রোগী ডাক্তারের সাথে খারাপ ব্যবহার করেছে, তাই ডাক্তার রোগীকে বকেছেন। রোগী নিজেকে লাঞ্ছিত দাবি করে সাংবাদিক কে খবর দিয়েছে। সেই সাংবাদিক এসে নিজের বাহাদুরি দেখাবার জন্য ক্যামেরা এনে হম্বি তম্বি করেছে। ভবিষ্যৎ ডাক্তাররাও বেশ এক হাত দেখে নিয়েছেন। মাথা ফাটিয়ে দিয়ে প্রমাণ করেছেন তারা আগামি দিনের ডাক্তার। খবর এসেছে গণমাধ্যমে- মেডিকেলে তুলকালাম! ডাক্তাররা হাত তুলেছে সাংবাদিকদের গায়ে। রোগী লাঞ্ছিত। ডাক্তাররাও প্রেস কে উল্টো দিয়েছে। আবার হাসপাতালে আসা মাত্রই উত্তম মধ্যম দিয়ে, ইটের ঘা মেরে, রক্ত বের করে, ক্যামেরা গুঁড়ো করে জুতসই জবাব দিয়েছে। এখন সাংবাদিকরা বিচার চায়, পুলিশ কেন হামলাকারীদের গ্রেপ্তার করলো না তার জবাব চায়। বড়ই চমৎকার নাটক বলা চলে। আমরাও ফেসবুকে চরম স্ট্যাটাস মারি।
আসলে ঘটনা কি ঘটেছিল? সাংবাদিকরা হলুদ। তাই চলে যাই একজন ডাক্তারের লেখায়। একটি ব্লগে লেখা একজন ডাক্তার ও পত্রিকার খবরের একটু এদিক ওদিক দেখি। যেটা পেলাম –
http://www.somewhereinblog.net/blog/omni/29643683
ঐ লেখকের লেখার পুরো অংশই এখানে তুলে ধরতে হচ্ছে। নয়ত বিষয় খোলাসা না হতেও পারে।
সংশ্লিষ্ট লেখকের বক্তব্য যিনি বাস্তব ঘটনা এবং সংবাদে প্রকাশিত ঘটনার মধ্যে তুলনামুলক চিত্র দেখিয়েছেন।
দৃশ্যপট- ১
“গত কয়েকদিন ধরে ঢাকা মেডিকেল হাসপাতালে সংঘটিত ঘটনাসমূহ সম্পর্কে মোটামুটি আপনারা সবাই জেনে থাকবেন। বিভিন্ন পত্র পত্রিকা কিংবা টিভি চ্যানেলগুলো থেকে কম রিপোর্ট করা হয়নি। দেশবাসীর কাছে তুলে ধরা হয়েছে, ঢাকা মেডিকেল হাসপাতালের চিকিৎসকদের প্রতি অভিযোগের রেখাচিত্র। দেশের একজন নাগরিক হিসেবে আপনার পূর্ণ অধিকার রয়েছে ঘটে যাওয়া অনভিপ্রেত ঘটনাগুলো জানার। তবে অবশ্যই হলুদ কাগজে মোড়া রং চং মাখানো ঘটনা নয়, বরং পূর্ণাঙ্গ সত্য ঘটনা। এতদিন সাংবাদিকদের কাছ থেকে তো একপেশে বক্তব্যই শুনলেন, আসুন, এবার দেখে নিন, আসলে কি ঘটেছিলো এই কয়দিন। আসুন, দেখে নিন, আমাদের দেশের সাংবাদিকদের হলুদ সাংবাদিকতার কিছু নমুনা।
হলুদ সাংবাদিকতার প্রথম উদাহরণ (১৯শে জুলাই, ঢাকা মেডিকেল হাসপাতাল)
শিরোনাম- “বেয়াদব, লাত্থি মেরে হাসপাতাল থেকে বের করে দেবো”
খবর-“মেডিক্যাল সূত্র জানায়, ঝিনাইদহে সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হয়ে আরিফুল হক চৌধুরী প্রথমে ঝিনাইদহ হাসপাতালে, সেখান থেকে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল হয়ে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে আসেন। সেখানে সার্জারি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক শহীদ হোসেনের তত্ত্বাবাধানে ভর্তি হন (সার্জারি ২১৪ নং ওয়ার্ড, ইউনিট-১ এর ৯ নং বেড)।”
তাহলে আসল খবর কি?
প্রকৃত খবর- আমাদের রোগী আরিফুল হোক চৌধুরীকে রাজশাহী মেডিকেল থেকে ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছিলো ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে আসার জন্য। কারন হিসেবে জানা যায়- রোগীর অসামাজিক অনিয়ন্ত্রিত আচরণ এবং চিকিৎসকদের প্রতি হম্বি তম্বি। তাছাড়া সড়ক দুর্ঘটনায় আক্রান্ত এই ব্যাক্তির জেজুনাল এবং মেসেন্টারিক পারফোরেশন হয়ে গিয়েছিলো। রামেক হাসপাতাল তাই এই ধরনের রোগী রাখার দুঃসাহস দেখায়নি। তাকে ঢাকা মেডিকেল হাসপাতালে নিয়ে আসা হলো।
দৃশ্যপট -২
খবরের দ্বিতীয় অংশ-
“চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত ১৭ জুলাই সকালে ইন্টার্ন ডাক্তার লাবণী এসে তার ক্ষতস্থান ড্রেসিং করার জন্য বলেন, এ সময় আরিফুল খুব বেশি অসুস্থ ছিলেন। পরে ড্রেসিং করবেন বলে জানালে, ইন্টার্ন ডাক্তার লাবণী ক্ষেপে গিয়ে আরিফুলকে অকথ্য ভাষায় গালি দেন ও তার সঙ্গে খারাপ আচরণ করেন। বাংলানিউজের কাছে এমনই অভিযোগ করেন আরিফুল হক।”
প্রকৃত খবর- মাঝে ১৫ দিনের কাহিনী অনুপস্থিত। এক লাফে বাংলানিউজ গাছের আগায় উঠে বসেছেন। ১৫ দিনের ঘটনা একটু জেনে নেওয়া যাক।
রাজশাহী থেকে আসার পথে রোগীর হেমোপেরিটনিয়াম হয়ে সে শকে চলে যায়। শক ম্যানেজমেন্ট এবং অপারেশন এর পর টানা ১৪ দিন অক্লান্ত পরিশ্রম করে তাকে মোটামুটি সুস্থ করা হয়। অপারেশন এর পর ড্রেসিং করতে গেলেই তিনি ইন্টার্ন ডাক্তারদের সাথে বাজে ব্যবহার করতেন। ড্রেসিং করা নিয়ে নানান ঝামেলা করতেন। এমনই অবস্থায় গত ১৭ই জুলাই ইন্টার্ন চিকিৎসক ডাঃ লাবনী ড্রেসিং করার সময় তাকে ড্রেসিং এর জন্য বেড থেকে উঠে বসতে বলেন এবং বলেন দেরী না করতে, তার আরও অনেকগুলো রোগীর ড্রেসিং করতে হবে। প্রত্যুত্তরে আরিফুল হক সেই ইন্টার্ন চিকিৎসককে বেয়াদব বলে
গালি দেন। এবং বলেন- ইন্টার্ন চিকিৎসকরা খুবই নিম্নশ্রেণীর। তার ড্রেসিং করার জন্য উচ্চশ্রেণীর চিকিৎসকরা আছেন। এরকম ১০-১২ টা ডাক্তার তিনি পকেটে পুরে ঘুরতে পারেন। তার বক্তব্যে ইন্টার্ন চিকিৎসক এতোটাই আঘাত পান যে তিনি কেঁদে ফেলেন। কিন্তু তিনি নিজে কিছুই বলেন নি।
দৃশ্যপট ৩
হলুদ খবর-
এরপর বৃহস্পতিবার বেলা ১২টায় সার্জারি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক শহীদ হোসেন ২১৪ নং ওয়ার্ডে সে দিনের ঘটনার জন্য রোগী আরিফুল হককে গালিগালাজ করতে থাকেন এবং এক পর্যায়ে তাকে (রোগীকে) বেডের ওপর বসা অবস্থায় কয়েকটি চড় মারেন। উচ্চস্বরে ধমক দিয়ে বলেন, “বেয়াদব, লাথথি দিয়ে হাসপাতাল থেকে বের করে দেবো”।
ডাক্তারের আচরণ দেখে এ সময় আরিফুলের স্ত্রী ঝরনা চৌধুরী হতবাক হয়ে যান। তিনি বাংলানিউজের কাছে অভিযোগ করে বলেন, “আমরা চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে এসেছি, লাঞ্চিত হওয়ার জন্য আসিনি।” তিনি এঘটনার সুষ্ট তদন্ত দাবি করেন।
প্রকৃত খবর-
সার্জারি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক শহীদ হোসেন এর কানে এই খবর পৌঁছালে তিনি রোগীকে ইন্টার্ন ডাক্তারের কাছে ক্ষমা চাইতে বলেন। রোগী সেটা করতে অসম্মতি জানান। ডাঃ শহীদ রোগীকে ধমক দিয়ে বলেন- এরকম করলে তাকে ছাড়পত্র দিয়ে দেওয়া হবে। রোগী তারপরেও চিকিৎসকদের কথা অমান্য করে বেড থেকে উঠার জন্য উদ্যত হন। ফাইল ছুড়ে ফেলে তিনি বলেন- থাকলাম না আপনার ওয়ার্ডে, আমার জন্য বহু হাসপাতাল আছে।
পরের ঘটনা, যেটা মিডিয়াতে আসেনি-
রোগী হেটে চলে দিব্যি সুস্থ মানুষের মতো দুই আড়াই ঘণ্টার জন্য ওয়ার্ড থেকে উধাও হয়ে যায়। ফিরে আসে একটু পরে। এসে অসুস্থ হবার ভান করে শুয়ে থাকে। এই ফাকে ১০-১২ জন সাংবাদিক ওয়ার্ডে বিনা অনুমতিতে প্রবেশ করে এবং একজন সাংবাদিক গ্লাভস পরে টেনে রোগীর ড্রেসিং খুলে সেটা ভিডিও করতে থাকে। তারা ওয়ার্ডে কর্তব্যরত সি এ এর উপরেও চড়াও হয় এবং নানা আক্রমণাত্মক বক্তব্য করতে শুরু করে।
খবর পেয়ে হাসপাতাল পরিচালক সেখানে পৌঁছেন। যদিও তিনি সামগ্রিক পরিস্থিতি অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে ব্যর্থ হন। তিনি না জেনেই সাংবাদিকদের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করে বসেন। রোগীকে হাসপাতালের ওয়ার্ড থেকে এমনকি কেবিনে শিফট করা হয়।
দৃশ্যপট ৪
হলুদ সাংবাদিকতার প্রথম নমুনা তো দেখলেন। এবার আসুন, শুনি পরবর্তীতে কি কি হলো।
বৃহস্পতিবার ঘটে যাওয়া এই ঘটনা নিয়ে হাসপাতালে চিকিৎসকদের মধ্যে তীব্র অসন্তোষ তৈরি হয়। শনিবার সকালে ইন্টার্ন চিকিৎসকরা হাসপাতালের পরিচালকের সাথে দেখা করেন এবং এই ঘটনার বিচার দাবী করেন। তাদের পক্ষ থেকে ৬ টি দাবী উত্থাপন করা হয়। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য দুটি দাবী ছিলো, রোগী কর্তৃক ক্ষমা প্রার্থনা, এবং সাংবাদিকদের হলুদ সাংবাদিকতার বিচার ও তাদের অযাচিত প্রবেশ বন্ধ করা। পরিচালক তাদের আশ্বাস দেন এই বলে যে- প্রকৃত ঘটনা জানিয়ে প্রেস রিলিজ পাঠানো হবে যাতে প্রকৃত ঘটনা সবার দৃষ্টিগোচর হয়। কিন্তু দুর্ভাগ্য জনক হলেও সত্য- কোন পত্রিকা সেই প্রেস রিলিজ প্রকাশ করেনি।
পরের দিন ইন্টার্নদের আন্দোলন শুরু হয়। আন্দোলনের শুরুর আগে তারা আবারো শান্তিপূর্ণ ভাবে হাসপাতালের প্রশাসনিক সভাকক্ষে তাদের দাবিগুলো তুলে ধরেন। তাদের মুল বক্তব্য ছিলো, কেন সত্য ঘটনা এখনো প্রকাশিত হচ্ছে না এবং হলুদ সাংবাদিকতার কোন বিচার হচ্ছে না।
পরবর্তী ঘটনা জানানোর আগে
আসুন, একবার দেখে নেই আমাদের হলুদ সাংবাদিকরা কি বললো-
ইন্টার্নী চিকিৎসক নাকি ইন্টার্নী সন্ত্রাসী!!
ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে মেডিক্যাল প্রতিবেদকদের ওপর হামলা করেছে ইন্টার্নরা। চিকিৎসকদের হাতে রোগী লাঞ্ছিত হয়েছে—এমন খবর একাধিক দৈনিক ও টিভি চ্যানেলে প্রচার হওয়ায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের শিক্ষানবিশ চিকিৎসকেরা ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন। এর প্রতিবাদে আজ ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সভাক্ষক্ষে শিক্ষানবিশ চিকিৎসকদের পূর্বনির্ধারিত সভা ছিল। বেলা ১১টার দিকে বাংলাভিশনের চিত্রসাংবাদিক উজ্জ্বল দাস সভার দৃশ্য ধারণ করেন। এ সময় শিক্ষানবিশ একজন চিকিৎসক উজ্জ্বল দাসকে বাধা দেন। এ নিয়ে কথা-কাটাকাটির একপর্যায়ে ওই চিকিৎসক উজ্জ্বলের কাছ থেকে ক্যামেরা কেড়ে নিয়ে মেঝেতে আছাড় মেরে সেটি ভেঙে ফেলেন। এ সময় শিক্ষানবিশ অন্য চিকিৎসকেরা উজ্জ্বলকে মারধর করেন। তাঁরা বাংলাভিশনের প্রতিবেদক রাসেল আহমেদকেও মারধর করেন। এরপর তারা জরুরি বিভাগের সামনে রাখা বাংলাভিশনের গাড়ি লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করে।
হামলায় আরো আহত হন একুশে টেলিভিশনের প্রতিবেদক মুজাহিদ আহসান, এবিসি রেডিওর মেডিকেল প্রতিবেদক বুলবুল চৌধুরী ও এনটিভির মেডিকেল প্রতিবেদক আল আমিন আহত হন। একপর্যায়ে শিক্ষানবিশ চিকিৎসকেরা মেডিকেল প্রতিবেদকদের বসার কক্ষে তালা লাগিয়ে দেন।
( সুত্র- বাংলানিউজ)
এছাড়াও কম বেশি টিভি চ্যানেল সহ সব পত্রিকা একই ধরনের খবর ছাপিয়েছে।
প্রকৃত খবর-
শিক্ষানবিস চিকিৎসকদের পূর্বনির্ধারিত সভা একটি প্রবেশাধিকার সংরক্ষিত সভা। কোন সাংবাদিককে সেই সভাতে ঢোকার অনুমতি দেওয়া হয়নি। বাংলাভিশনের চিত্রসাংবাদিক অথবা সিনেমা মেকার, যেটাই হোক, উনি সেই সভাতে ঢুকতেই পারেন নি। কাজেই সভার চিত্র ধারণের কথাটি একটা ডাহা মিথ্যা কথা। বরং, তিনি অনুমতি বিহীন ভাবে ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে ঘুরে বেড়াচ্ছিলেন নেগেটিভ নিউজ করবেন বলে। সাভা শেষে এই অবস্থায় তিনি ইন্টার্ন চিকিৎসকদের সামনে পড়েন। সামনে পড়া মাত্রই তিনি একটা ছোটখাটো দৌড় দেওয়ার চেষ্টা করেন। কিন্তু লাভ হয়নি, চিকিৎসকদের তোপের মুখে তাকে পড়তেই হলো। চিকিৎসকরা তার ক্যামেরাটা তার হাত থেকে নিয়ে তাকে এবং আলাদাভাবে সেই ক্যামেরা হাসপাতাল প্রশাসনের হাতে তুলে দিয়ে আসেন। সাথে ফ্রি কিছু গদাম ছিলো।
দৃশ্যপট – ৫
প্রশ্ন উঠতে পারে, কেন সাংবাদিকরা লাঞ্ছনার শিকার হলেন?
১) হাসপাতাল এর ওয়ার্ড সমূহ একটি সংরক্ষিত জায়গা। এখানে রোগীরা ভর্তি থাকে। এটা চিড়িয়াখানা নয়। এখানে প্রবেশের নির্দিষ্ট কিছু নিয়মনীতি আছে। ভিজিটিং আওয়ার আছে। সবসময় চাইলেই ওয়ার্ডে ঢোকা যায়না।
২) রোগীর প্রাইভেসি ডাক্তারদেরকেই রক্ষা করতে হয়। এটা medical ethics এর একটা অংশ। medical ethics অনুসারে ডাক্তারদের প্রাইভেসি রক্ষা করতেই হবে। সাংবাদিকদের ভঙ চঙের কথা medical ethics এ নাই।
৩) উপরে দেখতেই পাচ্ছেন, সাংবাদিকতা কতোটা নিম্ন পর্যায়ে নামলে সত্য ঘটনাকে আড়াল করে কিভাবে নিউজ করা সম্ভব। সত্য ও ন্যায়নিষ্ঠ সাংবাদিকতা অবশ্যই কাম্য। কিন্তু কেউ তো হলুদ সাংবাদিকতা করলে তাকে এসে আদর করবেনা। তাইনা?
৪) সত্য ঘটনা জানিয়ে প্রেস রিলিজ দেওয়ার পরেও সেটা না জানানো সবার মাঝেই ক্ষোভের সৃষ্টি করে।
৫) সবশেষে, কোন নিয়ম নীতি না মেনে এমনকি আন্দোলনের দিনেও অনুমতি ছাড়া সাংবাদিক কর্তৃক ওয়ার্ডে প্রবেশ। যেটা কোনভাবেই মেনে নেওয়া যায়না। সাংবাদিকদের প্রবেশের জন্য পাস থাকা জরুরী। পাস ছাড়া সাংবাদিক চোরেরই সমতুল্য।
জনাব, আপনারাই বলেন, সাংবাদিকরা কি চাইলেই পাস ছাড়া প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে প্রবেশ করতে পারে? পারে সচিবালয়ে প্রবেশ করতে? কিংবা কোন সরকারী অফিসে যেয়ে ফাইল দেখতে পারে অনুমতি ছাড়া? ঢাকা মেডিকেল হাসপাতাল ও সরকারী জায়গা। এখানেও প্রবেশের নিয়ম নীতিমালা আছে। কেউ সেটা ভেঙে ঢুকলে তার কি গদাম খাওয়া খুব অস্বাভাবিক কিছু?
হলুদ সাংবাদিকতায় সমগ্র দেশ যখন আক্রান্ত, তখন সাংবাদিকরাই কাঁদছেন, কেন তারা লাঞ্ছনার শিকার হলেন তাই বলে। একজন চোর যদি চুরি করে মার খেতে পারে, তাহলে মিথ্যা খবর প্রচার কি অপরাধ নয়? সেই অপরাধী কেন মার খাবেন না? চোরের সাথে তার পার্থক্য কি? চোর বেডরুমে বিনা অমুমতিতে প্রবেশ করে মার খেতে পারলে, সাংবাদিকদেরও হাসপাতালে বিনা অনুমতিতে প্রবেশ করলে মার খাওয়া উচিৎ। ঢাকা মেডিকেল হাসপাতাল কারো বাপের টাকায় ভেসে আসেনি। এখানে ২৪ ঘণ্টা অজস্র মানুষকে চিকিৎসা দেওয়া হয়। আমরাও খেটে খাওয়া মানুষ। পায়ের উপর পা তুলে খাইনা আপনাদের মতো। আমাদের সম্পর্কে ভালো কিছু বলতে না পারুন, বলবেন না। সেটা নিয়ে আমাদের দুঃখ নেই। কোন চাওয়া পাওয়া নেই আপনাদের কাছে। কিন্তু দয়া করে মিথ্যা কিছু বলবেন না।
দৃশ্যপট -৬
সাংবাদিকদের উদেশ্যে কিছু ছোট কথা-
নিয়ম মানুন, হলুদ সাংবাদিকতা বন্ধ করুন। আগে নিজেরা পরিষ্কার হন, তারপর মানুষজনের সমালোচনা করতে আসুন।
সবাইকে ধন্যবাদ।”
ঢাকা মেডিকেলের ঘটনায় যারা না জেনে সাংবাদিকদের পক্ষে লাফাচ্ছেন তাদের একটি কথাই বলি, এক হাতে তালি বাজে না। দেশের সর্বোচ্চ বিদ্যা প্রতিষ্ঠানগুলোর একটিতে পড়াশুনা করে যারা রোজ রোগ শ্রম দিচ্ছে মানুষের জীবন বাচাতে তার অযথাই সাংবাদিকদের উপর চড়াও হয় না।
যদিও এই বিদ্বেষ সমর্থনযোগ্য নয় তবে এ ব্যাপারে এগিয়ে আশা উচিত দু পক্ষেরই। আমাদের দেশের চিকিৎসা ব্যাবস্থার ভাল দিক সম্পর্কে সাধারন মানুষ কিছুই জানেনা কারন আমাদের মহান সাংবাদিকেরা নোংরামি খুজতেই পারদর্শী। নেগেটিভ রিপোর্টিং এর কারনেই আমাদের রোগীরা বাইরে যায় চিকিৎসা করাতে, হাজার হাজার টাকা খরচ করে চেম্বারে বা প্রাইভেট ক্লিনিজে চিকিৎসা নেয়, কিন্তু সরকারি হাসপাতালমুখী হয়না অথচ যেকোন প্রাইভেট ক্লিনিক থেকে ভাল চিকিৎসা হয় সরকারি হাসপাতালে। দীর্ধশ্বাসে শুধু একটি কথাই বলতে ইচ্ছা করে, আবার তোরা মানুষ হ!
ক্ষমা চেয়ে নেই ঘটনার এই দীর্ঘ অবতারনার জন্য। পুরো ঘটনাটা দেখলে মোটামুটি ভাবে টার্নিং পয়েন্ট যে গুলো দাঁড়াচ্ছে –
রোগীর অসামাজিক অনিয়ন্ত্রিত আচরণ এবং চিকিৎসকদের প্রতি হম্বি তম্বি। তাছাড়া সড়ক দুর্ঘটনায় আক্রান্ত এই ব্যাক্তির জেজুনাল এবং মেসেন্টারিক পারফোরেশন হয়ে গিয়েছিলো।
রাজশাহী থেকে আসার পথে রোগীর হেমোপেরিটনিয়াম হয়ে সে শকে চলে যায়।
আরিফুল হক সেই ইন্টার্ন চিকিৎসককে বেয়াদব বলে
গালি দেন। এবং বলেন- ইন্টার্ন চিকিৎসকরা খুবই নিম্নশ্রেণীর। তার ড্রেসিং করার জন্য উচ্চশ্রেণীর চিকিৎসকরা আছেন। এরকম ১০-১২ টা ডাক্তার তিনি পকেটে পুরে ঘুরতে পারেন। তার বক্তব্যে ইন্টার্ন চিকিৎসক এতোটাই আঘাত পান যে তিনি কেঁদে ফেলেন। কিন্তু তিনি নিজে কিছুই বলেন নি।
সার্জারি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক শহীদ হোসেন এর কানে এই খবর পৌঁছালে তিনি রোগীকে ইন্টার্ন ডাক্তারের কাছে ক্ষমা চাইতে বলেন। রোগী সেটা করতে অসম্মতি জানান। ডাঃ শহীদ রোগীকে ধমক দিয়ে বলেন- এরকম করলে তাকে ছাড়পত্র দিয়ে দেওয়া হবে।
রোগী হেটে চলে দিব্যি সুস্থ মানুষের মতো দুই আড়াই ঘণ্টার জন্য ওয়ার্ড থেকে উধাও হয়ে যায়। ফিরে আসে একটু পরে। এসে অসুস্থ হবার ভান করে শুয়ে থাকে। এই ফাকে ১০-১২ জন সাংবাদিক ওয়ার্ডে বিনা অনুমতিতে প্রবেশ করে এবং একজন সাংবাদিক গ্লাভস পরে টেনে রোগীর ড্রেসিং খুলে সেটা ভিডিও করতে থাকে। তারা ওয়ার্ডে কর্তব্যরত সি এ এর উপরেও চড়াও হয় এবং নানা আক্রমণাত্মক বক্তব্য করতে শুরু করে।
বৃহস্পতিবার ঘটে যাওয়া এই ঘটনা নিয়ে হাসপাতালে চিকিৎসকদের মধ্যে তীব্র অসন্তোষ তৈরি হয়। শনিবার সকালে ইন্টার্ন চিকিৎসকরা হাসপাতালের পরিচালকের সাথে দেখা করেন এবং এই ঘটনার বিচার দাবী করেন। তাদের পক্ষ থেকে ৬ টি দাবী উত্থাপন করা হয়। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য দুটি দাবী ছিলো, রোগী কর্তৃক ক্ষমা প্রার্থনা, এবং সাংবাদিকদের হলুদ সাংবাদিকতার বিচার ও তাদের অযাচিত প্রবেশ বন্ধ করা।
শিক্ষানবিস চিকিৎসকদের পূর্বনির্ধারিত সভা একটি প্রবেশাধিকার সংরক্ষিত সভা। কোন সাংবাদিককে সেই সভাতে ঢোকার অনুমতি দেওয়া হয়নি। বাংলাভিশনের চিত্রসাংবাদিক অথবা সিনেমা মেকার, যেটাই হোক, উনি সেই সভাতে ঢুকতেই পারেন নি। বরং, তিনি অনুমতি বিহীন ভাবে ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে ঘুরে বেড়াচ্ছিলেন নেগেটিভ নিউজ করবেন বলে। সাভা শেষে এই অবস্থায় তিনি ইন্টার্ন চিকিৎসকদের সামনে পড়েন। সামনে পড়া মাত্রই তিনি একটা ছোটখাটো দৌড় দেওয়ার চেষ্টা করেন। কিন্তু লাভ হয়নি, চিকিৎসকদের তোপের মুখে তাকে পড়তেই হলো। চিকিৎসকরা তার ক্যামেরাটা তার হাত থেকে নিয়ে তাকে এবং আলাদাভাবে সেই ক্যামেরা হাসপাতাল প্রশাসনের হাতে তুলে দিয়ে আসেন। সাথে ফ্রি কিছু গদাম ছিলো।
আন্দোলনের দিনেও অনুমতি ছাড়া সাংবাদিক কর্তৃক ওয়ার্ডে প্রবেশ। যেটা কোনভাবেই মেনে নেওয়া যায়না। সাংবাদিকদের প্রবেশের জন্য পাস থাকা জরুরী। পাস ছাড়া সাংবাদিক চোরেরই সমতুল্য।
একজন চোর যদি চুরি করে মার খেতে পারে, তাহলে মিথ্যা খবর প্রচার কি অপরাধ নয়? সেই অপরাধী কেন মার খাবেন না? চোরের সাথে তার পার্থক্য কি? চোর বেডরুমে বিনা অমুমতিতে প্রবেশ করে মার খেতে পারলে, সাংবাদিকদেরও হাসপাতালে বিনা অনুমতিতে প্রবেশ করলে মার খাওয়া উচিৎ। ঢাকা মেডিকেল হাসপাতাল কারো বাপের টাকায় ভেসে আসেনি।
আমাদের মহান সাংবাদিকেরা নোংরামি খুজতেই পারদর্শী।
আবার তোরা মানুষ হ!
আবারো ওপরের অংশ নতুন করে উপস্থাপনের কারণে বিনয়ের সাথে ক্ষমা চাই। কিন্তু ক’টা জিজ্ঞাসা কোন ভাবেই দমিয়ে রাখতে পারছি না। সংশ্লিষ্ট লেখক প্রকৃত খবর হিসেবে যা লিখেছেন তাতে স্পষ্ট ঐ রোগী মোটেই মানসিক ভাবে সুস্থ্য নয়। ‘অসামাজিক’ ‘শক’- জেজুনাল এবং মেসেন্টারিক পারফোরেশন, রাজশাহী থেকে আসার পথে রোগীর হেমোপেরিটনিয়াম এই কথাগুলো কি কোন সুস্থ্য মানুষ সম্পর্কে যায়? এরকম একজন মানুষ যখন একজন ডাক্তার কে বকেন আর সেই ডাক্তার ঐ রোগীর বকা শুনে কেঁদে ফেলেন। একজন চিকিৎসক যদি তার রোগীর মনস্তত্ত্ব সম্পর্কে ধারণা না করতে পারেন তার চিকিৎসা শিক্ষা কতটুকু তা কেউ একটু ব্যখ্যা করলে কৃতজ্ঞ হব।
আমার কাছে এরও অস্পষ্ট লাগলো পরের ঘটনায়। সব ইন্টার্ন ডাক্তার এই ঘটনা শুনে বিভাগীয় প্রধানের কাছে গেলেন বিচার চাইতে। কারণ তাদের সহকর্মী কাঁদছে। বিভাগীয় প্রধানের কানে এই খবর যাবার পর তিনি এসে ঐ রোগীকে মারলেন ধমক। মাফ চাইতে বললেন ডাক্তারের কাছে। নয়ত ছাড়পত্র দেয়া হবে। একজন ‘শকড’ রোগীর ‘গালি’ তে ভবিষ্যৎ ডাক্তার কাঁদলেন। পুরো ব্যচের সব ডাক্তার মিলে ঐ রোগীর বিচার করতে এলেন। সব ডাক্তারদের গুরু ঐ রোগী মাফ না চাইলে ছাড়পত্র দেবার মোজেজা শোনালেন। আসলে অসুস্থ কে?
রোগী হেটে চলে দিব্যি সুস্থ মানুষের মতো দুই আড়াই ঘণ্টার জন্য ওয়ার্ড থেকে উধাও হয়ে যায়। ফিরে আসে একটু পরে। এসে অসুস্থ হবার ভান করে শুয়ে থাকে।
যে রোগী সুস্থ মানুষের মত উধাও হয়ে যায়- সেই সুস্থ মানুষকে এই ডাক্তার বৃন্দ কেন এত দিন রাখলেন? নাকি সে সুস্থ এটা তারা জানতে পারেন নি? নাই বা জানলেন কিন্তু রোগী দেখে এতদিন বুঝতে পারেন নি সে সুস্থ না অসুস্থ- তাহলে তিনি ঠিক ঠিক চিকিৎসা দিচ্ছিলেন তো? এই রোগী আর ডাক্তারদের মধ্যে কাকে আগে চিকিৎসা করা দরকার! মহা ফান্দে পড়ে গেলাম রে ভাই।
বাবা লালন ফকির- তুমি কেনু গাইছিলা- এসব দেখি কানারা হাট বাজার!
এই বার আসল ১০ -১২ জন সাংবাদিক! মর জ্বালা। ঘটনার তীব্র ঘনঘটা! প্রতিবাদে কর্মসূচী ঘোষণা। আন্দোলন! হালা বেকুব সাংবাদিক এই দিনও নাকি অনুমতি ছাড়া ঢুকছে মেডিকেলে!
বাংলাভিশনের চিত্রসাংবাদিক অথবা সিনেমা মেকার, যেটাই হোক, উনি সেই সভাতে ঢুকতেই পারেন নি। বরং, তিনি অনুমতি বিহীন ভাবে ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে ঘুরে বেড়াচ্ছিলেন নেগেটিভ নিউজ করবেন বলে। সাভা শেষে এই অবস্থায় তিনি ইন্টার্ন চিকিৎসকদের সামনে পড়েন। সামনে পড়া মাত্রই তিনি একটা ছোটখাটো দৌড় দেওয়ার চেষ্টা করেন। কিন্তু লাভ হয়নি, চিকিৎসকদের তোপের মুখে তাকে পড়তেই হলো। চিকিৎসকরা তার ক্যামেরাটা তার হাত থেকে নিয়ে তাকে এবং আলাদাভাবে সেই ক্যামেরা হাসপাতাল প্রশাসনের হাতে তুলে দিয়ে আসেন। সাথে ফ্রি কিছু গদাম ছিলো।
আবে হালা যাবি কই? ডাক্তার আইছে! এইবার ‘ছোটখাটো’ দৌড় দে। নইলে ‘তোপের’ মুখে গদাম! কারণ তুই ‘চোর’! চোর বেডরুমে বিনা অমুমতিতে প্রবেশ করে মার খেতে পারলে, সাংবাদিকদেরও হাসপাতালে বিনা অনুমতিতে প্রবেশ করলে মার খাওয়া উচিৎ।
ব্যটা সাংবাদিক তুই কোথায় জানিস। ঢাকা মেডিকেল হাসপাতাল কারো বাপের টাকায় ভেসে আসেনি। তুই তো শুধু নোংরামি খুজতেই পারদর্শী।
শোন ডাক্তার বলেছে –আবার তোরা মানুষ হ!
পুনশ্চঃ সিনেমা স্রেফ একটা আজগুবি গল্পই হয়। সিনেমাখোররা রাগ করবেন না। কিন্তু সিনেমার কথা গুলো অনেক সময় বাস্তবের সবচে বড় চিত্রায়ন হয়। ফাটা কেষ্ট নামে কলকাতার একটা চলচিত্রে একটা কথা মনে আছে এরকম – “ডাক্তার বাবু! মানুষ বিপদে ভগবান কে ডাকে। আপনারা মানুষ কে বড় যন্ত্রণা থেকে মুক্তি দেন। তাই মানুষ আপনাদেরকে ভগবান জ্ঞান করে”।
ডাক্তার বাবু! এক রোগীকে নিয়ে আপনারা যে গদাম দিলেন তাতে মনে হয় আপনারা সত্যি সত্যি ভগবান। না হলে এমন ক্ষমতা আর কার আছে বলুন তো!
সাংবাদিকের ভাগ তো বাকি থাকলো! রাত শেষ হয়ে সকাল হয়েছে। এখনও ঘুমাতে পারিনি। দেখি কত তাড়াতাড়ি সাংবাদিকের ভাগের টা বলতে পারি!
:thinking:
কিছু বুঝলাম না। সবাই এত আত্মবিশ্বাসের সাথে নিজেদের পয়েন্টগুলি বলতে থাকলে তো সাধারণ মানুষ কনফিউজড হয়ে যাবে।
আমি আসলে রোগী খোঁজার চেষ্টা করছি!!
g vai. amio to med student. ami kisu boli. haemoperitum shock beshiding thakle patient more vut hoye jkaito. shei shock repair kra hoisilo. she 90% cured chilo. 90% cured patient mentally stable. tar deya dhmok o mentally stable obosthatei kra hoisilo. bllen j “shocked” patient k sir dhomok dsen. ei shock current shock na vai, eta holo decreased blood supply to the vital organ due to blood loss. eta reapir kre fela hoisilo. oi patient tkhn “shocked” chilo na. 90% recovered chilo. kisu bujhlen?
pardon my spelling mistakes
আমি যেহেতু মেডিকেলে পড়ি নাই তাই ডাক্তারদের এই term বুঝতে পারবো না। তবে common sense যেটা বলে তাতে বুঝি যে একজন ডাক্তার মোটামুটি রোগীর সাথে কথা বললেই তার আচার আচরণ সম্পর্কে ধারণা করে ফেলতে পারে। যেমন একজন সাধারণ মানুষও এটা পারে।
আমার প্রশ্ন হল যে রোগীর এই সমস্যা তাকে বুদ্ধিমত্তার সাথে সমাধান করলে কেমন হত? যেহেতু তার ব্যাবহার অন্য রকম তাই। সেই ব্যবস্থা তো একজন ডাক্তারকেই করতে হবে।
ভাই, আমি এখনো মেডিকেল কলেজে ভর্তি হইনি, তাই Medical Term তেমন একটা বুঝি না, তবে স্বাধীন ভাইয়ের বক্তব্যে যতটুকু বুঝলাম, “haemoperitum shock” বলতে “decreased blood supply to the vital organ due to blood loss” বুঝিয়েছেন, যা বুঝানোর জন্য তিনি আপনার-আমার জন্য দুর্বোধ্য কোনো Medical Term ব্যবহার করেননি। আর সেই “Shock” এর ৯০% নিরাময় করা হয়েছিলো (যা ১৪ দিনের পরিশ্রমের পর সম্ভব হয়েছিলো)। যখন সেই মানুষটি প্রায় সুস্থ, তখন তার কাছ থেকে ওরকম ব্যবহার পেলে, তার প্রতিবাদ করা অপরাধের মধ্যে পড়ে বলে মনে হয় না।
দেশে প্রতিদিন রাস্তা-ঘাটে চলার পথে ফুটপাথে, বাসে কিছু মানুষের দুর্ব্যবহার প্রায়ই চোখে পড়ে, সেক্ষেত্রে কি আপনি তাদের সকলকেই “মানষিক ভাবে অসুস্থ” অর্থাৎ এই ক্ষেত্রে “Shock এ আছে” বলে ধরে নিবেন?
ভাই, ডাক্তারগণ মানুষের চিকিৎসা করুন আর যাই করুন না কেনো, তারা কেউই ফেরেশতা নন। দেশের সর্বশ্রেষ্ঠ মেডিকেল কলেজে যারা পড়বার সুযোগ পান, তারা আর যাই হোক, রোগীদের অবস্থা না বুঝে তাদের চিকিৎসা দেয়া বা অন্য রকম ব্যবহার করার সম্ভাবনা কম, অন্তত ইন্টার্নীরত কেউ করবেন না।
মানুষটিকে সুস্থ করার পর তার কাছ থেকে ওরকম ব্যবহার পেলে তা আসলেই দুঃখজনক।
দীর্ঘ পাঁচ বছরের পড়াশোনার তীব্র চাপে থেকে পাশ করা একজন চিকিৎসকের কাছে আরিফুল হক চৌধুরীর সেই ব্যবহারটা অনেকটাই কষ্টের মনে হতে পারে, যার কারণে ইন্টার্নীরত সেই চিকিৎসক কেঁদে ফেলেন।
আর সাংবাদিকেরা যখন কোনো একটা ঘটনাকে পরিবর্তন করে দেশের মানুষের সামনে তুলে ধরেন, তখন সেটা খুবই দুঃখজনক…
সাংবাদিক রা “হ্যাঁ” বললে আমি ধরে নেই “না”
আর “না” বললে ধরে নেই “হ্যাঁ”
সাংবাদিকদের চরিত্র জানা আছে। আবার, DMC’র শিক্ষার্থীরা যে আক্রমণাত্মক হয়ে উঠেছিলেন সেটাও তো মিথ্যে নয়। এক হাতে তালি বাজে নি নিশ্চয়ই।
সংঘাত কখনোই সমর্থন করি না। তথ্য সন্ত্রাসের মোকাবেলায় তথ্যনির্ভর বিতর্কই হোক সমাধানের পন্থা। সাংবাদিকদেরও উচিত নিজেদেরকে এফবিআই ভাবা থেকে বিরত থাকা।
থাক ভাই, এই বিষয়ে জ্ঞান কম। কিছু বলা আমার সাজে না।
কিন্তু একটা প্রশ্নের উত্তর দিবেন ভাইয়া, এখন এই হলুদ সাংবাদিকতার বিরুদ্ধে ঠিক কোথায় যেয়ে কথা বলা যাবে? কে কথা বলবে? আর সেটা প্রকাশই বা করবে কে???
তবে রিপোর্টটা পড়ে অনেক কিছু নতুন করে জানতে পারলাম সমস্যা হচ্ছে, আমাদের দেশে কেউই দুই পক্ষ থেকে লিখে না, একটা পক্ষে ধরে আরেকজনকে টেনে নামিয়ে তারপর খবরটা ছাপায়……
হলুদ সাংবাদিকতা নিয়ে আমি লিখব
এই ডাক্তার ও সাংবাদিক সংঘর্ষ বিষয়ক আরো দুইটা লেখার ইচ্ছে আছে।
দেখি কখন লিখে ফেলতে পারি।
পেপারে বা টিভিতে যা যা পড়লাম আর দেখলাম, একটা কথাও বিশ্বাস করিনাই
ঘোলাটে পরিস্থিতি।
যত যাই হোক, সংঘাতের অবসান চাই।