আত্মপ্রতিকৃতি

“এই পৃথিবীতে মন খারাপ করে থাকার ব্যাপারটা ভীষণ অদ্ভুত। হয়ত তুমি কোন এক রাতের আলোয় গুনগুন করে গান গাইতে গাইতে ভুল কোন পথে চলে যাবে। তুমি বাড়ি ফিরতে দেরি করবে, আর তখন তোমার মন খারাপ করবে। হঠাৎ হয়ত পৃথিবীর রাজ্যের সব জলকণা এসে তোমার দু’চোখে ভর করবে আর তুমি বুঝতে পারবে তুমি ভালো নেই। তোমার ঘরের হলদে বাতি, নীল দেয়াল কিংবা রঙিন পর্দাও তখন তোমার মনকে রাঙাতে পারবে না। প্রতিরাতে তুমি ঘুমাতে যাওয়ার সময় ভাববে একদিন সব ঠিক হয়ে যাবে কিংবা কোন একদিন আর তোমার মন খারাপ হবে না। ছোট্ট বিছানাটায় শুয়ে শুয়ে তুমি ভাববে তোমার অন্ধকার ঘরে হাজার হাজার জোনাকপোকা জ্বলছে। প্রথমে দেখবে একটা দুটো – তারপর দেখবে থোকায় থোকায়। তারপর দেখবে এক আকাশের তারার মত জ্বলজ্বল করছে জোনাকপোকা। তুমি ভাববে তোমার ঘরের মত জোনাকপোকাগুলো তোমার জীবনের আকাশেও রুপালী তারা হয়ে জ্বলবে, কিন্তু তারপরেই তুমি বুঝবে তুমি স্বপ্ন দেখছিলে আর ফের তোমার মন খারাপ হয়ে যাবে।

এই পৃথিবীতে মন খারাপ করে থাকার ব্যাপারটা ভীষণ অদ্ভুত। তুমি যখন দূর্বল থাকবে তখন মানুষ তোমাকে আগাছা ভেবে মাড়িয়ে চলে যাবে, আবার তুমি যখন নিজের শক্তিটুকু নিয়ে উঠে দাঁড়াতে চাইবে তখন তারা তোমাকে হিংসা করবে, তোমাকে মনে করিয়ে দেবে তুমি ক্ষুদ্র, তুমি তুচ্ছ, তোমার মত আগাছার কোন প্রয়োজন নেই, এমনকি কখনো ছিলও না। আবার তুমি যদি খুব অন্যরকম কেউ হও, খুব সাহসী কেউ, যে স্বপ্ন দেখতে ভালবাসে, যে অনেক রাতে হাসনাহেনা ফুলের ঘ্রাণ পেলে আনন্দে অভিভূত হয়ে যায়, যে মাথা উঁচু করে বাঁচতে চায় তখন মানুষগুলো তোমাকে বোকা বলবে তোমাকে কল্পনাবিলাসী বলে উপেক্ষা করবে আর ভাববে তুমি খুব অহংকারী। এক সময় তোমার নিজেকে নিয়ে খুব ক্লান্ত লাগবে। আর তুমি বুঝবে তোমার মন খারাপ হয়ে গিয়েছে। এই পৃথিবীতে মন খারাপ করে থাকার ব্যাপারটা আসলেই ভীষণ অদ্ভুত…”

ডায়েরিতে নিজের লেখা অনেক পুরোনো লাইনগুলোতে আমি আলতো করে হাত বুলালাম। গাঢ় নীল কালির রঙটা কেমন যেন ফ্যাকাশে নীল হয়ে গিয়েছে। যেন কেউ খুব করে আঘাত করেছে নীল কালিটাকে আর একদম বিবর্ণ করে দিয়েছে। আমার হলদে রঙের এই ডায়েরি আমি আজ থেকে সাত বছর আগে কিনেছিলাম। তারপর থেকে কত কিছুই না লিখে গিয়েছি। এই নিষ্ঠুর পৃথিবীটাকে আমি কত ঘৃণা করি তা আমি লিখে গিয়েছি। সাত বছরে আমার মাঝে কোনই পরিবর্তন হয়নি। আমি এখনো অন্ধকারকে বড্ড ভয় পাই। রাতের বেলা যখন রাস্তায় নানান রঙের আলো জ্বলে ওঠে, বেগুনি, নীল, কমলা, লাল, সবুজ, হলুদ তখনো আমার ভয় একটুও কমে না। কালো রংকে দেখলেই আমার মনে হয় অশুভ কিছু বুঝি আমাকে জাপটে ধরতে এসেছে।

খুব ছোটবেলায় আমার বাবার পোস্টিং ছিল কুমিল্লায়। কুমিল্লায় বাঘঘোনা এলাকার শেষের দিকে আমাদের বাসা ছিল। সেখানে আমাদের বাড়ির পাশে একটা পুরনো কূয়া ছিল, আমি সারাদিন সেই কুয়ার পাশে বসে থাকতাম। কেন বসে থাকতাম তা নিজেও জানিনা। প্রায়ই ভয় ভয় লাগতো আমার, মনে হতো কুয়ার গভীর কালো জল থেকে একটা লম্বা হাত এসে আমার গলা চেপে ধরবে কিংবা ভুস করে অনেকগুলো কালো সাপ কুয়ার ভেতর থেকে উঠে আসবে। আমার গা শিরশির করতো, আমি ভয়ে কাঁপতাম। তবুকী এক অদ্ভুত আকর্ষণে আমি কুয়ার পাশে ঠায় বসে থাকতাম। কিছুদিন পর প্রতিরাতে আমি দুঃস্বপ্ন দেখতে শুরু করলাম। আমি কুয়ার মধ্যে উবু হয়ে তাকিয়ে আছি আমার কালো ছায়া, কুয়ার পানিতে টলটল করছে আর সেই পানিতে হাজার হাজার সাপ কিলবিল করছে…স্বপ্নে আমার গা গুলাতো, আমি থরথর করে কাঁপতাম আর গোঙাতাম। আমার অবস্থা দেখে আমাকে আম্মু এলাকার মসজিদের ইমাম এর কাছ থেকে তাবিজ এনে দিলেন। তাবিজ পড়াতে মনে জোর বাড়লো হয়ত, কারণ বেশ কিছুদিন কোন দুঃস্বপ্ন দেখলাম না তারপর আবার দুঃস্বপ্ন দেখতে শুরু করলাম।একদিন সকালে ঘুম থেকে উঠে উভ্রান্তের মত আমার ঘর থেকে কালো রঙের সব কিছু আমি সরিয়ে ফেললাম। আমার অবস্থা দেখে উদ্বিগ্ন হয়ে এক সময় বাবা আর মা কুমিল্লা শহর ত্যাগ করলেন। আমরা ঢাকায় এলাম। এরপর থেকে আমি আগের চেয়ে মানসিকভাবে সুস্থবোধ করতে শুরু করলাম।কিন্তু আমার দুঃস্বপ্ন দেখা থামলো না। কালো রঙের প্রতি ভীতি আমার আজও যায়নি;আজো আমি কালো রঙের কোন পোষাকই পড়ি না।

ঠকঠক করে রুমের দরজায় শব্দ হল। আমার ভাবনায় ছেদ পড়লো। দরজার ওপাশে মোটা ফ্রেমের চশমা পড়া কোমল চেহারার একটি মেয়ে বিশাল একটা ব্যাগ হাতে দাঁড়িয়ে আছে।

– আপনি আয়শা তাবাসসুম?
– হু…বিরক্ত হয়ে উত্তর দিলাম আমি।

– আমি আপনার নতুন রুমমেট। এ বাড়ির মালিক মানে হাফসা খালাম্মা বলেছেন নিশ্চয়? মেয়েটি আমার উত্তরের অপেক্ষা না করেই হাতের ব্যাগটা নিয়ে ঘরে ঢুকে পড়ে। মেয়েটির স্পর্ধা দেখে মাথায় আগুন চড়ে যায় আমার। টেবিলের সামনে গিয়ে খপ করে নিজের হলদে ডায়েরিটা তুলে নিলাম আর সাথে সাথেই টেবিলের ড্রয়ারে বন্দি করলাম।

– আমার নাম ফারজানা শারমিন। একটা এনজিও তে কাজ করি। মাস ছ’য়েক হল এ শহরে এসেছি বুঝলেন? নতুন বাসা খুঁজছিলাম অনেকদিন থেকেই। ভাগ্যিস পেয়ে গিয়েছি এবার, নইলে সামনের মাসে সমস্যায় পড়তাম। আপনাদের এই বাসায় পানি বা গ্যাসের কোন সমস্যা নেই তো? থাকলেও অবশ্য আপাতত আমার কিছু করার নেই। যে করেই হোক সব কিছু ম্যানেজ করে থাকতে হবে। কিছুদিন পর পর বাসা বদলে উদ্বাস্তু থাকাটা অনেক কষ্টের, তাই না? কী বলেন? মেয়েটা আপনমনে কথা বলেই যাচ্ছে। ইতিমধ্যে রুমের অন্যপাশের খালি বিছানায় সে তার ব্যাগের জিনিসপত্র রাখা শুরু করে দিয়েছে।

– আমি গম্ভীর হয়ে মেয়েটির দিকে তাকিয়ে আছি। মেয়েটি কথা বলেই যাচ্ছে, বলেই যাচ্ছে, কোন ভ্রূক্ষেপ নেই তার। একা একটা রুম নিয়ে থাকার আর্থিক সামর্থ্য নেই আমার। কিন্তু তাই বলে এই ধরনের অতিরিক্ত কথা বলা উটকো টাইপের মেয়ের সাথে থাকতে হবে ভেবেই রাগে আমার গা রিরি করছে। সেলফোনটা হাতে নিয়ে কিছু না বলেই আমি ব্যস্ত ভঙ্গিতে ঘর থেকে বের হয়ে গেলাম। মেয়েটি আমার দিকে কিছুটা বিস্মিত হয়ে তাকিয়ে আছে। মেয়েটিকে অসহ্য লাগছে আমার।

*
দু’সপ্তাহ হয়ে গিয়েছে। ফারজানা নামের মেয়েটি আমার সাথেই থাকছে। আমার এই মেয়েটিকে আর সহ্য হচ্ছেনা। আমি প্রতিরাতে দুঃস্বপ্ন দেখলে বা ঘুমের মধ্যে কথা বললেই এই মেয়ের পাতলা ঘুম ভেঙে যায়। সে জেগে যায় আর শুধু তাই না সে আমার কাছে এসে আমাকে আয়শা আপা আয়শা আপা বলে ধাক্কা দিতে থাকে আর সূরা নাস ও আয়াতুল কূরসি পড়তে থাকে। আমি ঘুম ভেঙে শূন্য দৃষ্টিতে আমার ঘরের ছাদের দিকে তাকিয়ে থাকি। ফারজানা আমাকে পানি দেয়, মাথায় হাত বুলিয়ে দেয়। আমি কতদিন বলেছি আমার কাছে আসবে না। আমাকে এভাবে ধরবে না। আমি ঘুমের মাঝে যাই বলি না কেন তুমি তোমার মতো ঘুমাবে। নিজের বিছানা ছাড়বে না। কিন্তু এই মেয়ে কথা শুনে না। আমার ওকে জঘন্য লাগছে এখন। ওর বিনয়ী কথাবার্তা, আমার সাথে বেশি বেশি আন্তরিকতার ভাব দেখানো দেখলেই আমার গা জ্বলে ওঠে। এই মেয়ে চলে যায় না কেন? আমাকে আবার জিজ্ঞেস করে আমার কোন অসুখ আছে কি না? আমি চিকিৎসা করাবো কি না? এত্ত দরদ কীসের আমার জন্যে এই মেয়ের? আমার ভাল লাগেনা।
ফারজানার প্রিয় রঙ মনে হয় কালো আর নীল। প্রায়ই সে কালো রঙের নেইল পলিশ লাগায় হাতে। ওর বেশির ভাগ পোষাকের রঙ নীল বা কালো। এমনকি ওর চশমার ফ্রেমটাও কালো। ওর দিকে তাকালে আমার ওকে অশুভ অশুভ মনে হয়। একটা মানুষ সারাক্ষণ হাতে কালো নেইল পলিশ দিয়ে ঘুরবে কেন? নোংরা লাগে ওকে দেখতে আমার।

ওর বোধ হয় বয়ফ্রেন্ড আছে। প্রায় রাতেই ফোনে ও একটা ছেলের সাথে বারান্দায় বসে কথা বলে। এত কিসের কথা কারো সাথে? ত্রিশ চল্লিশ মিনিটের মত বকবক করেই যায়। রাতের বেলা ঘরের বারান্দার দরজা খুলে রাখা পছন্দ করি না আমি। এ বাসার বারান্দায় কোন গ্রিল নেই, খোলা বারান্দা। রাতের বেলা খোলা বারান্দার দিকে তাকালেই তো কেমন কেমন লাগে। অথচ এই মেয়ের জন্যে প্রতি রাতে ঘণ্টাখানেকের মত বারান্দার দরজা খুলে রাখতে হয়। মাঝে মাঝে বারান্দা থেকে ওর হাসির শব্দ আসে। রাগে গা কাঁপতে থাকে তখন আমার। চিৎকার করে ওকে বলতে ইচ্ছে করে, আই হেইট ইউ… আই হেইট ইউ… আই হেইট ইউ…

-আয়শা আপা, আপনি কি ভূত প্রেত অনেক ভয় পান?
-কেন? গম্ভীর হয়ে জিজ্ঞেস করলাম আমি।

-আপনাকে একটা খবর দেই, আজকে অফিসে লাঞ্চ টাইমে ইংল্যান্ড থেকে আসা এক বুড়ো লোকের সাথে অনেক গল্প করেছি। উনার কাছ থেকে জানলাম – ইংল্যান্ড এর সব থেকে ভৌতিক জায়গাগুলোর মধ্যে একটা হলো “Tower of london” ! ১০৭৮ এ এই টাওয়ারটি তৈরী করেন উইলিয়াম। এই পাথরের দেয়ালের পিছে অনেক মানুষ এর উপর চলত অত্যাচার, প্রাণদণ্ড, এবং কারাদণ্ড.. এটা যে শুধু দোষী সাজাপ্রাপ্ত আসামীদের জন্য ছিল তা না, এখানে অনেক ক্ষমতাশালী এবং নামকরা লোককেও আনা হত শাস্তি দেয়ার জন্য… এই সব নির্যাতিত মানুষদের আত্মা এখনো ঘুরে বেরায় এই টাওয়ারে। তাদের মধ্যে প্রায় দেখা যায় নানা মানুষের শিরচ্ছেদ করা আত্মা.. আশেপাশের মানুষ বলে তারা এখনো নানা মানুষের চিত্কার এবং আর্তনাদ শুনতে পায় দরজার পেছন থেকে।

-নানা মানুষের চিত্কার এবং আর্তনাদ শুনতে পায়? ভ্রু কুঁচকে প্রশ্ন করলাম আমি।

-হ্যাঁ, এখানে আরো দেখা যায় যে ১২ বছর বয়েস এর এবং তার ৯ বছর বয়স এর দুই ভাই এর আত্মা…এরকম আরো অনেক ধূয়ার মত ছায়া দেখা যায় এই টাওয়ারে। এই সব ঘটনার উপর চলেছে অনেক গবেষণা। পাওয়া গেছে অনেক প্রমাণ। অনেক অদ্ভুত রকমের আলো খুঁজে পাওয়া গেছে ভিডিও ফুটেজে। paranormal investigator বা আধিভৌতিক বিষয়ে যাদের আগ্রহ আছে তারা তাদের infrared camera, ই.এম.এফ মাপযন্ত্র, এবং আরো অনেক আধুনিক যন্ত্রের সাহায্যে অনেক গবেষণা করেছে। পেয়েছেন অনেক তথ্য যার কোনো ব্যাখ্যা বিজ্ঞান দিতে পারে নি।

-ওর কথা শুনে মনে হয় আমার প্রতি রাতে দুঃস্বপ্ন দেখার অভ্যাসটাকে ব্যঙ্গ করে এই গাঁজাখুরি গল্প শোনাচ্ছে ও আমাকে। আমার চোয়াল শক্ত হয়ে যায়। আমি থমথমে গলায় বললাম, এসব আমাকে বলছো কেন?

-আপু এত অদ্ভুত ঘটনা শুনলাম আর কাউকে বলবো না? এইটা কি সম্ভব বলুন? আর সবচেয়ে মজার একটা ঘটনা তো এখনো বলিই নি। এই টাওয়ারে একটা দাঁড়কাক আছে। ভদ্রলোক বললেন, প্রচলিত ঘটনায় বলা আছে যে এই দাঁড়কাক যদি কখনো এই টাওয়ার ছেড়ে উড়ে যায় তাহলে ইংল্যান্ড ধ্বংস হয়ে যাবে!হা হা হা… ফারজানা শব্দ করে হাসতে থাকে।

ফারজানার হাসির শব্দ আমার দেহের শিরায় উপশিরায় চলে যেতে থাকে। আমাকে নিয়ে ব্যঙ্গ করার জন্যে এই গল্প ফেঁদেছে এই মেয়ে? আমার ওকে খুন করে ফেলতে ইচ্ছে করছে। একদম খুন করে ফেলতে ইচ্ছে করছে…আমি নিজের ডান হাতে দিয়ে নিজের বাঁ হাতের তালু সর্বশক্তি দিয়ে খামচে ধরে রাখলাম। আমার অসহ্য ক্রোধ কাজ করছে…

*
অনেক মন খারাপ লাগছে আজ। বাসার সবার কথা মনে পড়ছে। রিটায়ার করার পর আম্মু আর আব্বু আমাদের গ্রামের বাড়িতে চলে গিয়েছেন। নতুন করে সেখানে দোতলা বাড়ি করে থাকছেন। আমি যে একটা মেয়ে হয়ে একা অন্য একটা শহরে বাস করছি তাতে মনে হত তাদের কিছু যায় আসে না। কিছু এসে গেলে নিশ্চয় তারাও আমার সাথে এখানে থাকতে আসতেন। আমাকে একা ছেড়ে দিতেন না। ফারজানা বারান্দায় গিয়ে চেয়ারে বসে বসে ওর আম্মুর সাথে গল্প করছে। ও মনে হয় লক্ষ্য করেছে যে আমার পরিবারের সাথে আমার তেমন একটা যোগাযোগ নেই। তাই ইচ্ছে করে রোজ আমাকে শুনিয়ে শুনিয়ে ওর মার সাথে গল্প করে। আমি আমার জীবনে এত বড় ক্রূর আর অসভ্য মেয়ে দেখিনি। আমার ইচ্ছে করছে ছুটে গিয়ে আমি ওর হাতের সেলফোনটা ছয়তলার বারান্দা থেকে ফেলে দেই। সেলফোনটা টুকরো টুকরো হতে দেখলে মনে হয় আমার শান্তি লাগবে। গতকাল রাতেও ফারজানা আমাকে দুঃস্বপ্নের মাঝে জাগিয়ে পানি খাইয়ে দিয়েছে। আমার মাথায় হালকা পানি ছিটা দিয়ে দিয়েছে। আমাকে ঘুম পাড়ানোর জন্যে আমার মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়েছে। ওর ন্যাকামি আর নকল অভিনয় দেখলে গা জ্বলে আমার। এত কিসের দরদ ওর আমার জন্যে? আমার তো ধারনা ও আসলে মনে মনে খুশি হয় আমাকে এমন খারাপ থাকতে দেখলে।

আমার আজকাল আর হলদে ডায়েরিতে কিছুই লেখা হচ্ছে না। দিনের বেলা আমি কাজে থাকি। আর বিকেল থেকে যখন ঘরে থাকি তখন ফারজানাও থাকে। আমার কেন জানি মনে হয় ফারজানা আমার ডায়েরি পড়েছে। মাঝে মাঝেও কেমন যেন অদ্ভুতভাবে আমার দিকে তাকায়। আর সেদিন সারা রাত আমার মাথার পাশে বসে থাকার পর থেকে ও আমাকে একজন ডাক্তারের সঙ্গে দেখা করাতে নিতে চেয়েছিল। আমি কি পাগল নাকি? আমাকে তো শারীরিক কোন সমস্যা নেই। আমার সমস্যা হল ফারজানা। আমার মনে হয় আমি চিৎকার করে বলি, আমার সমস্যা তুই। তোকে আমার সহ্য হয় না। আই হেইট ইউ… আই হেইট ইউ… আই হেইট ইউ…

ডাক্তার দেখাইনি বলে ফারজানা আমার মাথায় কাছে একটা ছোট পাঞ্জে সূরার বই রাখছে। ওর কি ধারনা রোজ রাতে আমাকে ভূতেরা স্বপ্ন দেখায়? যত্তসব রাবিশ। আমাকে আবার বলে আমার জন্যে নাকি ছোট্ট একটা কোরআন শরীফ এর তাবিজ এনে দিবে ও। তাহলে নাকি আমি আর দু:স্বপ্ন দেখবো না। এহহ…মিথ্যে করে কত ভালোমানুষিই না মানুষ দেখাতে পারে। আমি সত্যি বিস্মিত ওর অভিনয় আর মেকিপনার ধৈর্য দেখে।
-আয়শা আপু, মানুষের এই পৃথিবীতে এমন অনেক ঘটনাই ঘটে যার কোনো ব্যাখ্যা খুজেঁ পাওয়া যায়না। আর আমি অত সহজে কোনো কিছু বিশ্বাস করিনা বুঝলেন! আমি যুক্তিবাদী মানুষ।তবে সৃষ্টিকর্তার প্রতি বিশ্বাস রাখাটা আমাকে অনেক শক্তি দেয়।ধর্ম পালন করার চেয়ে ধর্ম থেকে ভাল দিকগুলো তুলে এনে তা বাস্তব জীবনে প্রয়োগ করা আমার কাছে বেশি গুরুত্বপূর্ন মনে হয়। আর আমার সাথে যে ঘটনাগুলো ঘটে আমি সব সময় সেগুলোর ব্যাখ্যা দাঁড় করানোর চেষ্টা করি কিন্তু বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই পারি না।আর যখন পারি না তখন সৃষ্টিকর্তার কাছে ছেড়ে দেই। এই ছেড়ে দেওয়ার অনুভূতি আমাকে শক্তি দেয়।

-তুমি এভাবে কথা বলছো কেন আমার সাথে? মনে হচ্ছে স্কুলের কোন টিচারের ক্লাস করছি। বিরক্ত হয়ে বললাম আমি।
-আপু, রাতের পর রাত সুস্থ বা স্বাভাবিকভাবে ঘুমাতে পারেন না। আপনি মানসিকভাবে সুস্থ থাকবেন কিভাবে? আপনি চাইলে নিজের চিকিৎসা করান কিংবা নিজের পরিবারের সাথে থাকুন কিংবা নিয়মিত নামাজ পড়ুন, কোরআনের আয়াত দেওয়া একটা তাবিজ রাখুন। আপনি নিজের বিশ্বাসের জন্যেই রেখে দেখুন। দেখবেন নিজের মনোবল বাড়বে। এভাবে দিন চলতে থাকলে আপনি মারা যাবেন আপু। আপনাকে প্রতি রাতে ছটফট করতে দেখলে কষ্ট লাগে আমার। আমি আপনাকে ভাল থাকা অবস্থায় দেখতে চাই। ফারজানা কোমলভাবে আমার হাত ধরার ভান করে। সাথে সাথেই ঝট করে মাথায় রক্ত চড়ে যায় আমার।

ঘুরে ফিরে ও আমাকে পাগল বানাতে চাইছে। আমি চলে গেলে এই ঘরে একা থাকবে আর সারা রাত ওই ছেলের সাথে ফোনে প্রেম করবে তাই আমাকে ফুঁসলিয়ে ফাঁসলিয়ে বাড়ি পাঠিয়ে দিতে চায়। কত বড় কুবুদ্ধি তার! বারান্দায় কথা বলে আর পোষায় না তার তাই এই ফন্দি?
আমি ওর সাথে আর কথা না বলে ঘর থেকে বের হয়ে আসি। আমাকে আমার ঘর থেকে বের করে দিতে চায় ও? আমাকে? এভাবে দিন চললে আমি মারা যাব? তুই মারা যাবি ফারজানা। তোকে মরতে হবে। আমাকে নয়। আমি ঠিকই আছি। একদম সুস্থ আছি। ছোটবেলার ওই দুঃস্বপ্ন দেখার অভ্যাসটা ছাড়া আমার আর কোনই সমস্যা নেই। আর কই এই দুঃস্বপ্ন দেখে তো আমার আর আগের মত ঘুম ভাঙে না। বরং তুই আমার ঘুম ভাঙ্গাস। তুই আমাকে যন্ত্রণা করিস। তুই, তুই, তুই……

*
আকাশে ভয়ংকর সুন্দর একটা চাঁদ উঠেছে। এতই ঝকঝকে পরিস্কার চাঁদ যে চাঁদের গায়ের দাগগুলোও অনেক স্পষ্টভাবে চোখে পড়ছে। আমি চাঁদের দিকে লোভাতুর চোখে তাকিয়ে আছি। আমার কেমন যেন মন খারাপ লাগছে। কিন্তু আসলে আমার মন আজ খারাপ নেই। আজ বিকেলে হঠাৎ করেই মনে হল আমার। এতদিন ধরে আমি কেন ফারজানাকে সহ্য করছি? আমি কেন এই ঘর থেকে চলে যাব? গেলে ও যাবে। ও সারাক্ষণ মানুষের সাথে ভালোমানুষির অভিনয় করে বেড়ায়। মানসিক সমস্যা থাকলে তা ওর নিজের আছে। ওর চিকিৎসার দরকার। আমার না। কোনোভাবে ওকে বের করে দিতে পারলে আমার এই ঘর শুধুই আমার থাকবে। আবারো বেশ অনেক দিনের জন্যে আমি একলা এই ঘরের মালিক হয়ে যেতে পারবো। আনন্দ লাগছে আমার। ভীষণ আনন্দ। আকাশের চাঁদটাও মনে হচ্ছে আমার আনন্দে চকচক করছে… আ হা।।

আনুমানিক রাত ৩.০০টা।সেলফোনে রিমাইন্ডার দিয়ে রেখেছিলাম। তাতে আমার আমার ঘুম ভেঙ্গে গেল।হঠাৎ করে ঘুম ভাঙ্গাতে আমি শূন্য দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছি ঘরের ছাদের দিকে। স্বপ্নে দেখছিলাম কে যেন আমার পেটে জোরে জোরে লাথি মারছে। আমার চোখ লাল; দু’চোখ যেন ঠিকরে কোটর ছেড়ে বেরিয়ে যাচ্ছে।আমি নিঃশ্বাস নিতে পারছিলাম না। মরে যাচ্ছি এমন একটা অনুভূতি হচ্ছিলো ।এমন সময় রিমাইন্ডারের শব্দে আমার ঘুম ভেঙ্গে গেল।ফারজানা ঘুমের মাঝে পাশ ফিরেছে। মনে হয় রিমাইন্ডারের শব্দে ওর পাতলা ঘুম আরও পাতলা হয়ে গিয়েছে। আমি চুপচাপ কিছুক্ষণ বিছানায় বসে থাকলাম। ফারজানা আজকে কালচে সবুজ একটা পোষাক পরে ঘুমিয়েছে। ওকে দেখতে কুৎসিত একটা কালো সাপের মত লাগছে। কিছুক্ষণ পর আমি শব্দ করে ঘরের মাঝে পায়চারি করতে লাগলাম। যা ভাবছিলাম তাই। ফারজানার ঘুম ভেঙে গেছে। ঝট করে বিছানায় উঠে বসল সে-আপু, আবার দুঃস্বপ্ন দেখেছেন? ঘুম জড়ানো ‘ফ্যাসফেসে’ কণ্ঠে বললো ও।

-হুম… প্রায় ফিসফিস করে বললাম আমি।

-আপু আয়াতুল কূরসি পড়ে ফুঁ দিয়ে দিব? পানি খাবেন? উদ্বিগ্ন হয়ে বলল ফারজানা।

-না, লাগবে না। আমার সাথে একটু বারান্দায় গিয়ে বসবে? ঘরে দম বন্ধ হয়ে আসছে। নিচু কণ্ঠে বললাম আমি।

-চলেন আপু। অবশ্যই। ফারজানা এসে সাবধানে আমার বাহু ধরে। আমার বুকের ভেতরে সাথে সাথেই ধক করে ওঠে। আকাশের সেই বিশাল চাঁদ উঠে আছে এখনো। মধ্য রাতের এই চাঁদের রঙ ফ্যাকাশে। চাঁদের দাগগুলো কি ভীষণ তীব্র আর স্পষ্ট হয়ে ফুটে আছে। আমি ফারজানার হাত ধরে এক পা দু’পা করে বারান্দার দিকে এগিয়ে যাচ্ছি। আর একটুখানি পথ। ওই তো বারান্দা চলে এসেছে। আমার ঘরের পাশের বিশাল বারান্দা, গ্রিল ছাড়া বারান্দা… ওই তো আর মাত্র কয়েক পা বাকি। আকাশের চাঁদটা কেমন যেন ঠা ঠা করে হাসছে। আমার বুকের স্পন্দন এতই বেড়ে গেছে যে মনে হচ্ছে পাশে থাকা ফারজানাও যেন যে কোন সময় শুনে ফেলবে।

– আপু, আপনি ঠিক আছেন? হাত কাঁপছে কেন আপনার? নরম কন্ঠে প্রশ্ন করে ফারজানা।
– জানিনা… খারাপ লাগছে কিছুটা। চলো, রেলিং এর পাশে গিয়ে দাঁড়াই।
ফারজানাকে নিয়ে আমি বারান্দার রেলিং এর পাশে দাঁড়িয়ে আছি। ফারজানা মুগ্ধ হয়ে ফ্যাকাশে চাঁদটাকে দেখছে…আর মাত্র একটা মুহুর্ত…তারপরেই আমার মুক্তি। তারপরেই আমার শান্তি…মধ্যরাতে গ্রিলহীন বারান্দা থেকে ঘুমের ঘোরে কোন তরুণী পড়ে যেতেই পারে, কিংবা প্রেমিকের সাথে ঝগড়া করে অভিমানী হয়ে কোন তরুণী আত্নহত্যাও করতে পারে। হা হা হা… তীব্র আনন্দে হাসি পাচ্ছে আমার… আমি নিঃশব্দে হাসছি… পাঁচ, চার, তিন, দুই, এক… আই হেইট ইউ ফারজানা …রিয়েলি আই হেইট ইউ…

—————————————————————————————
হঠাৎ করেই খুব ক্লান্ত লাগছে আমার। গা কাঁপছে। আমি ভেবেছিলাম ফারজানার না থাকাটাতেই আমার স্বাধীনতা, আমার মুক্তি… কিন্তু হঠাৎ করেই সবকিছু কেমন যেন শূন্য মনে হচ্ছে আমার…মনে হচ্ছে এখন কী করবো আমি? এরপর কী? বুকের ভেতর হাহাকার জেগে উঠেছে আমার মধ্যে, অসম্ভব মন খারাপ লাগছে আমার… অসহিষ্ণু হয়ে চিৎকার করে বলে উঠলাম আমি… “এই পৃথিবীতে মন খারাপ করে থাকার ব্যাপারটা ভীষণ অদ্ভুত। কোন এক সময় তোমার নিজেকে নিয়ে খুব ক্লান্ত লাগবে। আর তুমি বুঝবে তোমার মন খারাপ হয়ে গিয়েছে। এই পৃথিবীতে মন খারাপ করে থাকার ব্যাপারটা আসলেই ভীষণ অদ্ভুত… আর ভীষণ নিষ্ঠুর”

মধ্যরাতের ফ্যাকাশে চাঁদ তার রঙ ছড়িয়ে দিচ্ছে পূর্বাকাশে। বহুতল ভবনের এক ছোট্ট রুমে একজন তরুণী উন্মাদের মত কাঁদছে…আজ তার বড্ড মন খারাপ…

অটঃ সরবে কম্পু থেকে ফটো আপোলোড দেয় কীভাবে? সাহায্য চাই। 🙁

একুয়া রেজিয়া সম্পর্কে

আকাশ তো ছুঁইনি, কিন্তু আকাশের মাঝে তো মেঘ হয়ে ভেসে আছি... বেঁচে আছি, দিব্যি জেগে আছি। রোদকে আমায় ভেদ করে স্পর্শ করতে দিচ্ছি...এই তো আমি....এই তো জীবন...আর বাঁচার সেকি আনন্দ...
এই লেখাটি পোস্ট করা হয়েছে গল্প-এ। স্থায়ী লিংক বুকমার্ক করুন।

22 Responses to আত্মপ্রতিকৃতি

  1. সামিরা বলেছেনঃ

    স্পেলবাউন্ড!
    আর কিছু বললাম না।

  2. মাধবীলতা বলেছেনঃ

    একুপ্পি, তোমার লেখা আর লুনা আপির লেখা আমার ভয়ানক ভালো লাগে! অসাধারণ একটা গল্প। উপক্রমণিকাটা এত্ত এত্ত আপন করে লিখলা কেমনে?

    “এই পৃথিবীতে মন খারাপ করে থাকার ব্যাপারটা ভীষণ অদ্ভুত। তুমি যখন দূর্বল থাকবে তখন মানুষ তোমাকে আগাছা ভেবে মাড়িয়ে চলে যাবে, আবার তুমি যখন নিজের শক্তিটুকু নিয়ে উঠে দাঁড়াতে চাইবে তখন তারা তোমাকে হিংসা করবে, তোমাকে মনে করিয়ে দেবে তুমি ক্ষুদ্র, তুমি তুচ্ছ, তোমার মত আগাছার কোন প্রয়োজন নেই, এমনকি কখনো ছিলও না। আবার তুমি যদি খুব অন্যরকম কেউ হও, খুব সাহসী কেউ, যে স্বপ্ন দেখতে ভালবাসে, যে অনেক রাতে হাসনাহেনা ফুলের ঘ্রাণ পেলে আনন্দে অভিভূত হয়ে যায়, যে মাথা উঁচু করে বাঁচতে চায় তখন মানুষগুলো তোমাকে বোকা বলবে তোমাকে কল্পনাবিলাসী বলে উপেক্ষা করবে আর ভাববে তুমি খুব অহংকারী। এক সময় তোমার নিজেকে নিয়ে খুব ক্লান্ত লাগবে। আর তুমি বুঝবে তোমার মন খারাপ হয়ে গিয়েছে। এই পৃথিবীতে মন খারাপ করে থাকার ব্যাপারটা আসলেই ভীষণ অদ্ভুত…” :huzur: :beshikhushi:

    অফটপিকের প্রবলেমটা আমিও ফেইস করেছি। 🙁

    • একুয়া রেজিয়া বলেছেনঃ

      লুনা আপি কে লুনা রুশদি আপি নাকি?
      উনার লেখা তো অসম্ভব ভালো পাই আমি 🙂
      *** তোমার নাম দেখলেই পুরনো বাংলা একটা গান মনে হয়- মধুমালতি ডাকে আয়” 🙂

      • মাধবীলতা বলেছেনঃ

        হ্যাঁ লুনা রুশদী আপুই… 😀

        লতা মঙ্গেশকারের এই গানটা আমারও ভালো লাগে। ছোটবেলায় আমাদের দুইবোনের নাম মাধবী আর মালতী রাখার চিন্তা করেছিল, ডাকাডাকিও শুরু হয়েছিল, পরে আর রাখে নি কেন জানি। :happy:

        আর আমার এই নাম কালবেলার মাধবীলতার প্রতি ট্রিবিউট। 🙂

  3. ফিনিক্স বলেছেনঃ

    অসাধারণ আপু!

    বেশ অনেক দিন আগে সুচিত্রার একটা ছোট গল্প পড়েছিলাম। আপনার এই থিমের সাথে সেটার ভীষণ মিল খুঁজে পেলাম। মানুষ যে কখনো কখনো ঘৃণাকেও ভালোবেসে মিস করতে শুরু করে এটা প্রথম সুচিত্রার গল্প থেকেই এতটা স্পষ্ট বুঝতে পেরেছি।

    তাছাড়া আমাকে ঘৃণা করে এমন মানুষদের তো জানি। বেচারারা ঘৃণাও করে আবার সারাক্ষণ আমি কী করছি, কী না করছি তা জানার জন্য উদগ্রীবও থাকে।
    বড্ড মায়া আর করুণা হয় আমার ওদের জন্য!
    এতটা ঘৃণা মনের মাঝে পুষে রেখে কী অসহায়ভাবেই না মানুষ ছটফট করে! তবু সেই ঘৃণার সমাপ্তি তাদের বিন্দুমাত্র শান্তি দিতে পারে না!
    এ এক অসম্ভব কষ্টের বেড়াজাল!

    • ফিনিক্স বলেছেনঃ

      ওহ, ছবি যোগ করার ব্যাপারে বলতে ভুলে গেছি আপু!

      লেখার বক্সটার উপরে ‘ইনসার্ট ইমেজ, ভিডিও’ এই অপশনগুলো আছে। ক্লিক করলেই সরাসরি পিসি থেকে ছবি আপ দেয়া যায়। সরবে ছবি, ভিডিও যোগ করা কিন্তু খুবই সোজা আপু। 🙂

    • একুয়া রেজিয়া বলেছেনঃ

      দারুন বলেছ। মানুষ যাকে ঘৃনা করে তাকেই আবার বার বার অনুসরণ করে। কী অদ্ভুত তাই না? তবে ঘৃনা কিংবা প্রতিহিংসা কখনোই এন্ড অদ দ্য ডে তে সুখ আনতে পারে না।

  4. বোহেমিয়ান বলেছেনঃ

    দারুণ আপু!

    গল্পের বুননটা খুবই ভালো লেগেছে। কোথাও মেদ নাই এমন।

    টিউটোরিয়াল অপশন আছে কিন্তু 😀

  5. নোঙ্গর ছেঁড়া বলেছেনঃ

    লেখা এত সুন্দর কেন হবে!!

    তন্ময় হয়ে লেখাটা পড়লাম। একুয়া আপুর লেখাতে কমেন্ট করতে সাহস পাইনা।
    ইশশ! খুব সুন্দর লেখনী, দারুণ শব্দচয়ন আর শব্দের ঝর্ণাধারা!!

  6. শারমিন বলেছেনঃ

    অসাধারণ আপুনি 😀

  7. ইঁদুর বলেছেনঃ

    বাহ খাসা।=)

  8. মাশুদুল হক বলেছেনঃ

    আহেম, পড়লাম আপু।

    শেষের দিকে আন্দাজ করতে ছিলাম এইটাই করবো যে।
    পরিবেশ বর্ণনায় মুগ্ধ 🙂

  9. আপনার লিখাগুলো বরাবরই খুব বেশি আপন ধরণের লাগে আপু, মনে হয়, এই এমন করে কখনো বলার কথা ছিলো আমার, আমি পারি নি, অন্য কেউ বলে দিয়েছে, কল্পনা করতে পারি নি এমন কিছু একটা হবে শেষে এসে……

    ঘৃণা আর ভালোবাসার মাঝে নাকি এক চিলতে তফাৎ, কোথায় জানি পড়েছিলাম, মানুষ যাকে ভয়ংকর ভালোবাসতে পারে তাকে ভয়ানক ঘৃণাও করতে পারে, হঠাৎ করে মনে পড়লো আবার!

    মন খারাপ করা লিখা, অনেকটা সে কারণেই কেন জানি বিশাল ধরণের ভালো লেগেছে লিখাটা!

    • একুয়া রেজিয়া বলেছেনঃ

      শৈশব আপনার মন্তব্য পড়ে মুগ্ধ হলাম 🙂 ধন্যবাদ।

      অটঃ ব্যানার শিল্পীদের সব সময়ই অসম্ভব ক্রিয়েটিভ মনে হয় আমার কাছে, সরবের সবগুলো ব্যানারই খুব ইউনিক। আপনার জন্যে তাই বেশি বেশি শুভকামনা। 🙂

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।