Curiosity-কৌতূহল। সেই আদিকাল থেকে আজকের যুগে এসে দাঁড়ানোর পিছনে মানুষের যে জিনিসটার গুরুত্ব সবচেয়ে বেশি, সেটিই মানুষের অনুসন্ধিৎসু মনের কৌতূহল। নতুন করে জানার ইচ্ছে, নতুন কিছু শেখার ইচ্ছেই মানুষের চলার পথের জ্বালানী।
তবে, শুধু পৃথিবী নয়, এর বাইরের সবকিছু সম্পর্কেও জানার যে দুর্দমনীয় কৌতূহল তা-ই যেন আবার স্পর্শ করলো পৃথিবীর প্রতিবেশী মঙ্গলগ্রহকে।
আজ বাংলাদেশ সময় দুপুর ১২টা ৩২ মিনিটে মঙ্গলগ্রহ স্পর্শ করেছে নাসা-র পাঠানো MSL(Mars Science Laboratory), যার নাম Curiosity!
নাসা-র মঙ্গলগ্রহে পাঠানো ৭ম যান এটি। ২৬শে নভেম্বর, ২০১১ তে যাত্রা শুরু করে Curiosity। প্রায় আট মাসব্যাপী যাত্রা শেষ হয় শ্বাসরুদ্ধকর কিছু মুহূর্তের মধ্যে দিয়ে।
Curiosity এর অবতরণ নিয়েই তৈরি হয় উৎকণ্ঠা। এর আগে এমন কোন অবতরণ কৌশল কোন MSL এর জন্য ব্যবহার করা হয় নি। এটি মঙ্গলের বায়ুমণ্ডলে প্রবেশ করে প্রায় ১২০০০ মাইল/ঘণ্টা বেগে। তবে শেষ পর্যন্ত ২মাইল/ঘণ্টা বেগে ভূমি স্পর্শ করার পূর্ব পর্যন্ত উৎকণ্ঠায় সময় কাটিয়েছেন বিজ্ঞানীরা।
কেন এই অভিযান?:
কেন এই অভিযান, কী এর গুরুত্ব-তা দেখে নেয়া যাক:
১. মঙ্গলগ্রহের ভূমির উপাদান(mineralogical) বিশ্লেষণ করা।
২. মঙ্গলগ্রহে অতীতে কোন প্রাণের চিহ্ন ছিল কি না, তাঁর খোঁজ করা; অর্থাৎ, Biosignature বিশ্লেষণ করা।
৩. শিলা এবং মাটি মঙ্গলগ্রহে কিভাবে তৈরি হয়েছে তা ধারণা করা।
৪. মঙ্গলের বায়ুমণ্ডল সৃষ্টির পর থেকে প্রায় ৪ বিলিয়ন বছর ধরে কিভাবে পরিবর্তিত হয়েছে, তা ধারণা করা।
৫. বর্তমান পানি এবং কার্বন-ডাই-অক্সাইড চক্র সনাক্ত করা।
৬. মঙ্গলের পৃষ্ঠে বিভিন্ন রেডিয়েশন(galactic radiation, cosmic radiation, solar proton events, secondary neutrons) এর তথ্য জোগাড় করা।
Curiosity এর ভেতর-বাহির:
১. Curiosity এর দৈর্ঘ্য প্রায় ১০ ফিট এবং প্রস্থ প্রায় ৭ফিট। ভর প্রায় ৯০০ কেজি যার মধ্যে বৈজ্ঞানিক যন্ত্রপাতির ভর প্রায় ৮০ কেজি।
২. এটি চলবে radioisotope thermoelectric generator (RTG) এর মাধ্যমে। RTG একটি ইলেকট্রিকাল জেনারেটর যা কাজ করে তেজস্ক্রিয় ক্ষয় ব্যবহার করা। Curiosity তে ব্যবহার করা RTG টি একটি বিশেষ ধরনের-“Multi-Mission Radioisotope Thermoelectric Generator“( MMRTG) . এটিতে ব্যবহার করা হয় প্লুটোনিয়াম-২৩৮।
৩. Curiosity চলার সময় ৩০ ইঞ্চি উঁচু বাঁধা অতিক্রম করে যেত পারবে। এটির সর্বোচ্চ বেগ ৯০মিটার/ঘণ্টা। আশা করা হচ্ছে মঙ্গলগ্রহে অবস্থা করার দুই বছরের মাঝে এটি প্রায় ১২ মেইল পথ অতিক্রম করবে।
৪. মঙ্গলগ্রহে অবস্থানের স্থানে তাপমাত্রা ৩০ ডিগ্রি থেকে -১২৭ডিগ্রি পর্যন্ত ওঠানামা করতে পারে। তাই বৈজ্ঞানিক যন্ত্রপাতির সুরক্ষার জন্য এতে তাপ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা আছে।
৫. Curiosity থেকে পৃথিবীতে তথ্য পাঠাতে সময় লাগে ১৩মিনিট ৪৬ সেকেন্ড।
৬. Curiosity তে থাকা ক্যামেরা ব্যবহার করে তোলা যাবে মাইক্রোস্কোপিক লেভেল থেকে শুরু করে সমগ্র এলাকার ছবি তোলা যাবে।
৭. Alpha-particle X-ray spectrometer (APXS), CheMin, Quadrupole Mass Spectrometer, Gas Chromatograph, Tunable Laser Spectrometer (TLS) ব্যবহার করে কোন উপাদানের মৌলসমূহ নির্ণয় করা যাবে।
৮. আবহাওয়া স্টেশন, পাওয়ার ড্রিল এবং লেজার মেশিন আছে এর মধ্যে।
আগামী দুই বছর ধরে Curiosity বিভিন্ন তথ্য সংগ্রহ করে যাবে মঙ্গলের বুকে। সেই তথ্য মানুষের জ্ঞানের ভাণ্ডারে যোগ করবে আরও কিছু নতুন বিষয়, যার উপর ভর করে এগিয়ে যাবে মানুষ নতুন পথে।
শুভ হোক তবে মঙ্গলের বুকে মানুষের ‘কৌতূহল’ এর পদার্পণ।
একদিন বুধে বেড়াতে যাবার শখ আছে 😀
ওহ ধুর, মঙ্গলে 😛
হে হে! শৈশব, তোর সাথে মজা লয় 😛
আমিও শৈশবের কথা শুনে টাশকি খাইছিলাম।
ভাবছি এইগুলান কী গাধা! বুধে গিয়া তো লাভ নাই! 😛
:beerdrink:
মঙ্গল নিয়ে এত মাতামাতি কেন এইটা নিয়ে আমার কৌতূহল আছে!
সহজবোধ্য পোস্ট এর জন্য ধন্যবাদ 😀
ধন্যবাদ 😀
আমি একটা জিনিসই আসলে বুঝি না।
এত এত টাকা খরচ করে শনি, রবি, সোম, মঙ্গল, বুধ, বৃহস্পতি, শুক্রতে মহাকাশযান পাঠানোতে কী লাভ। তারচেয়ে তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলোতে কি বিজ্ঞানের আরও কার্যকর আর কল্যাণমুখি ব্যবহার করা যায় না?
মঙ্গলে মহাকাশযান পাঠানো, সার্ন নিয়ে মাতামাতির চেয়ে আমাদের দেশে বিজ্ঞানের মানব কল্যাণী ভূমিকা নিয়ে আমি বেশি আগ্রহী।
অবশ্যই মহাকাশ নিয়ে আমার আগ্রহ অনেক কিন্তু এদেশের প্রেক্ষাপটে এখনো এগুলোকে আমার ঠিক গ্রহণযোগ্য বলে মনে হয় না। কারণ উন্নত দেশের এই ‘Curiosity’ পূরণে আমাদের দেশের মানুষের কোন উপকারই হবে না, অর্থনীতিক প্রেক্ষাপটে তো নয়ই।
পোস্টের সহজবোধ্যতার জন্য ধইন্যা।
পুরো জিনিসটাই আমার কাছে মনে হয়, মানুষের নতুন কিছু জানার ইচ্ছের প্রতিফলন। গরীব দেশে সাহায্য করে নাসা নতুন কিছু জানতে পারবে না-তাই হয়তো………
পড়ে ভাল লাগলো ভাইয়া। 😀 বিজ্ঞানের খটরমটর জিনিসপত্র যদিও!
‘কৌতূহল’এর জন্য শুভ কামনা। :clappinghands:
ধন্যবাদ আপু 😀
curiosity দেখতে কিউট 😛
😛
পুরাই!! :love:
😀 😛
“Curiosity-কৌতূহল। সেই আদিকাল থেকে আজকের যুগে এসে দাঁড়ানোর পিছনে মানুষের যে জিনিসটার গুরুত্ব সবচেয়ে বেশি, সেটিই মানুষের অনুসন্ধিৎসু মনের কৌতূহল। নতুন করে জানার ইচ্ছে, নতুন কিছু শেখার ইচ্ছেই মানুষের চলার পথের জ্বালানী।”
জ্ঞানপিপাসু এই মানুষগুলোর গবেষণা সমগ্র মানবজাতিকে দিক আরও আরও উৎকর্ষ! তথ্যসমৃদ্ধ পোস্টটির জন্য ধন্যবাদ। এক নজরে জেনে নিলাম বেশ কিছু অজানা তথ্য। Curiosity এর যাত্রা আর প্রত্যাবর্তন শুভ হোক। 🙂
ধন্যবাদ আপনাকে 😀
সুন্দর লেখা!! :clappinghands:
অবশেষে ‘কৌতুহল’ পা দিলো মঙ্গলে? 🙂
ধন্যবাদ 🙂