কদিন ধরে খুব ইচ্ছে করছে ফিরে যাই হারানো শৈশবে । নিজের চারপাশ যখন শুধু সুন্দর হয়ে দেখা দিত সেই সময়টা এখন আবার ফিরে চাইলেই পাব না । আমাদের ভুলে যাওয়া দিন চলেই গেছে শুধু রয়ে গেছে সেই দিনগুলোর টুকরো সুখের স্মৃতি ।
আজ বন্ধুদের সাথে শেয়ার করবো আমার একান্ত শৈশবের কিছু ছবি । তার আগে কিছু কথা বলে নেই । কম কথা তো নয় প্রায় পচিশ বছর আগেকার কথা ।
আমি পরিবারের বড় সন্তান । আমাদের দেশের বাড়ি পিরোজপুর জেলায় । কর্মসূত্রে আমার নানা তখন বরিশালে থাকতেন । আর যেহেতু আগেকার রেওয়াজ অনুযায়ী সন্তানের জন্মের ব্যাপারটা মেয়ের বাবার বাড়িতেই হত, তাই আমার জন্ম হয় বরিশালে । অথচ বড়ই অদ্ভুত ব্যাপার বরিশালের কিছুই আমার স্মৃতিতে নেই কেননা আমার জন্মের কিছু দিন পরেই আমার নানা বদলি হয়ে যান সেখান থেকে । ফলে আবারো আমার নানা তার পরিবার পিরোজপুরে রেখে আসেন ।
আমার জন্মের কিছুদিন পরে বাবা চাকরি পেলেন । যত দূর জানি সাত দিনের মাথায় । তখন কেবল নতুন সংসার গুছিয়ে নেয়া । ক্যামেরা কেনবার কথা কারো মাথাতেই আসেনি । তবে শখ কিন্তু কারোই কম ছিল না । আশপাশ থেকে চেয়ে চিন্তে ছবি ঠিকউ তোলা হয়েছে । তবে কিছু কম বৈকি ।
আর কথা না বাড়িয়ে ছবি দেই ।
আমার মাস ছয়েক বয়সের ছবি । ভাল করে খেয়াল করলে দেখা যাবে এটা স্টুডিও তে তোলা ।
এই ছবিটা তোলবার সময় আমি হাটতে পারতাম না । কিন্তু এর পরের ছবিটা দেখুন ।
এক বছর বয়সের কাছাকাছি সময়ে তোলা । আমি হাটতে শিখছি কেবল । ধরে ধরে হাটার চেষ্টা ।
আমার ছবি আরো আছে তবে তা আগামীতে দেব আশা রাখি । এবারে আমার বোন । আমার বোন আমার বছর পাচের ছোট । তার জন্ম ঢাকার হলি ফ্যামেলিতে । এর জন্মের দু সপ্তাহ পরের ছবিই আমাদের কাছে আছে ।
আমার বোন দু সপ্তাহ বয়সে ।
আমাদের পরিবারে স্টুডিও বিষয়ে এক অদ্ভুত ফ্যাসিনেশন কাজ করত । তাই আমাদের প্রায় সব ভাইবোনকে স্টুডিওতে সাজিয়ে গুজিয়ে নিয়ে ছবি তোলানো হত । আমার বোনের তাই করা হয়েছে ।
]
আমার বোন সানগ্লাস পরে আছে । পুরাই পাঙ্খা
আমার বোনের আরো কটা ছবি
দু বছরের জন্মদিন এ
খেলনা সহ বসে থাকা অবস্থায় ।
এতক্ষণ অনেক গুলো ছবি দেয়া হল একা একা তোলা । এবারে আমরা দুজনে
আমরা দুজনে
আমার বোনের সাত আট মাসের ছোট আমার মামাত ভাই নিলয় । তার কিছু ছবি আমাদের কাছে আছে । জন্মের পরে সে ছিল তুমুল ফর্সা । এত বেশি ফর্সা ছেলে আমার ছোটবেলায় আমি খুব বেশি দেখিনি । তাই আমাদের পরিবারে এর ছবি খুব তোলা হত ।
নিলয়
আমাদের পরিবারের আরেক জন জ্ঞানী ব্যক্তি নাউমি । জন্মের পর থেকেই কেমন অন্যরকম তার মানসিক পরিপক্কতা । একটা দশ বছরের বাচ্চার কোন লক্ষণ তার মধ্যে নেই । সে ইতিমধ্যে হাজার বছর ধরে, পদ্মা নদীর মাঝি পড়ে ফেলেছে ! অথচ ক্লাস থ্রিতে পড়ে সে ।
হাসিমুখে নাউমি
আমার বছর দুয়েক এর বড় আরেকজন কাজিন । যার একটি সুন্দর স্টুডিও ছবি আমার কাছে আছে । এই ছবিটি বছর খানেক আগে তার জন্য সত্য হয়ে ধরা দিয়েছে ।
কনের সাজে আমার কাজিন মিষ্টি
এবারে একটা মজার ছবি । পাঠক বলুনতো এইটা কে ?
নিলয়কে মেয়েদের জামা পড়িয়ে ছবি টা তোলা হয়েছিল । খুব ভাল এসছে । এই একটা ছবিই কিছুটা এডিট করলাম ।
আশা রাখি পোস্ট ভাল লাগল । সবশেষে একটা গান হয়ে যাক । ইন্দ্রানী সেনের কণ্ঠে দিনগুলি মোর ।
সবাই ভাল থাকুন । আর আমার জন্য দোয়া এবং আশীর্বাদ রাখবেন, আমি যেন শিশুই রয়ে যেতে পারি ।
পিচ্চিপাচ্চার ছবি দেখতে সবসময় ভালোবাসি। এবারেরো তার ব্যতিক্রম হলো না। 🙂
পিচ্চিকালে সব মেয়েদেরই বোধহয় বউ সাজে একটা ছবি থাকেই থাকে। আমারও আছে। তবে আমারটা অবশ্য ব্যতিক্রম। যেমন খুশি তেমন সাজোতে বউ সেজেছিলাম যখন আমারটা তখন তোলা। কিন্তু বউ সেজে শুধুমাত্র ছবি তোলার জন্য পোজ এখন পর্যন্ত দেয়া হয় নি। কতগুলো বসন্ত পেরিয়ে গেল। আফসোস! 😛
আমার নাই। 😛 আমাদের দুই বোনের কারোরই নাই। এখন কী হবে বলো তো! আফসোসের ওপর আফসোস। 🙁
আর দু এক কিংবা বেশ কয়েকটা বসন্ত গেলে যখন বউ সা্জটা সত্যিকারে দিতে হবে, তখন আর আপচুচ থাকবে না
হা হা
ফেলে আসা ছেলেবেলা, কেন এতো মায়া লাগে বলতে পারবো না! পিচ্চি পিচ্চি এই আমরাই, কী অসাধারণ লাগে!! :babymonkey:
সত্যই অসাধারণ লাগে। এইটুকু ছোট বাচ্চাগুলো
এখন কত বড় বড়। মিস্টির বিয়ে হয়ে গেছে, আমি ইন্জি: পাশ করে গেছি, নিলয় ইন্জি পড়তে শুরু করেছে, মুনিয়া ডাক্তারি পড়তে শুরু করেছে আর নাউমি এবার পি এস সি দেবে
হা হা হা
খুব প্রিয় একটা উক্তি মনে পড়ে গেলো……
“বড়ো হয়ে যাওয়া নাকি একটা অভিশাপ……”
ছোট বেলায় খেলতে গিয়ে দেরি করে ফিরলে বকা ঝকা চড় খেলে মনে হয়
আমি আর কবে বড় হব ?
🙁 🙁
আমাদের রঙিন পিচ্চিকালগুলো।
আমিও একটা পোস্ট দিয়েছিলাম এক সময় বড় হতে চাই না বলে 😛
বড় তো হয়েই গেছ, বিয়ের বয়স চলে এসেছে :love:
:happy: :happy:
আর কদিন পরে হয়ে যাবে বাবা।
আমার বই এর বাবা কবিতাটা পড়েছ ?
😛
:love:
ধন্যবাদ
আজব কাজ করলেন দেখছি। এ মহাশয়দের বর্তমান চিত্র দিলে আরো মজা পেতাম। 🙂
তবে, তখনকার দিনে ক্যামেরার যে আবেদন ছিল,আজকাল তা আর নেই। 🙁
এখন এরা পূর্ণ বয়স্ক যুবক যুবতী (একজন বাদে)। এদের ছবি দেবার আগে আমাকে প্রত্যেকের অনুমতি নিতে হবে।
তবে এরা কত বড় সেটা জানানো যেতে পারে
মিস্টির বিয়ে হয়ে গেছে, আমি ইন্জি: পাশ করে গেছি, নিলয় ইন্জি পড়তে শুরু করেছে, মুনিয়া ডাক্তারি পড়তে শুরু করেছে আর নাউমি এবার পি এস সি দেবে
ভাল পেলুম! 😀
শুভকামনা জানবেন