আগামী শুক্রবার বিকেলে দেখা হচ্ছে বন্দর নগরী চট্টগ্রামে!!

অবশেষে ঘড়ির কাটার সাথে পাল্লা দিয়ে সূর্যমামাও কক্ষপথ ধরে তর তর করে এগিয়ে এলো সেই মাহেন্দ্রক্ষণের দিকে যার শুরুটা আমার নিস্তব্ধ জীবনের মোড় ঘুড়িয়ে দিয়েছিলো একেবারেই অন্যদিকে। আমার ভেতরেও যে প্রবল আত্মবিশ্বাসে ভরা আরেক অদ্ভুদ রকমের “আমি” লুকিয়ে ছিল তার সাথে কি আদৌ দেখা হতো এই অনলাইন জগতের সাথে পরিচয় না হলে! ঠিক জানি না… ফেসবুকে একটা গ্রুপ খুলতেই আমার সেকি জল্পনা কল্পনা! ২০০৯ এর জুলাই মাসের কথা বলছি। এরি মধ্যে ফেসবুকের বন্ধুদের এবং নামকরা সব লেখক-সাংবাদিক, সেলিব্রেটিদের খুঁজে বের করে প্রধানমন্ত্রীকে লেখা সেই চিঠিটি ছড়িয়ে দেওয়া শুরু করেছিলাম। সেই চিঠি পড়েই ফেসবুক বন্ধু ওয়াফির পরামর্শ- এভাবে হবে না। তুমি একটা গ্রুপ খুললে একসাথে আরো বেশি মানুষের কাছে পৌছুতে পারবে। ঠিক হলো সে আর আমার ছোট ভাই মুনতাসির এসে শিখিয়ে দেবে কিভাবে ফেসবুকে গ্রুপ ক্রিয়েট করে। বন্ধের দিন শুক্রবার আর শুভ কাজের জন্যে আমার প্রিয় গোধূলীবেলা। প্রথম শুক্রবার তারা এলো না। দ্বিতীয় শুক্রবারেও একি অবস্থা। ওয়াফি সময় দিতে পারে না কাজের ব্যস্ততায় আর আমি মন খারাপ করে মুনতাসিরকে মানা করি আসতে। এই সমস্ত টানাপোড়েনের মাঝেই দেশ টিভিতে কর্মরত গিয়াস ভাই সালমা আপার সন্ধান দিলেন। আরো অনেক-অনেক পরে বুঝতে পেরেছিলাম, সেদিন গিয়াস ভাইয়ের আঙ্গুলের ছোঁয়ায় স্বয়ং আকাশের চাঁদ নেমে এসেছিলো আমার আঙ্গিনায়। যাই হোক শেষমেষ ওয়াফির চাপাচুপিতেই মুনতাসিরকে ডেকে ১৭ই জুলাই’ তৃতীয় শুক্রবার ফেসবুকে গ্রুপটি খুলে ফেললাম “রেইজিং এওয়ারনেস ফর পিপল উইথ ডিজেবিলিটি (আরএপিডি)” নামে। শুরু হলো আমার আর সালমা আপার একি সাথে পথ চলা। কিছুদিন পরেই অবশ্য বাংলাদেশের প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের সহায়ক চাহিদা-ব্যবস্থাগুলো পরিবর্তনের তাগিদে, সংলিষ্ট মহলকে সচেতন করে তুলতে লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য ঠিক করে নাম রাখা হলো বাংলাদেশী সিস্টেমস চেঞ্জ এডভোকেসী নেটওয়ার্ক। নামের প্রথম অক্ষরগুলো নিয়ে সংক্ষেপে বি-স্ক্যা। আবার বি-স্ক্যান শব্দটিরও একটি তাৎপর্য আছে। বি দিয়ে বাংলাদেশ আর স্ক্যান দিয়ে বোঝানো হচ্ছে দেশের সমস্ত অ-সহায়ক ব্যবস্থাগুলোকে চিহ্নিত অথবা স্ক্যান করে দূরীভূত করে। ভবিষতেও আমাদের ক্ষুদ্র সামর্থে যতটুকু সম্ভব এ চেষ্টা অব্যাহত থাকবে……এ সমস্ত নানা কারণেই আমার জীবনে জুলাই মাসের তাৎপর্য অনেক। কালের আবর্তে বছর ঘুরে আবারো এলো ১৭ই জুলাই। এ উপলক্ষ্যে গত ১৩ই জুলাই ঢাকা কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সচেতনতামূলক একটি আয়োজন শেষে আমরা এবার ঠিক করেছি চট্টগ্রামবাসীকেও বঞ্চিত করা হবে না।

আগামী ২০ জুলাই, ২০১২ আমরা আসছি আপনার শহর বন্দর নগরী চট্টগ্রামে!

বি-স্ক্যান এর তৃতীয় বষপূর্তি উপলক্ষ্যে চেরাগী পাহাড় সংলগ্ন ইসলামাবাদী মেমোরিয়াল হলে বেলা ৩:২০ মিনিটে প্রতিবন্ধী ব্যক্তির অধিকার রক্ষায় সচেতনতা সৃষ্টিতে উন্মুক্ত আলোচনা শীর্ষক উন্মুক্ত আলোচনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করছি চুয়েট ডিবেটিং সোসাইটির সহযোগিতায়। এই  সচেতনতামূলক প্রচারণায় শর্ট ফিল্ম, আবৃত্তি, গান, মাইম ইত্যাদি নানান পরিবেশনায় সাজানোর ছোট্ট প্রয়াস শুক্রবারের এই বিকেলটিকে ঘিরে।

উক্ত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন অধ্যাপক জনাব সৈয়দ আহসানুল আলম  (পারভেজ), চেয়ারম্যান, ডিপার্টমেন্ট অফ  মার্কেটিং, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়। এছাড়া বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকছেন নাসরিন বাকী, ফাউন্ডার প্রেসিডেন্ট, নার্চার সেন্টার ফর দ্যা ডিজেবলড এন্ড প্যারালাইজড এবং হাসান আকবর, চিফ রিপোর্টার, দৈনিক আজাদী।
এ আয়োজন উপভোগ করার জন্যে সাদর আমন্ত্রণ জানাচ্ছি আপনাদের। দেখা হচ্ছে তাহলে!!

তারিখঃ ২০ জুলাই, ২০১২, শুক্রবার
সময়ঃ বিকাল :২০ মিনিট
স্থানঃ ইসলামাবাদী মেমোরিয়াল হল,
কদম মোবারক এম, ওয়াই উচ্চ বিদ্যালয় ৪০
মোমিন রোড (চেরাগী পাহাড় সংলগ্ন), চট্টগ্রাম


সাবরিনা সুলতানা সম্পর্কে

“আমার কতো দাবি! কতো চাহিদা! কিছুই পাইনা। যেদিকে হাত বাড়াই সেদিকে অন্ধকার। সব জায়গায় নিয়ন্ত্রণ। সামাজিক নিয়ন্ত্রণ। রাষ্ট্রীয় নিয়ন্ত্রণ। প্রাকৃতিক নিয়ন্ত্রণ। সব নিয়ন্ত্রণে আমি বাঁধা আর গুমরে গুমরে কাঁদে আমার আশা আকাঙ্ক্ষা। ভালোবাসা!”
এই লেখাটি পোস্ট করা হয়েছে সচেতনতা, স্মৃতিচারণ-এ এবং ট্যাগ হয়েছে স্থায়ী লিংক বুকমার্ক করুন।

6 Responses to আগামী শুক্রবার বিকেলে দেখা হচ্ছে বন্দর নগরী চট্টগ্রামে!!

  1. সামিরা বলেছেনঃ

    আয়োজন সফল হোক, সেজন্য শুভকামনা। 🙂 ঢাকার বাইরের মানুষদের কাছে পৌঁছানোর ব্যাপারটা দারুণ!

  2. বোহেমিয়ান বলেছেনঃ

    দারুণ।
    এভাবেই পৌঁছে যাক সবার কাছে, সবার হৃদয়ে

  3. জ্ঞানচোর বলেছেনঃ

    অনেক অনেক সফলতা কামনা করছি আপু।
    ভিন্নরকম মেধাবীদের পদচারণা দেখতে চাই আপু। আর চাই দেশ পরিচালকদের থেকে শুরু করে সকলের আরো সচেতনতা।

    🙂

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।