বোর্ডের অনভিপ্রেত আচরণ এবং নটরডেম কলেজ!!

আগের কথা তবুও প্রাসঙ্গিক কারণেই গল্পের ঝাপি খুলতে হলো। এসএসসি দিয়েছিলাম সর্বোচ্চ ফলাফলটাই করেছিলাম। সেটা অবশ্যই গাছে ধরে টাইপ ফলাফল হয়ে গেছে ততদিনে। তাই এতো খুশি হওয়ার কিছু ছিলনা। শুধু একটাই লক্ষ্য ছিল নটরডেমে ভর্তি হবো। তখন নটরডেমে ভর্তি পরীক্ষা নিয়ে সরকারের সাথে টানাটানি চলছে। ভর্তি পরীক্ষা নিলে ভয় কম। কিন্তু বয়স/ অন্য কিছু হলে ধরা খেতে পারি। অবশেষে আশংকাটাই সত্যি হতে যাচ্ছে শুনলাম। পরীক্ষা নেওয়া হবেনা। আমার ছোট ভাই তখন আবার ওয়ানে ভর্তি হবে। তাদের ভর্তি পরীক্ষা দিয়েই ভর্তি হতে হবে।

আম্মু মজা করে বলছিলো” ওরে,দেখ! আমার পিচ্চিটাকেই পরীক্ষা দিতে হচ্ছে। আর তোরা বুড়ো হয়েও পরীক্ষা না দিয়ে ভর্তি হচ্ছিস।” ব্যাপারটা যথেষ্ট অপমানের মনে হলো আমার। প্রার্থনায় বসলাম যেনো ভর্তি পরীক্ষা নেওয়া হয়। ঢাকার বাইরের বিভাগ কৌটার ফাঁদে পড়েও বাদ যেতে পারি এই ভয়ে অস্থির। অবশেষে কাঙ্খিত ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হওয়ার ঘোষণা আসলো। যাক প্রাথমিক বিপদ কাটিয়ে উঠেছি। যেখানে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভর্তি হতেই পরীক্ষা দিতে হয় শিশুদের, সেখানে কৈশর পেরুনো একটা ছাত্র পরীক্ষা দিতে সমস্যা কি?

পরীক্ষা দিলাম, ভাইভা দিলাম। পরীক্ষা গ্রহণ পদ্ধতি, প্রশ্নপত্র সব মিলিয়ে কলেজটার প্রতি আরও আসক্ত হয়ে পড়লাম। ডিসিপ্লিন দেখে বিমোহিত। ক্যাডেট কলেজকে পেছনে ফেলে বলতে গেলে এই অবস্থা।

রেজাল্ট দিলো, মন খারাপ রোল খুঁজে পাইনা। পরে দেখি প্রথম প্যারাতে আমি খুঁজি নাই। পেলাম যখন সমকাল পত্রিকাটি হাতে নিয়ে অভিকর্ষকে কাঁচকলা দেখিয়ে ৩ফুট উচ্চতায় লাফিয়ে উঠলাম। সবচেয়ে বড় আনন্দ লাগছিলো এই কারণে যে আম্মু ঢাকায় যাওয়ার পক্ষে ছিলেন না, আমি নিজে ফর্ম জমা দেওয়ার লাস্ট দিনে নিজ উদ্যোগেই ফর্ম নিয়ে জমা দিয়ে সকল ব্যবস্থা করেছিলাম আব্বু আম্মুর অনাগ্রহ উপেক্ষা করে। সাথে ছিলো দুই বড় ভাই! যারা সেকেন্ড ইয়ারে পড়তো! এতো হেল্পফুল কখনও কাউকে দেখিনি।

কলেজের দুইটা বছর চমকের উপর দিয়েই ছিলাম। নতুন পরিবেশ, কড়া নিয়ম, শাসন। আমাদের সময়ও সরকার পক্ষ থেকে বেশ কিছু ভর্তির সুপারিশ আসলে তা অগ্রাহ্য করা হয় শুনেছিলাম। ব্যাপারটা নিয়ে গর্বে বুকটা ফুলে যেতো।

এইতো বের হলাম বেশিদিন হয়নি। আমাদের প্রাণপ্রিয় কলেজটি ভালো নেই। নানা প্রতিকূলতা কিভাবে যে পাড়ি দিয়ে আসলো আমাদের কাছে বিস্ময়কর বটে। শেষবার ভর্তি পরীক্ষা নেওয়ার বিষয়টি হাইকোর্ট পর্যন্ত গড়িয়ে যায়। ব্যাপারটা নিয়ে ঝামেলা হচ্ছিলো বিধায় ভর্তি পরীক্ষাটাও পেন্ডিং হয়ে যায়। অবশেষে কর্টের নির্দেশেই পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়।

কিন্তু সমস্যা কি জানেন? এইসব ঝামেলায় পড়ে ভর্তি প্রক্রিয়া শুরু হয় অন্যান্য কলেজগুলোতে ভর্তি হয়ে যাওয়ার ২-৪দিন পরে। ফলে অনেক ভর্তিচ্ছুক মেধাবী যেমন বঞ্চিত হয়েছে অনেক কষ্টে চলা আর্থিকভাবে অস্বচ্ছল বাবা মার কয়েকটা দিন বোধহয় অনাহারে থাকতে হয়েছে তাদের সন্তানের ভর্তি ক্যান্সেল করিয়ে এই স্বপ্নের কলেজে দিতে। না তাদের মুখে সরকার ভাত তুলে দিবেনা!!! রক্ত পানি করা টাকায় ভর্তি করাতে হলো ২বার।

আমি যখন চট্টগ্রাম যায় অনেকেই বাসায় আসতো দেখা করতে। আমি চট্টগ্রাম যেতাম ঘুমোতে আর কয়েকদিন ব্যাপক খাওয়াদাওয়া করতে। কিন্তু এবার কেস ব্যাপক সিরিয়াস হওয়াতে তাদের সময় দিতে হলো। তারা প্রত্যেকেই হতাশ। এখানে আগে ভর্তি হয়ে যাওয়ার ফলে ট্রান্সক্রিপ্ট ফেরত নিতে পারেনি বলে নটরডেমে ভর্তি হতে পারেনি। অনেক বুঝিয়ে শুনিয়ে বিদেয় দিলাম। খুব একটা লাভ হলো বলে মনে হয় না। এই যে এতোগুলো ছেলে কষ্ট পেলো অন্যায়ভাবে, হতাশ হলো তার দায়টা কি বোর্ড নিবে?

যাকগে এখানে ঘটনা শেষ হবে বলে এই কলেজ নিয়ে যাদের আশা,স্বপ্ন অনেক বড় তাদের স্বান্তনা দিলাম। স্যারদের সাথে কথা বললাম। পরবর্তীতে এমন হলে সবাই মিলে প্রতিবাদ করার সিদ্ধান্ত নিলাম। এইতো ক্লাস শুরু হলো এই মাসেরই ১তারিখ। ১মাসও হয়নি। এর মধ্যে আবার নতুন সমস্যা সৃষ্টি হলো। বোর্ড থেকে নাকি রেজিস্ট্রেশান দেয় না। প্রতিটা ছাত্র শিক্ষক হতাশ। কেনো এই পায়তার কলেজটা ধ্বংসের। কিসের এই ষড়যন্ত্র? মাননীয় শিক্ষামন্ত্রীর কাছে প্রশ্ন, আপনি বিব্রত হয়ে যান শুনেছি খুব অল্পতে। এতে আপনি বিব্রত হন নি? এর পিছনে কারা ইন্ধন দিচ্ছে? দেশের অন্যতম রাজনীতিমুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটিকেও কি কোন দলের আখড়া বানাতে হবে? এখানেও কি রাজনীতির চক্রান্ত,দলীয় সুপারিশে ভর্তি এসব করতে হবে। মাননীয় শিক্ষামন্ত্রী বুয়েট ইস্যুতে আপনার অনাকাঙ্খিতভাবে বিব্রত হওয়ার পর থেকে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ঝামেলা সৃষ্টির ইস্যুতে আপনার নীরব ভূমিকা দেশের প্রতিটা সচেতন নাগরিককে বিব্রত করছে। নতুন শিক্ষানীতি প্রণয়ন সহ শিক্ষা ব্যবস্থা আধুনিকীকরণে আপনার অবদানকে কখনই অস্বীকার করবোনা কিন্তু এইসব ইস্যুতে আপনার নিশ্চল থাকা সত্যি ভাবিয়ে তোলে।

সবশেষে নির্দেশ দেওয়া হলো অনলাইনে পরীক্ষা নেওয়ার। এখানে পড়তে গ্রাম থেকে প্রায় এক চতুর্থাংশ শিক্ষার্থী আসে একটু খোঁজ নিতে গেলে জানা যাবে অনেক জায়গায় এখনও বিদ্যুত পৌছায়নি। সেখানে কিভাবে এরা অনলাইনে পরীক্ষা দিবে বলতে পারেন কেউ? এই নির্দেশ দেওয়ার দুঃসাহস দেখানোর আগে কি উচিত ছিলোনা দেশের প্রতিটি প্রান্তে ইন্টারনেট পৌছে দেওয়ার দুঃসাহস দেখানো? দুই প্রকার পরীক্ষা পদ্ধতি চালু থাকতে পারে কিন্তু এরকম অনর্থক নির্দেশের মানে কি দাঁড়ায়? ঐতিহ্যবাহী নটরডেম কলেজ ধ্বংসের একটি পায়তারা নয় মাত্র?

এই লেখাটি পোস্ট করা হয়েছে চিন্তাভাবনা, সচেতনতা-এ। স্থায়ী লিংক বুকমার্ক করুন।

18 Responses to বোর্ডের অনভিপ্রেত আচরণ এবং নটরডেম কলেজ!!

  1. মাধবীলতা বলেছেনঃ

    নিজের কলেজ জীবনের স্মৃতিগুলো মনে পড়ে গেল। সেই হলিক্রস, সেই কড়া শৃংখলা, সিস্টার শিখার জীবনমুখী কথকতায় ভরা বাংলা ক্লাস, প্রতিদিনের করা প্রার্থনা “অন্তর মম বিকশিত কর,অন্তরতর হে…নির্মল কর, উজ্জ্বল কর,সুন্দর কর হে…” জীবনটাকে নতুন করে বুঝতে আর জানতে শিখিয়েছে আমাকে হলিক্রস কলেজ।

    এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো সম্পূর্ণ রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত থেকে কত বড় বড় মনের শ্রেষ্ঠ সন্তান দিয়েছে আমাদের। আর আজ এ কি ভয়ানক অবস্থা! একদিকে প্রাণপ্রিয় বুয়েট আরেকদিকে নটরডেম । আমাদের কি কিছুই করার নেই 🙁

    • আয়নিত অন্ধকার বলেছেনঃ

      The only thing necessary for the triumph of evil is that good men do nothing.

      আমাদের করার অনেক কিছুই আছে,করছিনা আমরা। কারণ আমরা এক হতে পারিনা, একটা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বাঁচাতে হবে এটা নিয়েও নানা তর্ক,বিপক্ষ!!কেমনে হবে?

  2. সামিরা বলেছেনঃ

    ফেসবুকেই পড়েছিলাম।
    কী বলবো আসলে? এক এক করে সব স্কুল-কলেজ-ইউনিভার্সিটি এইসব শুরু হচ্ছে, আর সবচেয়ে ভালগুলিতেই। কারণ তো আছে নিশ্চয়ই কোন না কোন। 🙁

  3. বোহেমিয়ান বলেছেনঃ

    এক্সপার্টদের সাথে কি সরকার কনসাল্ট করছে?

    নিজে নটরডেমিয়ান হয়ে জানি যে কত জরুরি দরকার ঢাকার বাইরের ছেলেদের সুযোগ করে দেয়া 🙁

    এটা শুধু বাইরের ছেলেদের জন্য না, ভেতরের ছেলেদের জন্যও এই অভিজ্ঞতার দরকার

    • আয়নিত অন্ধকার বলেছেনঃ

      সরকার বলতে শিক্ষামন্ত্রী যা বলেছেন তাই, সবার কথা শুনে মনে হয় কলেজের উপর চাপা আক্রোশ

  4. ফিনিক্স বলেছেনঃ

    সরকারের কাছে কি এই তথ্য পৌঁছেছে?
    নটরডেমের এখনকার কোন ছাত্র কিংবা এক্স ছাত্রদের ভূমিকা কী?
    কলেজ কর্তৃপক্ষের সাথে ছাত্র বা অভিভাবকদের কোন মিটিং হয় নি?
    গভর্নিং বডিই বা কী করছে?

    আসলে একটা সমস্যার ক্ষেত্রে তো কেবলমাত্র অভিযোগ নয়, সাথে সমাধানও চাই।
    তাই প্রক্রিয়াগুলো জানতে চাচ্ছিলাম।

    • আয়নিত অন্ধকার বলেছেনঃ

      ফেসবুকে নোট দিয়েছি,আমার ফ্রেন্ড এতো কম তারপরও এতো কমেন্ট শেয়ার, কেউ কেউ বলছে খুন করে ফেলবো, যখন বললাম আমরা বোর্ডের সামনে মানব বন্ধন করি।তারপর আর কেউ নেই।তবে রোজার পর হবে, এখন অনেকের সমস্যা দেখাচ্ছে রোজাকেন্দ্রিক

  5. স্বপ্ন বিলাস বলেছেনঃ

    হাস্যকর সিদ্ধান্ত নেয়ার ব্যপারে কী আর বলবো! প্রতিদিনই তো দেখছি…… 🙁

    তবে, ভর্তি পরীক্ষার ব্যপারে আমার ব্যক্তিগত মতামত হলো, ভর্তি পরীক্ষা হলে সব কলেজে হতে হবে, আর না হলে, কোন কলেজেই না! শুধুমাত্র একটা-দু’টা কলেজে ভর্তি পরীক্ষা নেয়া সমর্থন করি না……

    • Asif বলেছেনঃ

      জ্বি না ব্রাদার, নটরডেম কলেজ আর অন্য কলেজ এক না। অন্য কোন কলেজে এই বর্তমান যুগে স্যাররা ক্লাসে এসে কাউকে ঘুমাতে দেখলে বলেন না “বাপ মা গ্রামে কারেন্ট নাই এমন অবস্থায় থেকে রক্ত পানি করে টাকা ইনকাম করে ঢাকায় রেখে পড়ায় আর আমরা সেই টাকায় রাতে মোবাইল দৌড়াই তারপর সকালে ক্লাসে এসে ফ্যানের নিচে বসে ঘুমাই। না স্যার, আমার ক্লাসে এসব হবে না স্যার।”
      কোন স্যার নবীন বরনে বলেন না যে “তোমরা হয়ত এখন নটরডেমিয়ান হিসেবে নিজেকে পরিচয় দিবা কিন্তু জীবনে কখনো এমন কাজ করবানা যাতে একজন নটরডেমিয়ান হিসেবে তুমি পরিচয় দিতে লজ্জা পাও, নটরডেমের এই যে মান মাটিতে কখনো মিশিও না।”

      [courtesi: প্রথম উক্তি-জহরলাল সরকার স্যার
      দ্বিতীয় উক্তি-অমল কৃষ্ণ বনিক স্যার]

      • স্বপ্ন বিলাস বলেছেনঃ

        আমি একবারও বলি নি অন্য কলেজ এবং নটরডেম কলেজ এক।

        আমি বলেছি, শিক্ষামন্ত্রনালয় এর নিয়ম যেন সব কলেজের জন্য এক হয়……আর, ভর্তিপরীক্ষা বাতিল করা আমি নিজে সমর্থন করি না। আমার কাছে মনে হয়, সব কলেজেই ভর্তি পরীক্ষা হোক।

        আর, নটরডেম কলেজ ছাড়া অন্য কোথাও ছাত্ররা ঘুমালে টিচাররা তাদের কিছু বলেন না, এমন অদ্ভূত ধারণা কোথা থেকে এলো আপনার!

    • আয়নিত অন্ধকার বলেছেনঃ

      ্সব কলেজেই নেওয়া উচিত,নাহয় আমাদের এসএসসির যে সিস্টেম তাতে স্টুডেন্ট বাছাই করা সম্ভব না

  6. নোঙ্গর ছেঁড়া বলেছেনঃ

    হতভম্ব হয়ে গেলাম!!
    গ্রামাঞ্চলের ছেলেরা অনলাইনে কীভাবে পরীক্ষা দিবে? ইন্টারনেট সুবিধা কতদূর? আমার গ্রামে কেউ ইন্টারনেট ইউজ করেনা সেইভাবে. তার উপর পরীক্ষা দিতে দিতে যদি পাওয়ার কাট হয়? এটা কোনো কথা হলো?
    এত্ত বড় একটা প্রতিষ্ঠান নিয়ে এমন ঘটনা ঘটে যেতে পারে তা আমার ধারনাও ছিলনা..
    সরকার এর যথাযথ কর্তৃপক্ষকে অবহিত করে সমস্যা সমাধান করা খুব প্রয়োজন

    • আয়নিত অন্ধকার বলেছেনঃ

      আমারও কথা ঐটা, তাদের বঞ্চিত করা হয়ে যাবে অনলাইনে পরীক্ষা নিলে, আর শহরের ছেলেদেরই বা কেমনে নিবে যেখানে আমাদের একটা ভালো গভঃ সাইট নেই সেখানে অনলাইন পরীক্ষা রসিকতা!!

  7. অদ্ভুত হাস্যকর যুক্তি শুনতে শুনতে কেন জানি সবকিছুর উপর হতাশ হয়ে যাই মাঝে মাঝে! অনলাইনে পরীক্ষা দিবে গ্রামের ছেলেরা! হাস্যকর! কিন্তু সরকার কি এই জিনিসটা জানে?? অদ্ভুত!

    • আয়নিত অন্ধকার বলেছেনঃ

      সরকার যদি দেশের বিন্দুমাত্র খবর রাখে এটাও রাখার কথা……মাঝে মাঝে দেশটাকে নিয়ে স্বপ্ন দেখা ভুলে যাই

  8. আয়নিত অন্ধকার বলেছেনঃ

    নটরডেম কলেজ শুধু নটরডেমিয়ানদের না, আমাদের পুরো বাংলাদেশের। এটা বাংলাদেশীদের, সবারই উচিত অন্যায়ের বিরোধীতা করতে শেখা

  9. বাংলামায়ের ছেলে বলেছেনঃ

    প্রথমেই এমন একটি প্রয়োজনীয় পোস্টের জন্য ব্লগারকে ধন্যবাদ জানাই।

    আমরাই সম্ভবত একমাত্র ব্যাচ যারা কোনোপ্রকার ভর্তিপরীক্ষা ব্যতীত শুধুমাত্র বয়সের ভারে ভর্তি হয়ে গিয়েছিলাম।

    আমারো সেদিন নিজেকে খুব অযোগ্য আর বুইড়া বলে মনে হচ্ছিল, যদিও পরে এইচএসসি এর ফলাফলে আমরা যোগ্যতার স্বাক্ষর রেখেছিলাম আগের বছরের ৮২৫ এ+ কে টপকে ১১৮৯ এ+ পেয়ে।

    আমরা চান্স পাওয়ার পর গ্রুপ নির্ধারণী পরীক্ষা দিয়েছিলাম অবশ্য। তবু ক্লাসে দুষ্টামি করলে কিংবা কেউ বিড়ালের শব্দ করলে আজমল স্যার বলে বসতেন, তোমাদের তো আমরা চেহারা দেখে ভর্তি করাতে পারিনি, তাই বোধ হয় মানুষের বাচ্চার সাথে দু-চারটে কুকুর-বেরালের বাচ্চাও চলে এসেছে!

    নটরডেম কলেজ আমার প্রাণের কলেজ। নিঃসন্দেহে পুরো বাংলাদেশেরই গর্ব এই কলেজ। আজ অব্দি অনেক কীর্তিমান মানুষের ভীত গড়ে দিয়েছে এই কলেজ। এই প্রসিদ্ধনামা কলেজটিকে নিয়ে খেয়ালখুশির রাজত্ব বন্ধ হোক এটাই কামনা করি।

    ও আরেকটা কথা, আমাদের সময় গ্রুপ সিক্স এ শুধুমাত্র বিশেষ বিবেচনার দোহাই দিয়েই অনেককে ভর্তি করা হয়েছিলো। এই বিশেষ বিবেচনা কি এখনো চলছে?

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।