা। এগুলো সবই আমাদের ক্লাস ওয়ানে ছিল।
প্রভাতী ছুটি
ভোর হল দোর খোল মেঘের কোলে রোদ হেসেছে
খুকুমণি ওঠরে, বাদল গেছে টুটি,
ঐ ডাকে জুঁই শাখে আজ আমাদের ছুটি ও ভাই,
ফুল খুকী ছোটরে। আজ আমাদের ছুটি।
খুলি হাল তুলি পাল কি করি আজ ভেবে না পাই
ঐ তরী চলল, পথ হারিয়ে কোন বনে যাই,
এইবার এইবার কোন মাঠে যে ছুটে বেড়াই
খুকু চোখ খুলল। সকল ছেলে জুটি,
আল্সে নয় সে আজ আমাদের ছুটি ও ভাই,
ওঠে রোজ সকালে, আজ আমাদের ছুটি।
রোজ তাই চাঁদাভাই
টিপ দেয় কপালে।
আচ্ছা, তুই কি গান গাইতে পারিস, হুকোমুখো হ্যাংলা? আহা, রাগ করছিস কেন রে? এটা তো আদরের ডাক, ভালোবাসার ডাক। আচ্ছা, যা তবে তোর নাম, নাক ড্যাঙা ড্যাং ড্যাং। উঁহু, আর কোন আপত্তি শুনব না। আগে তুই আমার গল্প শোন।
ছোটবেলায় যখন গান শিখতাম, তখন প্রথম সাড়ে তিন কি চার বছর বয়সে স্টেজ পারফর্মেন্স করেছিলাম। স্টেজ কী তা তো আর তখন বুঝতাম না। পরে শুনেছিলাম, আমাকে নাকি একটা টেবিলের উপর তুলে মাইকের সামনে দাঁড় করিয়ে দিয়েছিল আর আমি গেয়েছিলাম,
লাল ঝুঁটি কাকাতুয়া
ধরেছে যে বায়না,
চাই তার লাল ফিতে
চিরুনি আর আয়না।।
জেদ বড় লাল পেড়ে
টিয়ে রঙ শাড়ি চাই
মন ভরা রাগ নিয়ে
হল মুখ ভারি তাই।
বাটা ভরা পান দেব
মান তবু যায় না।
চাই তার লাল ফিতে
চিরুনি আর আয়না।।
ছোট থেকে বড় যদি
কোনদিন হতে চাও
ভালো করে মন দিয়ে
লেখাপড়া করে যাও।
দুষ্টুমি করে যে
লোকে তারে চায় না।
চাই তার লাল ফিতে
চিরুনি আর আয়না।।
এই ছড়াগানটা শুনেছিস তুই? ভারি মিষ্টি না? কিন্তু আমার শেখা প্রথম গান ছিল আরেকটা। এখন মাত্র চারটা লাইন মনে আছে আমার, পুরোটা ভুলে গেছি রে।
নিজের হাতে কাজ করো
কাজ তো ঘৃণার নয়
কাজের মাঝে হয় মানুষের
সত্য পরিচয়।।
জীবনের শুরুতে কী ভয়ঙ্কর সত্যি একটা কথা শিখেছিলাম, তা এখন বুঝতে পারি।
উফ্, একটা ছড়ার কথা তো তোকে বলতেই ভুলে গেছি! এটা তোকে আমার বলতেই হবে। কারণ এটা সুকুমার রায়ের ছড়া। আর সুকুমার রায় মানেই ছোটদের স্বর্গরাজ্য! আজকে তাঁর একটা ছড়া তো তোকে শোনাবোই। পরে কোন আরেক উড়ো চিঠিতে একদিন পুরো তাঁর ছড়াগুলো নিয়েই কথা হবে তোর সাথে, বুঝেছিস? নাহলে যে কী ভীষণ ভালো কিছু মিস করবি, সেটা তুই কখনো বুঝতেও পারবি না।
এই ছড়াটার নাম ‘হনহন পনপন’।
এই যে আবার বৃষ্টি শুরু হল এখানে! আমার মতই এইমাত্র কোমল একটা বাতাস এসে তোকেও ছুঁয়ে গেল না? তুই কেমন যেন আনমনা হয়ে গেলি। জানালায় গিয়ে আকাশের দিকে ক্ষণিক তাকিয়ে থাকলি। তারপর সেই বাতাসটা আবার তোকে ছুঁয়ে যেতেই তুই চোখ বুঁজে ফেললি আবেশে। জানিস এই হাওয়ার আরও একশো-হাজারটা ধূলিকণার সাথে সাথে তোকে ছুঁয়ে গেছে মাত্র একটা ফুলের রেণু। তুই কি বুঝতে পেরেছিস? এই একটা রেণুর স্পর্শেই তোর শরীরে হাজারটা রেণু এসে কত কথা বলে গেল, তুই চোখ বুঁজে সেই ভালো লাগার আবেশটাই তো নিলি।
আমারও ঠিক এমনটাই হল, সবসময় হয়। তুই ফুলের রেণু হয়ে আমাকে ছুঁয়ে যাস। আর কী এক অনুরণনে আমার পুরোটা শরীর স্পন্দিত হয়! তাই তো তুই আমার এত ভালো লাগার, এত কাছের। তাই তো তোর সাথে আমার এত গল্পকথা। কে বলে তোর সাথে কথা বলতে চাইলে তোকে ধারণ করতেই হবে শরীরে? তুই তো আমার শরীর-মন জুড়েই বসত গেড়ে বসে আছিস রে, ঐ যে ফুলের রেণুর মত। আমি টের পাই। আমি ঠিক টের পাই রে, নাক ড্যাঙা ড্যাং ড্যাং আমার।
এই ক্ষেপে গিয়ে আমাকে আবার মারবি নাকি? আমি তবে পালাই এক্ষুণি!
ইতি
তোর রূপকথা
আচ্ছা, তোর স্কুলটা কি আমারটার মতই বিশাল বড়? তুইও কি আমার মত স্লেট-চকে হাতেখড়ি করেছিস? নাকি তোর স্কুলে এখন প্রোজেক্টরে পড়ায়? আর তুই সফট কপিতে বই পড়ে অনলাইনে পরীক্ষা দিস? বছরের শুরুতেই তুই নিশ্চয়ই আমার মত নতুন বই কিনে বুক ভরে তার ঘ্রাণ নিস না? আমার মত বাংলা বইটা খুলে সবার আগে গল্প-কবিতাগুলো পড়ে শেষ করে ফেলিস না?
দারুন আপু লেখটা। 🙂
অনেকদিন পর কিছু একটা লিখলাম। হাতে মরচে ধরে গেছে রে।
নিজের লেখা নিয়ে নিজেই অসন্তুষ্ট! 🙁
:love:
:thinking:
লেখাটা ভালো হইছে কিন্তু কিভাবে বোঝাবো সেই ভাষা না পেয়ে ইমো ব্যবহার করেছি। এত থিঙ্কানির কিছু নাই। 8)
😛
নিলয়ের জিভে কি কোন সমস্যা হয়েছে?
জিভ সবসময় বের হয়ে থাকলে তোকে কিন্তু দেখতে পচা লাগে। (আমার জন্য অবশ্য উল্টোটা) 😛
এতক্ষণ ধরে বোঝাতে পারছিলি না আর যেই থিঙ্কানির ইমো দিলাম সেই মুখ থেকে বের হল যে ‘লেখা ভালো হইছে’!
এইটা তো আরও সন্দেহজনক।
ডবল থিঙ্কানি! :thinking: :thinking:
আমার জিভে সমস্যা হয় নাই কোন :love:
সবার জীবনেই বুঝি এমন একটা গল্প থাকে!! ঠিক ছোটবেলার মতো করে সুর করে ছড়াগুলো পড়লাম…
এত্তো অসাধারণ আমাদের ভাষা, আমাদের ছোটদের জন্য ছড়া কবিতাগুলো…
অদ্ভুত সুন্দর একটা পোষ্টের জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ…
“এত্তো অসাধারণ আমাদের ভাষা, আমাদের ছোটদের জন্য ছড়া কবিতাগুলো…”>> একেবারে মনের কথাটা বলেছেন!
ছোটবেলার সেই ছড়া-কবিতা-গল্পের প্রতি প্রেম আজ অবধি আর কাটিয়েই উঠতে পারলাম না। 😐
কী কমেন্ট করবো সেটা ভাবছিলাম! দারুণ সুন্দর একটা লেখা। ৪র্থ কিংবা ৫ম বার পড়ে কমেন্ট করবো?!!
ফিনিক্স রিটার্নস! 😀
এই পোস্ট কি আসলেও ৪র্থ কিংবা ৫ম বার পড়ার মত হয়েছে?! 😯
আমি অবশ্য আবার সরব হতে পেরে খুশি। অন্তত তোমার মত গুণী এবং অত্যধিক ব্যস্ত মানুষের মন্তব্য পাওয়া যায় তাহলে! এটুকুও অনেক বড় পাওয়া! :yahooo:
আমারও ঠিক এমনটাই হল, সবসময় হয়। তুই ফুলের রেণু হয়ে আমাকে ছুঁয়ে যাস। আর কী এক অনুরণনে আমার পুরোটা শরীর স্পন্দিত হয়! তাই তো তুই আমার এত ভালো লাগার, এত কাছের। তাই তো তোর সাথে আমার এত গল্পকথা। কে বলে তোর সাথে কথা বলতে চাইলে তোকে ধারণ করতেই হবে শরীরে? তুই তো আমার শরীর-মন জুড়েই বসত গেড়ে বসে আছিস রে, ঐ যে ফুলের রেণুর মত। আমি টের পাই। আমি ঠিক টের পাই রে, নাক ড্যাঙা ড্যাং ড্যাং আমার। আমার এই সপ্তাহে পড়া সেরা লেখা এইটা। আচ্ছা আপনিই আরেকটা লেখা লিখেছিলেন “ছেলেবেলার” কাছে? লিঙ্কু দিয়েন তাহলে প্লিজ।। ওইটাও আমার খুব ভাল লেগেছিল 🙂 এই লেখাটা নিজের কাছে বাক্সবন্দি করে রাখবো। অনেক যত্ন করে—
আমি ঠিক কী বলবো বুঝে উঠতে পারছি না।
আপনার মত একজন গুণী মানুষ আমার লেখা অনেক যত্ন করে বাক্সবন্দী করে রাখবে এটা আমার জন্য অনেক বড় পাওয়া! ধন্যবাদ জানানোর ভাষা আমার নেই।
ছেলেবেলা নিয়ে এটাই আমার প্রথম লেখা। তবে আমি অনুমান করতে পারছি, ছেলেবেলার কাছে বলতে বোধহয় আপনি ব্লগার নিস্তব্ধ শৈশবের ইতি, ছেলেবেলা… পোস্টটির কথা বলছেন।
আমারও অনেক প্রিয় পোস্ট এটা। 🙂
থ্যাঙ্কুউউউউউউ 🙂
অসাধারণ লেখা 🙂
বাপ্পি ভাইয়া-র মতন বলি, “ফিনিক্স রিটারনস” 😀
তাহলে আমার উত্তর হবে-
“ইট’স অলওয়েজ ওয়ান্ডারফুল টু বি ব্যাক” 😀
ওহ আপি, পড়তে পড়তে কত কথা লিখব যে ঠিক করলাম কিন্তু শেষ হতেই সব হারায় ফেললাম। 🙁
তাই বাপ্পি ভাইয়ার মতই বলতে হয়, চার-পাঁচবার পড়ে কমেন্ট করতে হবে।
আর লেখা পুরাই :huzur:
আর একটা কথা, এই ছড়াগুলোর কথা কেন জানি কিছুদিন মাথায় ঘুরছিল, আমার আপুর মেয়েটাকে ছড়াগুলো শুনালেই হাত পা নেড়ে যে কি দারুণ ভঙ্গি করে, অদ্ভুত মজা লাগে।এই লেখাগুলো আজকাল কোথায়??বইগুলোতে পাইনা কেন??সবাই কি অনেক বড় হয়ে গেছে??আমি কিন্তু ছোটই থাকব…… :yahooo:
“বছরের শুরুতেই তুই নিশ্চয়ই আমার মত নতুন বই কিনে বুক ভরে তার ঘ্রাণ নিস না? আমার মত বাংলা বইটা খুলে সবার আগে গল্প-কবিতাগুলো পড়ে শেষ করে ফেলিস না?” :love: একেবারে মিলে গেছে
সত্যিই মিলে গেছে নাকি? তাহলে তোমায় চিমটি কাটি! :beerdrink:
সবাই বড় হলেও নিজের ছোট থাকতে নিষেধ কোথায়?
বড়দের বইগুলোর পাশাপাশি ছোটদের বইগুলো কিনলেই হয়, মাঝে মাঝে মীনা আর সিসিমপুর দেখলেই হয়!
আমার কাছে কিন্তু ছোটবেলার ‘আমার বই’এর পুরো সেট আছে। :happy:
পিচ্চিগুলোর কথা শুনতে এত ভালো লাগে। আমি তো ফোনে প্রায়ই আমার পিচ্চি কাজিনের কথা শুনি। ওর ছড়াগুলো শুনি।
“দনি, দনি, ইয়েত পাপা
ইতিং সুগাল?
নো পাপা
তেলিং লাইত?
নো পাপা
ওপেন ইয়োল মাউত
হাআআআহ হাআআআহ হাআআআহ”>> ও ঠিক এইভাবে বলে। 😀
আরও চার-পাঁচবার পড়লে চিঠি পানসে হয়ে যাবে না? :thinking:
কখনোই না……পানসে হবার মতো চিঠিই না এটা। বরং ভবিষ্যতে এটা একটা দলিল হিসেবেও দরকার পড়তে পারে। :clappinghands:
খাইছে! তাহলে তো এই দলিল বিক্রি করে ব্যাপক টাকা-পয়সা পাওয়া যাবে বলে মনে হচ্ছে! 😛
প্রশ্ন হল, কে কিনবে এমন দলিল? :thinking:
:callme: 😛
কোথায় গিয়ে খুঁজবো? নদীর স্রোতের কাছে? স্রোতের নাম্বারটা যে জানি না! 😛
😛
ইশ পড়তে পড়তে ছোট বেলা কাছে চলে আসল! আমিও সবচেয়ে প্রথমে পড়ে শেষ করতাম ‘আমার বই’ আর ‘চয়নিকা’, এতদিন পরে আবার ছড়াগুলি পড়তে পড়তে মন ভালো হয়ে গেল খুব ।
মনে পড়েছে! ‘চয়নিকা’ও ছিল। কিন্তু ওটা তো ক্লাস ওয়ান থেকেই ছিল না। আরও পরের বই ওটা।
মন ভালো করাতে পেরে আমারও খুব ভালো লাগছে আপি। 😐
সেইরকম জোশিলা লেখা!! জোস :yahooo:
নিজের ওয়ান-টু সময়ের কথা মনে পড়ে গেলো :guiter:
সবচাইতে মজা পাইসি ট্যাগগুলো দেখে, সারা দুনিয়াকে ত্যাগ করা হয়েছে এই লেখাতে :happy:
ট্যাগ করা হয়েছে* [টাইপো] 🙁
আমার যে কত কত টাইপো হয়।
মনে হয়, হাজারে হাজারে। 🙁
আমার তো স্কুলের স্মৃতি প্রায় সবসময় মনে পড়ে। :penguindance:
ট্যাগ শেষ করার পর বুঝতে পারলাম পাকা গিন্নির মত পুরো বাজারের ফর্দ তৈরি করে ফেলেছি! 😛
Jeno purono dine fire gelam. Time travel kore ghure elam shei chotobelar shomoye. Mon valo hoye gelo. :happy:
Hats off emon ekta post dear jonno. :huzur:
অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে পোস্টটি পড়ার জন্য। 🙂
অ-সা-ধা-র-ণ!!!
কতটা অন্যভাবেই ভেবেছিস!
ছোট্টবেলার কবিতাগুলো সব মনে পড়ে গেলো…… 😀
সবগুলোই মনে পড়েছে? 😛
আমি পড়া ধরলে পারবি? 😛
কী বলবো ভেবেই পাচ্ছি না, শুধু বলি- ফিরিয়ে নিয়ে গেছো ছেলেবেলায়……
:love: :love: :love: :love: :love: :love:
তাই নাকি আপি? :happy: :happy: :love: :love:
অনেক ভাল লাগল আপু 🙂 সেই ছোট বেলার কথা মনে পড়ে গেল। 🙂 তবে ট্যাগের লিস্ট দেখে ভয় পাইছি।
ভয় পাইয়ে দিলাম বুঝি? বড় আপু ভয় পেয়েছে, ভয় পেয়েছে! 😛
এত অসাধারণ একটা লেখা লিখছো! আমি তাই ভাবলাম, তুমি এত কম লেখো আর প্রতিটা লেখাই উড়াধুরা টাইপ হয়। প্রথমবার চোখ বুলানোর সময় এতটা যে ভাল সেটা বুঝি নাই।
এত্ত অদ্ভুত সব নাম কোথা থেকে পাও? 😛 হাহাহা। আমার তো সারাদিন ধরে ভাবলেও এইসব নাম মাথায় আসবে না!
তোমার হুকোমুখো হ্যাংলার তোমার মত গুণী রূপকথাকে পেয়ে কত গর্ব হবে চিন্তা করতেছি। 😀
তোদের সবার তুলনায় একটু কম-ই লিখি। তার কারণ তোদের মত আমার ব্রেইন এত ইনোভেটিভ না। আমার হল অলস মস্তিষ্ক। কাজের কথা মনে কম আসে। 🙁
আমার লেখা উড়াধুরা টাইপ! এটা কি প্রশংসা নাকি খোঁচানি ছিল রে? :thinking:
আমার অবশ্য শব্দটা পছন্দের। কারণ ভবঘুরে ঘরছাড়া ধরণের একটা গন্ধ আছে শব্দটায়। :love:
‘হুকোমুখো হ্যাংলা’ নামটা সুকুমার রায়ের দেয়া। আর ‘নাক ড্যাঙা ড্যাং ড্যাং’ এর সত্ত্ব নজরুলের। 😛
গর্ব হবে বলছিস? আমি কি গর্ব করার মত কোন সম্পদ? 😯
আমার তো সন্দেহ হয়। পচা বেগুনের জন্য বেগুন প্রজাতি জীবনে গর্ব করে বলে শুনেছিস কখনো? :thinking:
অবশ্যই খোঁচানি ছিল! তুমি বোঝো নাই? 😛
বলো কী! আমি আরও এইসব নাম দেখে তোমার কল্পনাশক্তির প্রশংসা করতেছি মনে মনে। (এমনিতেও কম না অবশ্য!)
এইটা তোমার ঢং! এইরকম ঢং দেখলে সত্যি সত্যি মেজাজ খারাপ হয় আমার। :haturi:
খোঁচানি বোঝার মত বুদ্ধি যে আমার মাথায় নাই, কেমনে বুঝবো? 😛
আমি ভাবলাম তুই বোধহয় অনেক ভালোবাসা নিয়ে কথাটা বলছিস! :love:
হ্যাঁ, কল্পনায় বিয়ের আগেই নিজের পিচ্চিটার সাথে কথা বলে ফেললাম! তাহলেই বুঝে নে। 😐
তাই নাকি? তাহলে তো এইরকম ঢং তোর সামনেই করতে হবে। তোর মেজাজ খারাপ হলে তোকে দেখতে কেমন দেখায় সেটা যে আমার জানতে ভীষণ ইচ্ছে করছে! 😛
ভালো কথা, তুই কি সত্যি সত্যি মেজাজ খারাপ করতে পারিস? আমার তো বিশ্বাস হয় না! 😳
আমাকে প্রথম দেখে যা যা মনে হয় তার প্রায় সবই ভুল। তার মধ্যে এটাও একটা। আমি এভারেজ মানুষের চেয়ে বেশি রাগি আর আমার রাগ খুবই বিশ্রী। দুঃখ একটা আমার! 🙁
ইনশাআল্লাহ সব ঠিক হয়ে যাবে।
কবে নাগাদ ঠিক হবে জানি না তবে মা হলে (সত্যি বলছি, দুষ্টুমি না কিন্তু) অনেক ধৈর্য বাড়ে মেয়েদের, বাড়াতে হয়, সৃষ্টিকর্তা প্রদত্ত গুণ এটা।
তাই এখনি খুব চিন্তার কিছু নেই। :beshikhushi:
দারুণ! নস্টালজিয়া।
আমার তো কেবল একটা কথা মনে আছে,
“মনা রে মনা, কোথায় যাস, বিলের ধারে, কাটব ঘাস…” 🙂
কবিতার নামটা যতদূর মনে পড়ে ‘ইচ্ছে’ ছিল।
কিন্তু ওটা ক্লাস ওয়ানে ছিল না ভাইয়া। 😛
এই পোস্টে আপাতত ক্লাস ওয়ানেরগুলোই দিয়েছি।
সময় পেলে ধাপে ধাপে পরের ক্লাসগুলো থেকে কবিতা সংগ্রহ করে পোস্ট দেয়ার ইচ্ছে আছে। 🙂
ওয়াও- জটিল …….
হা হা। তাই নাকি? :penguindance:
অন্যরকম, অন্যস্বাদের, অছাম স্বাদের………
ধন্যবাদ, ধন্যবাদ। 🙂
এত আবেগ ভরা লিখা পড়ে হারিয়ে গেলাম, কেঁদে দিলাম, আবার এত মজার লিখা পড়ে কাঁদছি কেন সেটা ভেবে হেসে দিলাম, এককথায় পাগল করা চিঠি।
আমি আপনার মন্তব্যে উত্তর ঠিক কীভাবে দেব বুঝে উঠতে পারছি না!
লেখাগুলো আপনাকে ছুঁয়ে গেছে এটা সত্যিই আমার অনেক বড় এক পাওয়া।
আপনার মন্তব্যটাও আমাকে সেভাবেই ছুঁয়ে গেল! :beshikhushi:
একটা কথা-
আচ্ছা, আপনার নামের মানেটা কি? একটু কৌতুহল হল দেখে। 😛
অসাধারণ :love: :love: :love: :love: :love: :love: :love:
একটা মানুষ এত সুন্দর করে ভাবে কি ভাবে ?
ছড়াগুলো আবার মনে করিয়ে দেওয়ার জন্য ধন্যবাদ। :love:
নাহ, পিচ্চিগুলো আজকাল সব ফরমালিটি শিখে গেছে দেখছি!
আবার ধন্যবাদও দেয়! 🙁
আমি কোনও ফরমালিটি করি নাই । 😛
একটু বড় ভাব নিয়ে ধন্যবাদ দিলাম আর তুমি সেইটাকে এই ভাবে নিলা
বড়ই কষ্ট পেলাম :crying:
আর আমি পিচ্চি না। 😛 😛
তুই কষ্ট পেলে আমার খারাপ লাগবে কিন্তু এখন! 🙁
তুই তো আমার কাছে পিচ্চি-ই! :love:
আপন মানুষদের ধন্যবাদ দিতে হয় না, শিখে রাখ। 😛
হুম শিখলাম আর দিব না।
:love: :love: :love:
গুড। :love: :love: :love: :happy:
এই লেখাটার সাথে আমার একটা আচরণের মিল আছে। 🙂
কোনটা ভাইয়া?
ছোটবেলায় বই কিনে সবার আগে গল্প-কবিতাগুলো পড়ে ফেলা, এইটা? 🙂
ওয়েল, মানে আমি আমার বাচ্চাদুটোর জন্য ডায়রী লিখি গোপনে। ওরা বড় হলে একদিন হয়তো হঠাত করে পেয়ে যাবে! কিংবা ওদের বিয়ের দিন উপহার দেবো ওদের জন্মের আগ থেকে ঐ দিন পর্যন্তের নানা ঘটনা। 🙂
বাহ, ভালো তো!
আপনার সাথে আমার পার্থক্য হল, আমার চিঠি ডিজিটাল আর আপনারটা এনালগ! 😛
জি না। আমারটাও ডিজিটাল এবং ছবি ও ভিডিও সহ। 😉
ওহ, তাহলে তো ভাইয়া দেখা যাচ্ছে, আমাদের ভাই-বোনে বিশেষ মিল! 😛
কথায় আছে না, ওয়াইজ ম্যান (উইম্যান) থিংক্ এলাইক। :p
আমার একটা প্রিয় ছড়াগান ছিল, ক্লাস ফোরে থাকতে গান শিখতাম!! ( :voypaisi: )
ওখানে শিখেছিলাম!
আজব দেশের ধন্য রাজা,
দেশ জোড়া তার নাম,
বসলে বলেন-চলরে তোরা,
চললে বলেন -থাম!
থাম! থাম!! থাম!!!
আমার প্রিয়তম বিষয়গুলোর একটা নিয়ে অসাধারণ একটা লেখা… শৈশবে টেনে নিয়ে গেল আমাকে আবার!
(নস্টালজিক কোনো এমো নাই কেন? :nono: )
:dhisya:
তুই তো তাও ক্লাস ফোরে শিখতি।
আমার গান ভাগ্য আরও অল্প সময়ের।
৩-৪ বছর থেকে শুরু করে মাত্র ক্লাস ওয়ান পর্যন্ত! 🙁
‘আজব দেশের ধন্য রাজা’ গানটা আমারও ভীষণ প্রিয়!
পিচ্চিকালের গান। 😛
একদিন আমাকে এই গানটা গেয়ে শোনাস তো। 🙂
আমি গাইলে আপনার বাসা খালি হয়ে যাবে…
তারপর…
বইগুলা আর হার্ডডিস্কটা… 8)
আপনিও শুনেছেন?? চমৎকার গান না?
:love: ইদানিং দেন যে আর এইসব গান পাইনা… 🙁
আমি গান গেয়েও যখন এতদিনে আমার বাসা খালি করতে পারি নাই, তখন আর তোর গান শুনে হবে না। নিশ্চিত থাকতে পারিস! 😛
সত্যি এখন আর এমন সুন্দর ছড়াগান হয় না কেন? :crying:
ওহ, তাহলে মনে হয় বান্দরের কান মুঠোফোনে ছিল! 😛
আপনি লিখে দেন! আমি অপেক্ষা খাইতে বসব ইফতারের পরে! 8)
আপনার লেখাটা অফলাইনে থেকে বহুদিন আগেই পড়েছিলাম। অনেক ভাল লেগেছে আবার পড়তে।
এমন গল্প কি আর চলে না দু’জনের মাঝে? তাহলে আমরা পাচ্ছি না কেন?
খুব শীঘ্রই এমন গল্প আবার দিয়ে দেব ইনশাআল্লাহ, সেরকমই ইচ্ছে আছে আপু। 😀
অপেক্ষায় রইলাম 🙂
😐
:beshikhushi:
:clappinghands: :clappinghands: :clappinghands: :clappinghands: :clappinghands: :clappinghands: :clappinghands:
:beshikhushi: :beshikhushi: :beshikhushi: :beshikhushi: