মক্কার মানুষ নাকি হজ্ব করতে পারে না। আমাদের অবস্থা হয়েছে সে রকম। সারা দেশ থেকে অ্যাডভেঞ্চার প্রিয় মানুষেরা যখন মৌলভিবাজারের রাজকান্দি বনে তিন ঘন্টা ট্র্যাকিং করে হামহাম জলপ্রপাত দেখে আসছে আমরা তখন খোদ সিলেটে বসে আঙ্গুল চুষছি। ফেসবুকে, ব্লগে, পত্রিকায়, টিভিতে বীরদের সেই বীরত্বগাঁথার সচিত্র বর্ণনা দেখে আমরা ৫ স্কুল বন্ধু এই সিদ্ধান্তে উপনীত হই যে, সড়ক দূর্ঘটনায় মৃত্যুবরণ করে মেধাবী ছাত্র হওয়ার আগে আমাদেরও বাড়ির কাছের এই ঝর্ণাটা দেখে আসা উচিত।
আজ যাব কাল যাব করতে করতে চলে আসে রমজান মাস। রোজা রেখে জঙ্গলের মধ্যে ৬ ঘন্টা ট্র্যাকিং করার সাহস আমরা কেউ দেখালাম না। ঠিক হলো ঈদের ছুটিতেই আমরা হামহাম যাচ্ছি। ঈদের দিন সন্ধ্যায় নিসর্গের ট্যুরিস্ট গাইড শ্যামল ত্রিপুরাকে ফোন দিয়ে জেনে নিলাম প্রয়োজনীয় তথ্যাদি। তার কথামত আমরা ঈদের দ্বিতীয় দিন রাতে সিলেট থেকে শ্রীমঙ্গলের উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম।
শ্রীমঙ্গলে যখন পৌছালাম রাত তখন ১০টা। গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি হচ্ছিল। বাস থেকে নেমেই দেখি আপেল মামা তিনটা ছাতা হাতে দাঁড়িয়ে আছেন। বাস স্ট্যান্ডের পাশেই মামার বাসা। বাসায় গিয়ে দেখি মামী আমাদের জন্য টেবিলে রাতের খাবার সাজিয়ে ফেলেছেন। খাওয়া শেষ করে ঘুমানোর প্রস্তুতি নিলাম। পরের দিন ভোর সাড়ে ৪ টায় উঠতে হবে ঘুম থেকে। জীপ বাসার সামনে আসবে ভোর পৌনে ৫ টায়। সারাদিনে বনের মধ্যে হাঁটতে হবে প্রায় ৬ ঘন্টা। তাই ঘুমানোটা বেশ জরুরি। কিন্তু এর আগে যতবার আমরা একসাথে রাত কাটিয়েছি কোনবারই দেড়-দুই ঘন্টার বেশি ঘুমাতে পারি নাই। এইবারও এর ব্যতিক্রম হয় নাই।
ভোর ৪.৩০ মিনিটে একসাথে ৫টা মোবাইলে ৫ ধরণের অ্যালার্ম বেজে উঠল। সে এক বিচিত্র সুর মূর্ছনা। আমরা হাতমুখ ধুতে না ধুতেই শ্যামল ত্রিপুরা ফোন করল, সে জীপ নিয়ে বাসার গেটের সামনে অপেক্ষা করছে। ভোর ৫.১৫ মিনিটে জীপ আমাদের নিয়ে যাত্রা শুরু করলো। ছোট্ট শহর শ্রীমঙ্গল পার হয়ে বাংলাদেশ চা গবেষণা ইনস্টিটিউট ও লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান কে পাশ কাটিয়ে আমাদের জীপ ঢুকে পড়ল একটি চা বাগানে। রাস্তা কখনো পিচ ঢালা কখনো শুধু ইট বিছানো কখনোবা মাটির।
একে একে পার হয়ে আসলাম ছবির মত সুন্দর বেশ কয়েকটা চা বাগান। জাহানারাপুর চা বাগান, মাধবপুর চা বাগান, শ্রী গোবিন্দপুর চা বাগান, কুড়মা চা বগান। ছোট ছোট পাহাড়ের গায়ে চা বাগান ছাড়াও কয়েকটি সুপারি বাগান ও আনারসের জুম চাষও দেখেছিলাম। এর আগে বেশ কয়েকবার শ্রীমঙ্গল-ভানুগাছ-কমলগঞ্জে আসায় দৃশ্য গুলো ছিল পরিচিত। কিন্তু তবুও কেন জানি উঁচু-নিচু সবুজের বিছানায় একমনে তাকিয়ে থাকতে ইচ্ছে করে। বিশেষ করে মাধবপুর চা বাগান পাড়ি দেবার সময় সূর্যোদয়ের দৃশ্যটি আমার জীবনের একটি সেরা স্মৃতি হয়ে থাকবে।
কুড়মা বাজারে সকালের নাস্তার জন্য আধাঘন্টার বিরতি শেষে আবারো জীপে চড়ে বসলাম। জীপ এবার ঢুকল চাম্পারায় চা বাগানে। সকাল ৮টায় আমরা পৌছালাম কলাবন গ্রামে। চা শ্রমিকদের ছোট্ট গ্রাম কলাবন। কলাবন গ্রামের শেষপ্রান্ত থেকে রাজকান্দি সংরক্ষিত বনের এলাকা শুরু। এই বনের মধ্যেই হাঁটতে হবে আড়াই থেকে তিন ঘন্টা। তারপর দেখা মিলবে হামহাম জলপ্রপাতের। কলাবন গ্রাম থেকে আমদের সাথে যোগ দিল সুরজিৎ ত্রিপুরা। সেই আমাদের পথ দেখিয়ে নিয়ে যাবে। শ্যামল ত্রিপুরা লাউয়াছড়া পর্যন্ত আমদের সাথে ছিল। সুরজিৎকে নিয়ে আমরা ৫ বন্ধু ঢুকে পড়লাম রাজকান্দি বনে।
সুরজিতের হাতে ছিল একটি রামদা। বনে ঢোকার সাথে সাথেই সে আমাদের সবার হাতে বাঁশের লাঠি ধরিয়ে দিল। বাঁশের লাঠিটি উঁচু নিচু পথে ব্যালেন্স করার জন্য আর ছড়া(পাহাড়ি খাল) বা ঝিরিপথে পানির গভীরতা এবং বাঁশ ও পাথরের উপস্থিতি জানার জন্য।
রাজকান্দি বনে ঢুকে প্রথমেই স্বাগত জানাল বেত বন। এই ঘন বেত বন দিয়ে যাওয়া বেশ ঝক্কি-ঝামেলার ব্যাপার। বেতের কাঁটায় বারবার আমদের জামা আটকে যাচ্ছিল। সুরজিৎ রামদা দিয়ে বেতের ডাল কেটে কেটে আমাদের জন্য রাস্তা করে দিচ্ছিল। আমার আরেক বন্ধু সঞ্জীব দে সঙ্গে করে একটি ধারাল চাকু নিয়ে এসেছিল। সেও সুরজিতের সাথে সাথে বেতের ডাল কাটছিল। আগের রাতে প্রচণ্ড বৃষ্টি হওয়ায় মাটিতে পা দিলে পা গোড়ালি পর্যন্ত দেবে যাচ্ছিল। আমদের ৫ বন্ধুর মধ্যে শুধু বিপুল সিংহ ট্রেইনার পড়ে এসেছিল আর আমরা বাকি ৪ জন সাধারণ জুতো। সবার জুতো ততক্ষণে কাদায় মাখামাখি। বিপুলের ট্রেইনারের ভিতরও কাদা ঢুকে পড়েছে। উপায় না দেখে সবাই জুতো হাতে নিয়ে নিলাম। এবার শুরু হলো নতুন ঝামেলা। কাদায় পা দিলেই কাদার নিচে লুকিয়ে থাকা বেতের ডালের কাঁটা পায়ে লাগছিল। বেতবনকে বিদায় জানানোর সাথে সাথেই সামনে হাজির হলো একটি ছড়া। রাজকান্দিতে ঢোকার সময়ও একটি ছড়া পার হতে হয় কিন্তু সেখানে দুইটা গাছের কান্ড রাখা ছিল। কিন্তু এখানে পানিতে নেমে ছড়া পার হতে হবে। হাটু পানি ভেঙ্গে আমরা ছড়া পার হলাম। ছড়া থেকে উঠার সময় বন্ধু আলমগীর পিচ্ছিল জায়গায় পা দিয়ে আবার ছড়ার মধ্যে পড়ে যায়। পুরো রাস্তায় সে বেশ কয়েকবার আছাড় খেয়ে পড়ে। আমিও দুইবার খাই।
বেতবন পার হবার পরে কিছুদূর বনের ঘনত্ব কিছুটা কম। পায়ে হাটা ছোট্ট পথ দিয়ে আমরা সামনে এগুতে থাকি। সুরজিতের সাথে কথা বলে জানতে পারি। বনের ভিতরে তারা খুব একটা যায় না বন্য প্রাণীর উৎপাতে। তবে ট্যুরিস্টরা যে পথ ব্যবহার করে সেখানে বন্য প্রাণীরা এখন আর আসেনা। বন্য প্রাণীর মধ্যে এই বনে আছে ভাল্লুক, বন্য শূকর, অজগর, বানর, উল্লুক। কয়েকটা চিতাবাঘও নাকি আছে।
আমরা এবার নেমে পড়লাম ছড়ায়। এই ছড়ার পানি আসছে হামহাম ঝর্ণা থেকে। তাই এই ছড়া ধরে চলে গেলেই হামহাম ঝর্ণা পাওয়া যাবে। ছড়ার বেশির ভাগ জায়গায় হাটু পানি। পানির মাঝ দিয়ে হাঁটার সময় তৈরি হওয়া ছোট্ট ছোট্ট ঢেউ দুই পাশের পাড়ে ধাক্কা লেগে অদ্ভুত এক শব্দ করছিল। নদীর পানি পাড়ে আছড়ে পড়ে যেমন শব্দ করে ঠিক তেমন না অন্যরকম একটা শব্দ। কানে আসছিল নাম না জানা পাখি এবং পতঙ্গের ডাক। ছড়ার দুই পাশে ঘন বন। যতই সামনে এগুতে থাকি বনের ঘনত্ব বাড়তে থাকে। একপাশে কলাবন আরেকপাশে বাঁশবন। যদিও লোকজন কলা খাওয়ার জন্য এদিকে পা বাড়ায় না।
আমদের ৫ জনের মধ্যে ২ জনের কাঁধে ব্যাগ ছিল তাতে ছিল শুকনো খাবার, পানি, মোবাইল, ক্যামেরা । আর দুই জনের হাতে ছিল পলিথিন তাতে ছিল সবার জুতো।কলাবন পর্যন্ত এসে সেই পলিথিন যায় ছিড়ে। আবার সবাই যার যার হাতে জুতো গুলো নিয়ে নেয়। কিন্তু এক হাতে জুতো নিয়ে পথ চলা বেশ ঝামেলা হচ্ছিল তাই আমরা হাতের জুতো গুলোকে কলা গাছের বাকল দিয়ে কোমরে বেঁধে নেই। কলাবন একসময় শেষ হয়ে গেল। এখন ছড়ার দুই পাশে উঁচু উঁচু গাছ আর বাঁশঝাড়। রাজকান্দির বনের ধরণ অনেকটা লাউয়াছড়া আর সাতছড়ির বনের মত। আমরা এগুতে থাকি ছড়ার পানি ভেঙ্গে। যেখানে ছড়ার পানির গভীরতা বেশি বা নিচে বাঁশ আছে সেখানে আমরা ছড়ার পাড় দিয়ে যাচ্ছিলাম এবং আলমগীর যথারীতি আছাড় খাচ্ছিল।
একঘণ্টার মতো হাঁটার পর ছড়ার দুই পাশের পাথুরে পাহাড় আস্তে আস্তে খাড়া হয়ে গেল। আর ছড়াতে বাড়তে থাকল বড় বড় পাথরের উপস্থিতি। এখানে ছড়ার পাড় বলে কিছু নেই। পাথুরে পাহাড়ের কার্ণিশ ধরে ধরে আমরা সামনে এগুতে থাকি। জায়গাটাও বেশ অন্ধকার। একসময় সামনে থাকা ফারহান চিৎকার দিয়ে উঠল। দ্রুত সামনে এগিয়ে আমিও গলা ফাটিয়ে এক চিৎকার দেই। অপূর্ব সুন্দর এক শৈলপ্রপাত আমাদের সামনে। চলল ক্লিক ক্লিক ফটোসেশন।
শৈলপ্রপাতটি পাড় হয়ে এগুতে থাকি আমরা। কোথাও সরু গিরিখাত। অন্ধকার চারপাশ। কোথাও কিছুটা খোলামেলা। সবুজের উপর আলো ঝলমল পরিবেশ।
কিছুদূর এগুনোর পরে আবার সামনে হাজির হয় আরেকটি শৈলপ্রপাত। শৈলপ্রপাতের সামনে এসে আবার আছাড় খায় আলমগীর। এবার আমরাও তার পাশে বসে পড়ি। হাত মুখ ধুয়ে নেই। সবাই দেখে নেয় কারো গায়ে জোঁক লেগেছে কিনা। টানা দুই ঘন্টা হাঁটার পর আমরা একইসাথে ক্লান্ত ও ক্ষুধার্ত। সঙ্গে আনা বিস্কুট ও পানি দিয়ে নাস্তা করলাম। অবশ্য শুরু থেকে এখন পর্যন্ত সবার মুখেই চকলেট, চুয়িংগাম, ম্যাঙ্গোবার সবসময় কিছু না কিছু ছিল।
নাস্তা শেষ করে সামনে দেখি ছড়ার এর পরের অংশে কোমর সমান পানি। এখন কি এই দিক দিয়ে যেতে হবে কিনা সুরজিৎকে সেটা জিজ্ঞেস করতেই সে হাতের ডান দিকে একটা খাঁড়া টিলা(ছোট পাহাড়) দেখিয়ে বলল এই দিক দিয়ে যেতে হবে। আমদের কোন সমস্যা না হলেও আলমগীর একটু ভয় পাচ্ছিল। আমি, ফারহান আর সুরজিত ওকে প্রায় টেনেই তুলি। সঞ্জীব আর বিপুলের কাঁধে ব্যাগ থাকায় ওরা একা একা উঠছিল। টিলাটার নাম মোকাম টিলা। গাছ বলতে শুধু বাঁশ। তবে জোঁকের জন্য ভালো নামডাক আছে। টিলায় উঠলে জোঁক ধরবে এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু আশ্চর্যজনক ভাবে আমাদের কারো পায়ে বা গায়ে জোঁক ধরেনি শুধু আমার পায়ে ছোট সাইজের একটা আর বেচারা আলমগীরের পায়ে বেশ বড় সাইজের দুইটা জোঁক ধরে।
টিলা থেকে নামার পথেও বেচারা……….. না থাক ওর কথা আর বলবনা। মোকাম টিলা থেকে নেমে আবার ছড়া ধরে হাঁটা শুরু হলো। ছড়ার মাঝে বড় বড় পাথর। দুই পাশে খাঁড়াউঁচু টিলা। টিলার মধ্যে ঘন জঙ্গল। একপাশের টিলার একটি গাছ আরেকপাশের টিলার উপর পড়ে ওভারব্রিজের মতো তৈরি করেছে। কয়েকটা বানর এই গাছ থেকে ঐ গাছে লাফিয়ে আমাদের সাথে এগুচ্ছিল। বানরের দিকে তাকিয়ে হাঁটতে গিয়ে এবার পা হড়কে পড়ে গেলাম আমি। বানর গুলো আমার দুর্দশা দেখে আমাদের পিছু নেয়া ছেড়ে দিল। এই জায়গায় হাঁটা বেশ কষ্ট সাধ্য ব্যাপার ছিল। কারণ পুরো ছড়া জুড়ে ছিল বড় বড় সব পাথর। শ্যাওলা জমে সেগুলো পিচ্ছিল হয়ে ছিল। লাঠি দিয়ে ভালভাবে গভীরতা ভালোভাবে না বুঝে পা দিলেই হয়ত দুইটা বড় পাথরের ফাঁকে পুরো পা একবারে ঢুকে যাবে। জায়গাটা ছিল অসম্ভব রকম সুন্দর। যদিও ছবি তোলার কথা আমরা একদম ভুলে গিয়েছিলাম।
মোকামটিলা থেকে নেমে ৪৫ মিনিট ছড়া দিয়ে হাঁটার পর হঠাৎ করে দুই পাশের পাহাড়দুইটা যেন দুই দিকে সরে গেল। আমরা সবাই একসাথে চিৎকার করে উঠলাম হামহাআআআআম। পিচ্ছিল পাথরের কথা ভুলে দিলাম দৌড়। ঝর্ণার সামনে এসে দুই মিনিট সবাই চুপচাপ। কান পেতে শুনছিলাম উঁচু পাথুরে পাহাড় থেকে পানি পড়ার শব্দ। উপভোগ করছিলাম আনকোরা এক সৌন্দর্য। তারপর আবার সবাই একসাথে হৈ হৈ করতে করতে ঝাঁপিয়ে পড়লাম হামহামের পানিতে গোসল করতে।
শুরুর কয়েকটা ছবি দেখা যাচ্ছে না। ফ্লিকারে পারমিশন নিয়ে সমস্যা কীনা বুঝতে পারছি না।
দারুণ হিংসে হচ্ছে!
চমৎকার অভিজ্ঞতা!
সিলেট সেই কবে গিয়েছি!
এখন দেখেনতো……..
হ্যা! দেখা যাচ্ছে! 😀
😀
বোহেমিয়ান ভাইকে সিলেট আসার আমন্ত্রণ 😀
সুপাঠ্য!
আর জায়গাটা এত সুন্দর! যেতে ইচ্ছে করছে। 🙂
জায়গাটা সুন্দর এবং কিছুটা বিপদজনকও বটে।
তবে ভালো মতো খোঁজ-খবর নিয়ে গেলে যে কেউ সহজেই দেখে আসতে পারবে। 🙂
আমি যাবোওওওওও…………
চমৎকার বর্ণনা……… :clappinghands:
শুষ্ক মৌসুমের আগেই ঘুরে আসুন। শুষ্ক মৌসুমে ঝর্ণায় পানি কম থাকে। আমরা পুরো সময়টা দারুণভাবে উপভোগ করেছি। আশা করছি আপনিও করবেন। 🙂
ইইইই! কত্ত মজা করসেন! হিংসা আর হিংসা!!
হিংসা করে লাভ নেই। সময় ও সাহস করে ঘুরে আসুন একবার। দেখবেন সব হিংসা তরলীভূত হয়ে গেছে 🙂
পোস্ট টা ভালো লাগলো।
লেখক লিখতে জানেন, বুঝা গেলো।
যাওয়ার ইচ্ছা আছে, ইনশাআল্লাহ। শীতে গেলে কেমন হয়? জানুয়ারির দিকে?
পোস্ট ভালো লেগেছে জেনে আনন্দিত 🙂
শীতে গেলে খুব সহজেই যেতে পারবেন। ছড়ায় পানি কম থাকবে, টিলাগুলো পিচ্ছিল কম থাকবে, জোঁকের উৎপাত কম থাকবে কিন্তু হামহাম ঝর্ণায় তখন পানিও কম থাকবে। তাই আমার পরামর্শ হলো বৃষ্টি-বাদলের দিনে গেলে কষ্ট একটু বেশি হবে কিন্তু বনে, ছড়ায় এবং ঝর্ণায় অনেক বেশি উপভোগ করতে পারবেন।
শেষের ছবিটা হৃদয় কাঁপানো সুন্দর!
বড় ভাল লাগল পড়ে। লাউয়াছড়ার বনে আমরা ক’জন বন্ধু একবার হারিয়ে গিয়েছিলাম। ওই জায়গাটা স্বর্গীয় ছিল! আমার বিশ্বাস এই জায়গা টাও সেরম।
বাঁশ যে কি বড় বন্ধু, ওখানে গিয়ে বুঝেছিলাম, জুতার বাছাই বুঝে করতে হয় আসলেই। বেত বনের কথা মনে হতেই বীভৎস স্মৃতিটা মনে পড়লো। আমার বাম হাতটা প্রায় এক সপ্তাহ অকেজো হয়ে গিয়েছিল বেতের কাটা ফুটে। 🙁
পুরানো সুন্দর স্মৃতিটা মনে করানোর জন্য ধন্যবাদ মুবিন
আমার পোস্ট পড়ে কারো পুরনো স্মৃতি মনে পড়েছে জেনে ভালো লাগছে 🙂
লাউয়াছড়ার বনে আমরা এই ৫ বন্ধুই গিয়েছিলাম এসএসসি পরীক্ষার পর। এরপর আরো ২ বার গিয়েছি। লাউয়াছড়ায় ট্র্যাকিং করা আর রাজকান্দিতে ট্র্যাকিং করার মূল পার্থক্য হলো, লাউয়াছড়ায় ট্রাকিংএর সম্পূর্ণটাই ছিল সমতল বনের মধ্যে পাহাড়, টিলা কিংবা ছড়ার মধ্যে না শুধু একঘন্টার ট্রেইলের শেষ দিকটা এবং তিন ঘন্টার ট্রেইলের কিছু অংশ বাদে। রাজকান্দিতে আপনার পুরো সময়টা কাটবে পাহাড়, টিলা আর ছড়ার মধ্যে। আবার লাউয়াছড়ায় পর্যটকদের জন্য বন বিভাগ রাস্তা করে দিয়েছে, কাঠের সাঁকো করে দিয়েছে। এদিকে হামহাম যাওয়ার রাস্তাটা অনেক বেশি বন্য।
তাই বনের ধরণ একরকম হলেও দুই জায়গায় দুই রকমের থ্রিলিং।
পোস্টটা খুলে প্রথম ছবিটা দেখেই কুপোকাত হলাম… এত্ত সুন্দর!!! 😯
বর্ণনাও ছবির সাথে পাল্লা দিয়ে অসাধারণ হয়েছে :clappinghands:
জীবনে যেন একবার ওখানে যেতে পারি [প্রার্থনার ইমো]
ছবি ভালো তুলতে পারি না 🙁
জায়গাটা আমার পোস্টের ছবিগুলো থেকেও অনেক অনেক সুন্দর।
শুধু প্রার্থনায় কাজ হবে না। সময় আর সাহস করে বেড়িয়ে পড়ুন 🙂
অসাধারণ, অসাধারণ! হামহামের পানির সমান হিংসা দিলাম আপনাকে! 🙄
আছাড় ভাইয়ার জন্য সমবেদনা। 😛
“বানর গুলো আমার দুর্দশা দেখে আমাদের পিছু নেয়া ছেড়ে দিয়ে দিল। এই জায়গায় হাঁটা বেশ ক ষ্ট সাধ্য ব্যাপার ছিল।”
এই দুটো লাইনের খাপছাড়া স্পেসটা শুধু আমারই দেখার ভুল কিনা বুঝতে পারছি না। 😐
তবে ‘ছেড়ে দিয়ে দিল’ না হয়ে বোধহয় ‘ছেড়ে দিল’ বললে মন্দ লাগত না। 😉
জোঁকের কামড় খেতে কেমন?
সবাই এভাবে হিংসা দিলে তো আমি হিংসায়িত হয়ে যাব। 🙁
আছাড় ভাইয়ার কাছে আপনার সমবেদনা পৌছে দিলাম। বেচারা সরবে সাইন আপ করার অপশন খুঁজছে 😀
ভুল গুলো শুধরে নিলাম।
জোঁকের কামড় খেতে কেমন……….. না খেলে বুঝা যাবেনা 😀
অপশন খুঁজে পেলে হয়তোবা প্রথমে আমাকে আছাড় মেরে বসবেন! 😛
আমার জোঁক জিনিসটা কেমন যেন ভয় ভয় লাগে। মনে হয় একবার কামড়ে ধরলে আর বোধহয় ছাড়বে না। একগাদা লবণ না দিলে রক্ত শেষ হওয়া পর্যন্ত খেতেই থাকবে, খেতেই থাকবে! আপনি কি সাথে করে লবণ নিয়ে গিয়েছিলেন? ঐ কামড়ের জায়গাটার এখন কী অবস্থা? ওটা কি মশার কামড়ের মত পরে আবার খুব চুলকায়? জোঁকের কামড় নিয়ে আমার মনে অনেক প্রশ্ন! থিসিস করে ফেলা যাবে। :virgo:
লবণ, স্যাভলন, কটন, গজ সবই নিয়ে গিয়েছিলাম।
কামড়ের জায়গাটা এখন স্বাভাবিক। কিছুই বুঝা যাচ্ছে না।
জোঁক কামড় দিলে ওর চোষক থেকে এক ধরণের লোকাল অ্যানেস্থেটিক এজেন্ট বের হয় এজন্য কিছুই টের পাওয়া যায় না। তবে জোঁক ছাড়ানোর পর বেশ কিছু সময় রক্ত পড়ে। এর বেশি কিছু না। 80
ইশ! এখনো দেখা হইলো না চক্ষু মেলিয়া, ঘর হইতে দুই পা ফেলিয়া! 🙁
সিলেটে গিয়েছিলাম। তবে মাত্র একদিনের সফরে। তাই এত্ত সুন্দর জায়গাটায় যাওয়া হয়নি! কবে যাবো হামহামে, আহা রে! 🙁
হামহাম যেতে হলে সিলেট পর্যন্ত আসার দরকার নেই। ট্রেন কিংবা বাসে শ্রীমঙ্গল পর্যন্ত আসলেই চলবে।
সময় সুযোগ করে ঘুরে আসুন। ভালো লাগবে। নিশ্চয়তা দিচ্ছি। 🙂
চমৎকার বর্ণনা । পোস্ট টা ভালো লাগলো। যাওয়ার ইচ্ছা আছে, ইনশাআল্লাহ….
পোস্ট ভালো লেগেছে জেনে আনন্দিত।
এখন প্রায় প্রতিদিনই কেউ না কেউ হামহামে যাচ্ছে। সময় করে আপনিও দেখে আসুন 🙂
যদি যেতে পারতাম! একদম উড়ে চলে যেতাম! সব বন্ধুরা! কতদিন ঘুরতে বের হই না। সেই স্কুল পালানোর দিন তো আর নেই। হয়ত সেরকম অ্যাডভেঞ্চার না হয় না হল তবে আনন্দ! চল সবাই ঘুরে আসি।
সময় করে ঘুরে আসুন। অ্যাডভেঞ্চারও হবে, আনন্দও হবে।
পোস্ট পড়ার জন্য ধন্যবাদ 🙂
অ্যাডভেঞ্চারে আমার নামখানা আর পিছন দিকের কয়েকখানা ছবি দেখে খুশিত হইলাম…. 😀
রাজার খুশিই আমাদের খুশি 😀
অসাধারণ বর্ণনা- আপনাদের গোটা যাত্রাটাই যেন চোখের সামনে ভেসে উঠলো! 🙂 লেখনীর জন্য ডাবল প্লাস :clappinghands: :yahooo:
হামহামে যাওয়ার শখ অনেক দিনের- আমি নিজেও প্রচুর ঘুরাঘুরি করি, কিন্তু অ্যাডভেঞ্চারাস ট্যুরগুলো নিয়ে লেখাই হয় না তেমন… আপনার লেখাটা পেয়ে ভালো হল, হামহামে যাওয়ার আগে কাজে দিবে 🙂
লাস্ট ঈদের পর মাধবকুণ্ড গেসলাম, এবার যাচ্ছি সীতাকুণ্ড- হয়ত পরবর্তী গন্তব্যই হামহাম!
আচ্ছা, ‘নিসর্গের’ গাইডের কথা বললেন, ‘নিসর্গ’ কি বন বিভাগের কোন অফিস টাইপ কিছু? আর, তার সাথে যোগাযোগ করব কী করে?
শুভ কামনা
আপনি তো ভাই দেখছি আগাগোড়া পর্যটক।
ঘুরে আসুন ভালো লাগবে। তবে এখন নাকি মোকাম টিলায় সিঁড়ি কেটে বাঁশের রেলিং করে দিছে। তাই রোমাঞ্চ কিছুটা কম পাবেন। তবুও আশা করছি ভালো লাগবে।
নিসর্গ বন বিভাগের একটা বিশেষ প্রকল্প। লাউয়াছড়া, সাতছড়িসহ বেশ কয়েকটা জায়গায় তাদের কাজ আছে। গাইডের নাম্বারঃ শ্যামল (০১৭২৭২৯৮৯২১)। এরা কিন্তু টাকা একটু বেশি নিবে। খরচ কম করতে চাইলে শক্ত-সামর্থ দেখে কোন চা শ্রমিক গাইড হিসেবে নিয়ে নিবেন।
অনেক ধন্যবাদ- যাবার আগে আরেকবার হয়ত কষ্ট দেবো, খোঁজখবর নিতে 😀
কষ্ট পাবার অপেক্ষায় থাকলাম :happy:
এত্ত সুন্দর এই দেশটার তেমন কিছুই এখনও দেখা হল না……… :wallbash:
জানি না, শুধু বন্ধুদের সাথে কখনও এমন অ্যাডভেঞ্চারাস ট্যুরে যাওয়া হবে কি না……… তাই শুধু এই একটা ক্ষেত্রেই একরাশ হিংসে!!! 🙁
অসম্ভব সুন্দর বর্ণনা………আর শেষের ছবি দুটো খুব বেশি সুন্দর!!! 😯
হিংসে জিনিসটা বুমেরাঙের মতো। ছুঁড়ে মারলে তা আবার নিজের কাছেই ফিরে আসে 😛
অতএব হিংসে করা বাদ দিয়ে সাহস করে বেরিয়ে পড়ুন। এরপর যা আছে কপালে।