আজ ৪ জুলাই! ঈশ্বর কণা দিবস!

আকাশে বাতাসে কেবল গুঞ্জন, “ঈশ্বর কণার আবিষ্কার হয়েছে”। নানান বিজ্ঞান বিতর্ক, কল্পকাহিনী ,চলচিত্র কোথায় কথা হয় নি এ কণার? আর, যারা কটকটে মগজে কণা-পদার্থবিদ্যার মোটা মোটা বই আর খিটমিটে তত্ত্বগুলো নিয়ে পড়াশুনা করেন তাদের তো কথাই নেই। গত ২২জুন’২০১২ সার্ন ঘোষনা করে যে তারা তাদের গবেষণার  নতুন তথ্য জানাতে আজ ৪ জুলাই একটা প্রেস কনফারেন্স করবেন। সাথে সাথে গুজব রটে যায়, এই বুঝি নিশ্চিতভাবে আবিষ্কৃত হলো “ঈশ্বর কণা”।
সারা বিশ্বের বিজ্ঞানীরা রক্তে নতুনি উন্মাদনা টের পেলেন। তার মধ্যে আবার গতকাল সার্নের লীক হওয়া এক ডকুমেন্টারীতে একজন গবেষক দাবী করে বসলেন, যে তারা নতুন ধরনের কণার অস্তিত্ব পেয়েছেন।

তরূণ বিজ্ঞানীরা (বয়সে হতে হবে এমন কোন কথা নেই) চরম ভাবে উত্তেজিত হয়ে পড়লেন। ব্লগে ব্লগে চলতে লাগলো উৎসব। আর বাস্তব জগতে কি ঘটতে লাগলো তা তো বর্ণনাতীত। হবেই না বা কেন? গতিশীল বিজ্ঞানের এই যুগে এ কণার আবিষ্কারের জন্য যে থমকে আছে কণা-পদার্থবিদ্যা সেই্ ৬০টি বছর ধরে। এই লাজুক “ঈশ্বর কণা”-র ব্যপারে কিছু লিখব আশা করে লেখাটি শুরু করলাম। আশা করি ভাল লাগবে।

দুটি কণার সংঘর্ষের ছবি। ছবিটি সার্নের কম্পেক্ট মিওয়ন সলিনয়েড(CMS) নামক প্রকল্প থেকে নেয়া হয়েছে। এ প্রকল্পটি সহ দুটি প্রকল্পের গবেষণা লব্ধ ফলাফল থেকে ঈশ্বর কণা আবিষ্কারের গবেষণা চালানো হয়েছে।

 

খুব বেশী পুরনো নয়

সকল পদার্থই পরমাণু দিয়ে তৈরী। এ আবিষ্কার খুব বেশী আগের নয়। ১৮০৫ সালে জন ডাল্টন বিভিন্ন রাসায়নিক বিক্রিয়ায় ভরের নিত্যতা বা অপরিবর্তন শীলতা তত্ত্ব এবং সমানুপাতিক তত্ত্ব ব্যাখ্যা করেন, পদার্থের একটা অবিভাজ্য সত্ত্বার ধারনা দিয়ে। নাম দিলেন তার এটম/পরমাণু। তদকালীন পরীক্ষণ নির্ভর বিজ্ঞান গবেষণায় এর কোন ধরনের প্রমাণ ছিল না। এর প্রায় একশ বছর পর, “পানির মধ্যে পরাগরেণুর কম্পন” ((যার নাম ‘ব্রাউনিয়ান গতি’))-কে বিজ্ঞানী আইনস্টাইন ব্যাখ্যা করেন ডাল্টনের পরমাণু তত্ত্ব দিয়ে। এর পরে প্রতিষ্ঠিত হয় পরমাণুর অস্তিত্ব।

তারপর একে একে ইলেক্ট্রন আর নিউক্লিয়াসে ভাগ হয় পরমাণু। নিউক্লিয়াস ভাগ হয় প্রোটন আর নিউট্রনে।
কণাদের এই অবস্থানথেকে সম্মানজনক দুরত্ব বজায় রেখে বেড়ে উঠতে থাকে শক্তি বা বল বিষয়ক জ্ঞান। প্রতিষ্ঠিত হয় চার ধরনের মৌলিক বল। ((১. মহাকর্ষীয় বল: পৃথিবী আমাদের টানে, সূর্য টানে পৃথিবীকে। সব বস্তুই সব বস্তুকে টানে যে বল দিয়ে।
২. তড়িৎ চৌম্বক বল: চুম্বক আর বিদ্যুৎ বল, দুজনই একই বলের দুই রূপ। ফ্যানের ঘুর্ণনে এই দুটি রূপই একসাথে দেখা যায়।
৩. নিউক্লিয় সবল বল: এ বলই ধরে রাখে পরমাণুর ভেতরকার গঠন। প্রোটন-নিউট্রন একসাথে জোট বেঁধে থাকে এ বলের কারণে।
৪. নিউক্লিয় দুর্বল বল: এ বল দেখা যায় জ্বলজ্বল করা রেডিয়ামে। পরমাণুর নিউক্লিয়াস থেকে নানান শক্তি কণা টিকরে বরোয়। ))

শুরু হলো নতুন গল্প

 

কিন্তু বিজ্ঞান যতই এগুতে লাগলো, দেখা গেল এই ইলেক্ট্রন, প্রোটন, নিউট্রন একটার সাথে একটা সম্পর্ক যুক্ত। বিজ্ঞানীরা আরো চিন্তিত হলেন, ভরহীন আলোর কণা “ফোটন” নিয়ে। এই কণার ধর্ম আর গুণ নিয়ে চললো বিশাল গবেষণা। অন্যদিকে, বিজ্ঞানীদের গাণিতিক গবেষণায় সম্ভাবনা দেখা দিল প্রতিটা কণার প্রতি-কণিকা (( ভর ও ঘূর্ণন একই কিন্তু চার্জ বিপরীত, একটা ধনাত্বক আরেকটা ঋণাত্বক )) থাকার। আর, তার কিছুদিন পরেই, আবিষ্কৃত হলো ইলেক্ট্রনের প্রতিকণা পজিট্রন।

ক্রমে, মহাকাশীয় রশ্মি গবেষণায়, অস্তিত্ব পাওয়া গেল আরো কিছু নতুন ধরনের কণিকার। বিজ্ঞানীরা গবেষণা চালাতে চালাতে পেয়ে গেলেন সেই একই কণিকাগুলো একেবারে পরমাণুর নিউক্লিয়াসের মাঝখানে। স্বল্পায়ু এ কণাগুলোর নাম দেয়া হলো অতি-পারমাণবিক কণিকা। ((সাব এটমিক পার্টিকল)) দেখা গেল আমাদের প্রিয় নিউট্রন আর প্রোটন ভাঙ্গলেই পাওয়া যায় কিছু অতি-পারমাণবিক কণিকা। নাম তাদের কোয়ার্ক।

এভাবে আবিষ্কৃত কণিকার সংখ্যা দিনে দিনে বাড়তে লাগলো। বিজ্ঞানীরা ধারনা করতে লাগলেন, হতে পারে এসব কণিকা হয়তো অল্প কিছু কণিকারই ভিন্ন ভিন্ন নাম। তাদেরকে চাইলেই একটা টেবিলে সাজানো যায়। ধর্ম হিসাবে হাতে রাখলেন, ভর, চার্জ, আর ঘূর্ণন।

মৌলিক কণিকার স্ট্যান্ডার্ড মডেল। ভরের মূল কণিকা হিগস বোসনকে আলাদা করে দেখানো।

 

এলো স্ট্যান্ডার্ড মডেল

স্ট্যান্ডার্ড মডেল সকল মৌলিক কণিকাকে একসাথ করে একটা টেবিলে সাজানো। ((মূলত মৌলিক বলগুলোর একিভূতকরণ প্রক্রিয়ার অংশ হিসাবে ১৯৬০ এর দশকে অনেক বিজ্ঞানীর গবেষণার ফলশ্রুতি এই মডেল))
দুটি প্রধান ভাগ ফার্মিয়ন ((ফার্মিয়নের সংখ্যা ১২টি, মূলত এগুলোই জানা কণিকা গুলো, ভরযুক্ত। যদিও এর মধ্যে অনেকগুলো কেবল গাণিতিকভাবেই প্রমাণিত ছিল। পরবর্তীতে ২০০০ সালের মধ্যেই এর সবগুলোর অস্তিত্ব পরীক্ষাগারে প্রমাণ করা সম্ভব হয়। )) আর গজ-বোসন ((৪টি; এরা বল বাহক কণিকা। স্ট্যান্ডার্ড মডেল দেবার সময় এর মাত্র “ফোটন” কণিকাই আবিষ্কৃত ছিল।))

ফার্মিয়নগুলোর মধ্যে ৬টি হলো কোয়ার্ক, যেগুলো সাধারণত নিউক্লিয়াসের কেন্দ্রে পাওয়া যায়। ((যেমন: প্রোটন আর নিউট্রন প্রত্যেকটিই তিনটি করে কোয়ার্কের তৈরী))
আর নীচের ৬টি লেপটন, সাধারণত নিউক্লিয়াসের বাইরে বাইরে থাকে। (( কারণ, নিউক্লিয়-সবল-বল দ্বারা প্রভাবিত হয় না। যেমন: ইলেক্ট্রন))
আর শক্তিবাহী চারটি গজ-বোসনগুলোর (( বোসন নামটির পেছনে আছেন বাঙ্গালী সত্যেন বোস। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ছিলেন। এবং বিজ্ঞানী
আইস্টাইনের সাথে গবেষণা করে বোসন কণার গাণিতিক ব্যাখ্যা দেন। তার কাজের প্রতি সম্মান দেখিয়ে এই পূর্ণঘূর্ণন বিশিষ্ট কণাকে নাম দেয়া হয়, বোসন কণা। )) মধ্যে ভরহীন ফোটন তাড়িৎচৌম্বক বল বহন করে। ভরহীন গ্লুওন কাজ করে নিউক্লিয় সবল বলের বাহক হিসাবে। বাকি দুটো বোসন ভরযুক্ত, এরা নিউক্লিয়-দুর্বল-বলের বাহক।

ঈশ্বর কণা এলো কি করে?

স্ট্যান্ডার্ড মডেলের মৌলিক কণিকাগুলোয় ভরের অস্তিত্ব নিয়ে কোন গ্রহণ যোগ্য ব্যাখ্যা ছিল না। বিশেষ করে বল-বাহক কণাগুলোর মধ্যে ভরের অস্তিত্ব ((নিউক্লিয় দুর্বল বলের বহনকারী কণিকা W ও Z বোসন)) বিজ্ঞানীদের ব্যাখ্যাতিত ছিল। কারণ, বল-বাহী কণায় নিজ থেকেই ভরের অস্তিত্ব ধরে নিলে,তা গোল্ডস্টোন বর্ণিত তত্ত্বের “অবিচ্ছিন্ন-প্রতিসাম্যতা নীতি”কে লংঘন করে। এর ফলে বল-বাহী কণাগুলোর কার্যনীতি ব্যাখ্যার গাণিতিক সমীকরণগুলোর গ্রহণযোগ্য সমাধান অর্জন অসম্ভব হয়ে পড়ে। ((আমাদের সরল অংকের মতো।))

বিজ্ঞানী হিগস তখন, একটা অবিচ্ছিন্ন ভর প্রদানকারী মাধ্যমের কল্পনা করলেন। ((১৯৬৪ সালে তিনি এ তত্ত্ব দেন। অনেকটা পুরনো ইথারের মতো। কিন্তু গাণিতিকভাবে প্রমাণিত।)) বলা হলো হিগস-স্পেস।
কিন্তু, স্ট্যান্ডার্ড মডেলের সবকিছুই কণা। তাই এই স্পেসকে মূলত, এক বিশেষ ধরনের কণিকার আধার হিসাবে ধরা হলো।
এই ভর প্রদানকারী কণার নাম দেয়া হয় হিগস-বোসন।তারমানে দাঁড়ালো, হিগস-বোসন হলো এমন কণা, যা অন্য যে কোন কণার সাথে জোট বেঁধে তার মাঝে ভর তৈরী করতে পারে।

হিগস-বোসন থেকে ঈশ্বর কণা

 

প্রস্তাবনার পর দেখা গেল হিগস বোসন কণার অস্তিত্ব প্রমাণ করা প্রায় অস্মভব। কারণ, আলাদাভাবে এই কণার অস্তিত্ব টের পেতে হলে দুটি ভারী কণাকে আলোর কাছাকাছি বেগে প্রায় 4TeV শক্তিতে মুখোমুখি সংঘর্ষ ঘটাতে হবে। বাস্তবে এটা করা অত্যন্ত ব্যয়বহুল। কণা-পদার্থবিদ্যার গবেষকদের কাছে দিনে দিনে এই মহাগুরুত্বপূর্ণ কণাটি খলনায়ক হিসাবে পরিগণিত হতে লাগলো। কারণ, তারা যে গবেষণাই করতে যাচ্ছেন, এ কণাটির অস্তিত্বকে সত্য ধরে নিয়েই করতে হচ্ছে। অথচ, বাস্তবে তা প্রমাণ করা সম্ভব হয় নি। ১৯৬০ সালে গাণিতিকভাবে প্রস্তাবিত এ কণাকে অনেকে মজা করে “গড-ডেম পার্টিকল” বলা আরম্ভ করলেন।

সে সময় বিজ্ঞান জনপ্রিয়করণ প্রকল্পের অংশ হিসেবে এ কণাকে সাধারণ মানুষের কাছে পরিচিত করানো শুরু হয়। কথিত আছে, লেখক লিওন-লেডারম্যান “The God Particle: If the Universe Is the Answer, What Is the Question?” বইয়ের নামের মধ্যে  হিগস-বোসন কণাকে Goddamn Particle হিসাবেই পরিচিত করাতে চেয়েছিলেন। কিন্তু, প্রকাশক ওই নামের ঋণাত্বকতার দিকটা বাদ দিয়ে একে “গড পার্টিকল” বা “ঈশ্বর কণা” নাম দিয়ে দেন। বিখ্যাত হয়ে যায় এ রহস্যময় কণাটি।
আর সাথে সাথে নিরলস পরিশ্রম করতে থাকেন বিজ্ঞানীরা। বিশ্বজুড়ে নানান কণা-ত্বারক তৈরী করে গবেষণা চলতে থাকে। আবিষ্কৃত হয় বাকি সব মৌলিক কণিকা। স্ট্যান্ডার্ড মডেলের পূর্ণতা আটকে থাকে ঐ এক হিগস-বোসনের কাছে। তারপর এলো সার্ন।

শুভ জন্মদিন বলতে আরো ক’টা দিন

বিজ্ঞানীদের নানান প্রচেষ্টার পর ইউরোপের সার্ন ল্যাবরেটরীর ২.৬বিলিয়ন ডলার ব্যায়ে দশ বছর ধরে নির্মিত হয় “লার্জ হ্যাড্রোন কোলাইডার” ((ফ্রান্স-সুইজারল্যান্ড বর্ডারে ১৯৯৮-২০০৮সাল পর্যন্ত কাজ করা হয়ে এটা তৈরীতে। সংক্ষেপে LHC; এতে মূলত অনেকগুলো কণাকে উচ্চ শক্তিতে গতিশীল করে বিপরীত দিক হতে মুখোমুখি সংঘর্ষ ঘটানো হয়। কণা পদার্থবিদ্যার গবেষণায় এটা সবচেয়ে ব্যয়বহুল ও উন্নত প্রকল্প।))। এর পর দীর্ঘদীন পরীক্ষা নিরীক্ষা ও বাস্তব হিসাব-নিকাষ করতে করতে ২০১১ সালের পর থেকে কণা-ত্বারকের সুক্ষতা ধীরে ধীরে হিগস-বোসন কণা আবিষ্কারের সম্ভাবনাকে বাড়িয়ে দেয়।

এরপর প্রতিনিয়ত গবেষণার পর আজ ৪জুলাই সার্নের গবেষকদল ঘোষনা করেন যে তারা ৯৯.৯৯৯% নিশ্চিতভাবে এক নতুন বোসন কণার অস্তিত্ব আবিষ্কার করেছেন। যদিও এটিই সেই প্রতিক্ষিত হিগস-বোসন কণা কি না, তা জানতে হলে আরো বেশ কিছু পরীক্ষা নিরীক্ষা প্রয়োজন। আর এজন্য প্রয়োজন আরো কয়েক বছর গবেষণার।

www.youtube.com/watch?v=ia7Z9H7RM0Q

নিশ্চিত না হলেও বিজ্ঞান-প্রেমী তরুণ-তরুণীরা অতি উৎসাহী হয়ে একেই অতি প্রতিক্ষিত হিগস কণা মনে করতে শুরু করেছেন। কিছুক্ষণ  আগে উইকি সার্চ দিয়ে দেখলাম হিগস কণার পেইজটিতে কণার জন্মদিন ৪জুলাই ‘২০১২ লেখা আছে। ((যদিও এখন তা সরিয়ে ফেলা হয়েছে। তারপরও আশা তো যায় নি। একেবারে জায়গা মতোই পাওয়া গেল যে এই মহাশয়কে! )) এখন থেকে আড়ালে আবড়ালে একে হিগস কণাই বলা হবে সন্দেহ নেই। তারপরও, কাঠখোট্টা বিজ্ঞানীরা বলছেন, ধৈর্য্য ধরে কটা দিন অপেক্ষা করে দেখলেই তো হয়। 😀

অন্য পোস্ট ঃ-

 কোন এক অজানা নক্ষত্রের ফসিল তুমি [অনুবাদ]

জ্ঞানচোর সম্পর্কে

সেই কবে জেগেছিলাম, বিলিয়ন বর্ষী নক্ষত্রের আলোয়, ডিরাকের সমুদ্রের পাড়ে। অবাক কৌতুহল নিয়ে গেলাম বহুদুর। তারপরও সহসা বুঝি, নিজে আমি,নিছক পড়ে থাকা ঝিনুকের খোলসে সোনালী অনুপাত খুঁজে বেড়াই। পড়ে থাকো তুমি, মহা সমুদ্র।
এই লেখাটি পোস্ট করা হয়েছে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি, বিবিধ-এ এবং ট্যাগ হয়েছে , , , , , , , , স্থায়ী লিংক বুকমার্ক করুন।

23 Responses to আজ ৪ জুলাই! ঈশ্বর কণা দিবস!

  1. সামিরা বলেছেনঃ

    এত্ত কঠিন লেখা! 😯 আমার মাথার ওপর দিয়ে যায় এগুলা। 🙁

    • জ্ঞানচোর বলেছেনঃ

      সহজ কথা কইতে মোরে কহ যে,
      সহজ কথা যায় না বলা সহজে।

      বরাবরের মতো ব্যর্থ হলাম। 🙁

      • সামিরা বলেছেনঃ

        আমার তো মনে হয় আপনি সহজ করেই লিখেছেন। আমার এইসব ব্যাপারেই আসলে আগ্রহ কম, এই জন্য ফিজিক্সের কটরমটরগুলিতে চোখ বুলিয়ে গেছি। যাদের আগ্রহ আছে তারা নিশ্চয়ই বুঝতে পারবে আর ভালও লাগবে। 😀

  2. বোহেমিয়ান বলেছেনঃ

    ওয়াও! এত সুন্দর লেখা! দারুণ লাগছে!

  3. শারমিন বলেছেনঃ

    অসাধারণ।

  4. সরল বলেছেনঃ

    হ্যাটস অফ !!!… তবে অনেক কিছুই বুঝিনাই :S

  5. এবিএম বলেছেনঃ

    হিগস বোসন কণা নিয়ে আরেকটু বিস্তারিত লেখা উচিৎ ছিল। বাঙ্গালী বিজ্ঞানী সত্যেন বোস আর বিজ্ঞানী হিগস এর নামানুসারে এই কণার নাম দেয়া হলেও সত্যেন বোসের কথা একবারও বলা হয় নি এই পোস্ট এ……..এ ব্যাপারটা ভালো লাগে নি !

    • জ্ঞানচোর বলেছেনঃ

      আপনাকে সরবে শুভেচ্ছা। ধন্যবাদ লেখাটি পুরোটা পড়ার জন্য।
      আসলে লেখার শুরুতে বোস স্যারের কথা আনার প্ল্যান ছিল।
      (কিছু কথা যুক্ত করে দিলাম ফুটনোটে।)

      লেখার পরিসর বড় হয়ে যাবে ভেবে কোন ধরনের বর্ণনাতেই যাই নি।
      আশা করি স্যারকে নিয়ে আলাদা লেখা দিতে পারবো।

      সাথে থাকবেন প্লিজ। 🙂

  6. মাধবীলতা বলেছেনঃ

    ড্যান ব্রাউন পড়তে গিয়ে CERN এর গবেষণা সম্পর্কে কৌতুহল জেগেছিল। আপনি আবার তাতে জ্বালানি ঢেলে দিলেন। এই বিশেষ কণা সম্পর্কে আজকেই জানলাম, আর নামটাও বেশ মনে ধরে গেল “God damn particle” 😀 । এই পোস্টটা ভালোভাবে আরেকবার পড়ার জন্য রেখে দিলাম। জ্ঞানচোর জ্ঞান বিতরণে সরব থাকুক। শুভকামনা :love:

    • জ্ঞানচোর বলেছেনঃ

      দোকানদাররা লিখে রাখে, বাকি চাহিয়া লজ্জা দিবেন না।
      আর,আমি বলছি, পড়া বাকি রাখিয়া লজ্জা দিবেন না। (সহজ করে লিখতে ব্যর্থ হয়ে খেদোক্তি)

  7. শামসীর বলেছেনঃ

    সুন্দর লেখা!

  8. Antara বলেছেনঃ

    ভালো লেগেছে। তবে কণাকে আমন্ত্রণ জানাতে আরোও কিছুদিন অপেক্ষা করাই বোধ হয় ভালো হবে; বিজ্ঞানের তো চাই অকাট্য প্রমাণ !

  9. সুখী মানুষ বলেছেনঃ

    অসাধারণ লেখা । বাংলা ভাষায় এত সহজ করে কেউ পার্টিকাল ফিজিক্স পড়ায়নি ।

    স্টেন্ডার্ট মডেল সম্পর্কে আর একটু বিস্তারিত বললে ভাল হত । কেন হঠাৎ করে
    এর গুরুত্ব বাড়ল ।

  10. ফিনিক্স বলেছেনঃ

    জন্মদিন তো মিস করেছি। 🙁
    তবে সত্যিটা হল যে এই বিষয়ে আমার আরও একটু পড়াশোনা করা লাগবে।

    বাংলায় অবশ্য দারুণ লাগল বিজ্ঞানের নবযাত্রার এই বর্ননা! 😀

    তবে আপনার এই লেখাটি ফেসবুকে শেয়ার দিতেই একজন এসে মন্তব্য করলেন,

    ‘ঈশ্বর কণা শব্দটা একটা বাজে কথা, রীতিমত অশ্লীল কথা। এই God Particle নামটা কিভাবে আসছে জানো? লিওন-লেডারম্যান এর লেখা “The God Particle: If the Universe Is the Answer, What Is the Question?” বই থেকে নামটা পাইছে পাবলিকে। কোনো পরীক্ষালব্ধ প্রমাণ পাওয়ার আশা ওই সময় ছিলো না, তাই লিওন-লেডারম্যান “The Goddam particle” নাম দিতে চেয়েছিলেন বইটার, কিন্তু খাটাস প্রকাশক নাম পালটে বানায় God-Particle! হিগস বোসন বল শুধু, ওই গদ্দাম(goddam) নামটা বইলো না।’

    (যে তথ্যটি আপনি আপনার পোস্টেই দিয়েছেন)

    কিন্তু আমার প্রশ্ন হল, নাম নিয়ে কি অন্য মহলেও এমন কোন বিতর্ক আছে?
    বিজ্ঞানীদের প্রকৃত নামে ব্যাপারটিকে সম্মানিত করলে ক্ষতি কী?
    বিজ্ঞানে তো সচরাচর এমনটাই ঘটে। আড়ালে-আবডালে হিগস ডাকার দরকারটা কোথায়? 😳

    • জ্ঞানচোর বলেছেনঃ

      আপ্পি, আসলে সাধারণ মানুষের সামনে আকর্ষনীয় করে তোলাই এ নামের লক্ষ্য। যদিও, স্বল্পজ্ঞানী অনেকে এই নামটার মাঝে ঈশ্বরিক ক্ষমতার হাতছানি দেখতে পান। তারপরও, এ কণার আবিষ্কারই কিন্তু কণা-পদার্থবিদ্যার সব প্রশ্নের উত্তর দেবার জন্য যথেষ্ট নয়। ডঃ হকিং তো বলছেন, বিজ্ঞান মূলত নতুন করে প্রশ্নের মুখে পড়ে বেকায়দা অবস্থায় চলে গেল বলে। :crying:

      তারপরও, বিজ্ঞান নিয়ে কাঠখোট্টা তো সবাই না। বরং আমি তো দেখি, এসব বিষয়ের গবেষণা করা মানুষরা বরং অনেক উদার আর মজার।
      তাই আমার মনে হয়, আমার এই নামের ব্যবহার সবার মনে অত অস্বস্তি এনে দেবে না। যাদের মাঝে এনে দেবে তাদের কাছে ক্ষমা প্রার্থী।
      “বিগ ব্যাং থিওরী” দেখলে কিছুটা আঁচ করা যাবে। 😛 😛

      • ফিনিক্স বলেছেনঃ

        সেটাই।
        “বৃক্ষ তোমার নাম কী, ফলেই পরিচয়।” 🙂

        নামের ভেতরে ঈশ্বরিক ক্ষমতা! মানুষ এইগুলাও বিশ্বাস করে নাকি! 😛

  11. নিলয় বলেছেনঃ

    “সহজ কথা যায় না বলা সহজে”

    আমার কাছে কিন্তু মনে হল, সহজ করেই লিখেছেন। অনেক কিছুই জানতাম না- নতুন করে জানলাম 🙂
    এই রকম তথ্যবহুল পরিশ্রমী লেখা পড়লেও অনুপ্রেরণা পাওয়া যায় 🙂

  12. তরঙ্গ বলেছেনঃ

    পোষ্টটা পড়ে অনেক ভালো লাগলো। এতো জটিল বিষয়গুলো সহজ আর সুন্দর করে গুছিয়ে লিখার জন্য আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ। নতুন অনেক কিছু শিখলাম।

    কাকতালীয় ভাবে আজকের দিনটা হিগস-বোসন কণা-র জন্মদিনের সাথে মিলে যায়।
    ৪/৭ আর ৭/৪ :p এজন্য আজকের দিনটাকে বীপরীত ভাবে বোসন-হিগস কণার জন্মদিনও বলা যেতে পারে। 😀

সুখী মানুষ শীর্ষক প্রকাশনায় মন্তব্য করুন জবাব বাতিল

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।