প্রচন্ড চাপ যাচ্ছে এই কদিন , দম টুকু ফেলার সময় পাচ্ছি না , মাঝে মাঝে বিরক্তি ধরে যায় , কিছুক্ষণ চোখ বন্ধ করে বসে থাকতে ইচ্ছা করে খুব , পারিনা , ব্যাস্ততা আজকাল এতই বেড়ে গেছে । সামনে পিসি টা খোলাই আছে , খুব বিরক্তি এর সময় সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইট গুলি তে একটু ঢুঁ মেরে আসি , ব্যাপারটা যান্ত্রিক , তবে কাটানো অল্প কিছু সময় টুকু নির্ভেজাল আনন্দ দেয় ।
টিং টিং করে চ্যাট বক্স টা জানান দিল কেউ স্মরন করেছে ।
আরে বান্ধবি , তুই তো সুন্দর হয়ে গেসিস দেখা যায়। চল বিয়ে করে ফেলি , আমি খুব সুন্দর একটা পোলা , বেশ হ্যান্ডসাম আছি , শুধু টাকা পয়সা একটু কম, পালিয়ে বিয়ে করতে অবশ্য খরচ বেশি না , যা লাগে তুই দিবি !! 😀
ইহান হাসনাত, চ্যাট বক্সের কোণায় নামটা জুলুজুলু করছে , আমি এই ছেলের সাথে কথা বলার সময় অনেক চেষ্টা করেছি একটু ভাব ধরে থাকার , পারিনাই , কোনদিন পারব সেই সম্ভাবনাও একদম শূন্যের কোঠায় , মানুষ যে বাঁদর থেকে এসেছে এই ছেলে কে দেখলে সেই সন্দেহ যে কারোই এক মুহূর্তে দূর হয়ে যাবে । পারফেক্ট বাঁদর , আমার ধারণা একে নিয়ে মিরপুর চিড়িয়াখানায় গেলে প্রথম খাঁচার সব বান্দা , হুজুর হাজির বলে দুই হাত হাঁটুতে ঠুকে সালাম করে ফেলবে । এবং তার এহেন বাঁদরামির জন্য তার কোনও আফসোস হতে আমি দেখিনাই , তার সাথে আমার যতবার দেখা হয়েছে আমি তাকে অতি আগ্রহ নিয়ে কলা খেতে দেখেছি অথবা চিনে বাদাম খেতে দেখেছি এবং এই দুইটা জিনিশ ই আমি দুই চোখে দেখতে পারিনা । অবশ্য ইহানের কথা হচ্ছে বাংলাদেশের সবচেয়ে সস্তা দুইটা জিনিস অবশ্যই তার খাওয়া উচিৎ , যেহেতু তার খুব বেশি টাকা নাই , এবং টাকা খরচে তার ব্যাপক মায়া এবং যেহেতু তার খানিক পর পর খিদা লাগে সে আর কি ই বা করতে পারে ।
– তুই সুন্দর পোলা ?? জীবনে আয়না দেখসিস ??
_ কেন নয় বান্ধবি ? আবার বলি আমাকে কিন্তু কয়দিন পর আর পাবিনা , কাল রাতে ক্যাটরিনা ফোন দিয়েছিল শুধু তোর কথা ভেবে ওরে পেন্ডিং রাখসি , এখন বল বিয়া করবি আমারে ??
_ নাহ , তোকে বিয়া করা যাবেনা , তোর থেকে পাঁচ গুন হ্যান্ডসাম টম ক্রুজ কালকে প্রপোজ করসে , বিজি আছি এখন , তুই ভাগ!!
– আমারে বেইল দিলানা , পঞ্চাশ বছরের বুইড়া ব্যাটার জন্য , মনে রাইখ কেবল একজন ছিল , যে ভালোবাসতো শুধুই তোমারে ………
আমি অফ লাইনে গেলাম এই পাজি পোলা নাহলে ভ্যাজর ভ্যাজর করতেই থাকবে ।
এর সাথে পরিচয় টা খুব আহামরি ভাবে হয়নাই আমার , একই ব্যাচ এর স্টুডেন্ট ছিলাম কেমন করে যেন বন্ধু হয়ে গেলাম , যখন বন্ধু হলাম আসলে তখন হবার কোন চান্সই ছিলনা , এরপর এর যাবতীয় বাঁদরামিতে অভ্যস্ত হতে সময় লেগেছিল কিন্তু আমার অতি একলা কাটানো সময় গুলো ও এতো আনন্দে ভরপুর করে দিল , এতো রঙ্গিন করে দিল যে ওকে ছাড়া একটা দিন ভাবা আমার জন্যে অসম্ভব ছিল ।
আমি নিজের কথা বলি , আমি বেশ গম্ভীর মানুষ , অপ্রয়োজনীয় গম্ভীরতার চাদরে নিজেকে মুড়ে রাখি , একলা থাকার প্রহর গুলো ভীষণ পছন্দের আমার । অনেকের সাথে হইহুল্লর করার চেয়ে একটা গল্পের বই এ মুখ গুঁজে থাকতে বেশি ভালোবাসি । আমার কবিতা ভাল লাগে , গান ভাল লাগে , মঞ্চ নাটক ভাল লাগে । আমি দুঃখ বিলাসি , আমার প্রিয় যা কিছু আছে সব তালিকায় দুঃখ বিলাসের প্রাধান্য টা একটু বেশী । আমার সবচেয়ে কাছের মানুষ হল আমার মা । যখন খুব মন খারাপ করা বই পড়ে বা গান শুনে আমার ভেতরে শূন্য শূন্য লাগে , আমি মা কে জড়িয়ে ধরে থাকি , মা আমার গায়ে হাত বুলিয়ে দেয় , বলে
আমার এইটুকু মেয়েটা কেমন করে এতো আবেগি হল , এইটুকু জাপানীদের মত ছোটো চোখে কেমন করে এতো জল লুকিয়ে রাখে শুনি , কেমন করে বলতো মা ??
আমি তখন মা কে শক্ত করে জড়িয়ে ধরি , আমার শূন্য লাগা প্রহর নিমিষেই নাই হয়ে যায় ।
আমার পরিবারের বাইরে পৃথিবীর শুধু মাত্র একটা মানুষকে আমি আমার ছোট্ট হৃদয়ে অনেক বড় জায়গা দিয়ে ফেলেছি , সেই মানুষটা অবশ্যই ইহান ছিল , আমি এই ছেলেকে অনেক ভালোবাসি । ওর গায়ে পড়ে ঝগড়া করা ভালোবাসি , আজে বাজে অকাজের কথা ভালোবাসি , ওকে হাসতে দেখলে ভালোবাসি , ওর রাগ ভালোবাসি , ওর সাথে কাটানো প্রতিটা মুহূর্ত ভালোবাসি । অনেক ভালোবাসি , অনেক টা গুনে শেষ করা যাবেনা ঠিক এইরকম ।
আমি কতদিন ভেবেছি ওকে জানিয়ে দিবো , কেমন করে বলব মাথায় আসে না ,
আমি কি ছোট্ট কিছু পঙক্তি দিয়ে জানাব ? এভাবে কি বলা যায় –
‘বৃষ্টির ফোঁটাকে মনে হয় তোমার পায়ের শব্দ…
পাতার শব্দকে মনে হয় তোমার গাড়ির আওয়াজ।’
পরক্ষনেই সেই চিন্তা বাদ দেই , হয়ত এরকম কিছু শুনে ইহান বলে বসবে আমি কি করলে তোর বজ্রপাত মনে হয় রে? মাথায় যেটা আসতেসে , সেইটা একটা অতি বাজে কথা , তুই ভদ্র মাইয়া , বললে আবার কাইন্দা দিবি ।
আবার মনে হয় ওকে বলি
ছেলে তোকে ধরে
একদিনের তরে
অনেক অনেক করে
খুব সন্ধ্যা থেকে খুব ভোরে
কাঁদতে চাই …
সেই চিন্তা বাদ দিতে আবার দুই মুহূর্ত ভাবিনা , ইহান খুব পাজি ছেলে আমার নাম কাঁদুনি বেগম রাখতে সেও দুই মুহূর্ত ভাববেনা , এইটা আমি খুব ভাল জানি , ইহান কে আমার থেকে ভাল আর কে জানবে ?? আমার কেবল ই মনে হয় আমি ওকে বলতে পারবনা ।
আমারও রয়েছে ভয় , সরবহারার শৃঙ্খল শুধু নয়
বিপ্লব এলে তোমাকেও হারাবার , যে তুমি
শৃঙ্খল হয়ে কোনোদিন বাধোনি আমায় ।
*****
জানেমান চল বিয়ে করে ফেলি , আমি না কখনই পালিয়ে বিয়ে করিনাই। 😀 তোদের ঐদিকে কাজি অফিস আছে ?? প্লিজ প্লিজ চল আজকে বিয়ে করি , তারপর আজকের দিনটা আমি আর তুই মিলে বিশ্ব পালিয়ে বিয়ে করা দিবস হিসেবে পালন করব , তুই রাজি ??
যখন আমার মুঠো ফোনে এই বার্তা আসে , তখন আমি আমার রুমের ছোট্ট কোনায় বসে ছিলাম । আমার খুব ইচ্ছা করছিল মা কে জড়িয়ে ধরে বলি , আমার গায়ে একটু হাত বুলিয়ে দেবে মা ?? কিন্তু পারছিলাম্ না , আজ এই শরীর টা নষ্ট হয়ে গিয়েছে , একজন হায়েনার তীব্র আঘাতে এখানে সেখানে পচন ধরে গিয়েছে , দুপুরের পর থেকে একটু পর পর শরীর টা ধুয়ে নিচ্ছি , কিছুই হচ্ছে না , যেন ঐ ঘৃণিত স্পর্শ আমাকে আরও ঘিরে ধরছে । আমার এই অপবিত্র দেহে আমার মা কে আমি কেমন করে ছুঁতে বলি ? আহ , বেঁচে থাকা এতো কষ্টের কেন ?
দুপুরে বন্ধু ইহানের বাসায় গিয়েছিলাম , ইহানদের পরিবারের সাথে কবে থেকে যে একটা পারিবারিক বন্ধুত্ব হয়ে গেছে জানাই হয়নি , ইহানের বড় ভাই হয়ে গিয়েছিল আমার বড়দা , ইহানের এক রত্তি বোন টা আমার ও ছোট বোন । তাই বড়দা রূপী হিংস্র হায়েনা যখন ভেতরে বসতে বলল আমি ঘুণাক্ষরেও ভাবিনি আমি সর্বহারা হতে চলেছি । কি করব এখন আমি ? কেমন করে মৃত্যু কে কাছে টেনে নিতে হয় আমার জানা নাই , আমার খুব কাঁদতে ইচ্ছে করছে , আহ ঈশ্বর আমাকে একটু কাঁদার শক্তি দাও , শেষ বারের মত করে কাঁদতে চাই ।
*****
তোর কি হইসে? মরার শখ হইসে আমাকে বলিস নাই কেন ? ছাদ থেকে ফেলে দিতাম এক ধাক্কায় , নিজেও হয়রানি করলি , মরলিওনা , আমাদের কষ্ট দিলি । কথা বল মাইয়া , এক চড়ে দাঁত ফেলে দিবো । মরতে চাস তুই , কেন বাঁচলি তাইলে , কেন বাঁচলি ??
ইহান আমাকে ধরে হুহু করে কেঁদে যাচ্ছে , আমি গাল ধরে বসে আছি ।
চড় বেশি জোরে হইসে ?
হু ।
তোর কি হইসে আমারে বল ?
না ।
বল বলতেসি ।
না ।
দ্যাখ ঢং মারবিনা , বয়স হইসে তোমার , ম্যাচুরড হইস অনেক , কি এমন হইসে যে তোকে এমন একটা কাজ করতে হইল ?
খুলে বললাম সব , আমি যদিও জানতাম , ইহান সহ্য করতে পারবে না , আমি যেমন ভেঙ্গে গেছি ও তার থেকে বেশি ভেঙ্গে যাবে , দুনিয়ায় ও বড়দা থেকে কাউকে বেশি ভালবাসে না ।
তারপর খুব দ্রুত কিছু ব্যাপার ঘটলো , যত দ্রুত আমার কল্পনার দুঃখবিলাস বাস্তবের ক্যানভাসে রঙ তুলিতে আঁচর কেটে চলেছে , তার থেকেও দ্রুত । বড়দার বিরুদ্ধে কেস হল , কেস করল স্বয়ং ইহান , বড়দা নিজেই সব স্বীকার করেছিলেন কোর্টে । কেন করেছিলেন জানিনা । যেদিন বড়দার মামলা শেষ হবে ঐ রাতেই তিনি সুইসাইড করেন ।
ইহান আমার বিয়ে হয়ে যায় অতিদ্রুত , যে ঘোর অমানিশা আমায় ঘিরে ধরেছিল , ইহান তার ভালবাসার পবিত্র স্পর্শে সেই কালিমা দূর করে দেয়ার সকল চেষ্টা চালালো । বিয়ের রাতে ইহান আমাকে নিয়ে বের হয়েছিল রাস্তায় , আমি হাঁটছি , ইহান হাঁটছে । আমার ইহানের আম্মার কথা মনে পড়ছে , ইহানের আম্মা আমাকে জড়িয়ে ধরে বলছিলেন আমি যেন তার বড় ছেলে কে ক্ষমা করে দেই ।
বুঝলি ঈশিতা , আম্মার যখন বিয়ের পাঁচ বছরেও বাচ্চা হয়নাই , তখন বড়দা কে আম্মা পালক নেন , বড়দা কে আমরা কোনদিন সেই চোখে দেখিনি । আমি হওয়ার পর কত মানুষ বড়দা কে অনাথ আশ্রমে দিতে বলেছে , আম্মা তাদের মুখে ঝাঁটা দিয়েছিল , সেই বড়দা টা কেন এমন হয়ে গেল বলতো ? আমি এই দুনিয়ায় বড়দা কে সবচেয়ে বেশি ভাল বেসেছিলাম্ রে , একটা অমানুষ কে অনেক ভালবেসেছিলাম ।
আমার খুব ইচ্ছা করছিল , ওর জল টুকু মুছে দেই , পরক্ষনেই ভাবলাম ঐ বিষাক্ত জল টুকু ঝরে গেলেই ভাল হয় বোধহয় । ইহান সে রাতে কাঁদল , ছোট্ট একটা বাচ্চার মত হুহু করে কাঁদল , আমাকে শক্ত করে ধরে অনেক অনেক কাঁদল ।
*****
ইহান আর আমি এখন অনেক ভাল আছি , অনেক ভাল । ইহান আগের মতই আছে , সারাদিন আজাইরা কথা বলে বেড়ায় , পালিয়ে বিয়ে করতে না পারার দুঃখ এখনো যায়নি ওর ।মাঝে মাঝে ঘন্টা হিসেবে রিক্সা ভাড়া করে ঘুরতে যাই , আমার মুঠোফোনে টিং টিং করে বার্তা আসে ,
উইল ইউ প্লিজ ম্যারি মি ? আই ওয়াণ্টু করতে বিয়া , অবশ্যই পালাইয়া 😀
আমি ভেবেছিলাম ইহান বদলে যাবে , ভেবেছিলাম ইহান আমাকে ঘৃণা করবে , ইহান আমাকে করুণা করবে , তার কোন কিছুই সে করেনি । সে আমাকে গভীর ভালোবাসায় আঁকরে ধরে রেখেছে , পৃথিবীর সকল অকল্যাণ থেকে আমাকে বাঁচিয়ে চলেছে ।
ইহান তার মঙ্গলময় স্পর্শে আমাকে বেঁচে থাকার সাহস জুগিয়েছে , তার এক জীবনের সমস্ত ভালোবাসা দিয়ে আমাকে ঘিরে রেখেছে সকল অমানিশার আধার থেকে । আমি , এই অতি ক্ষুদ্র আমি এক জীবনে ঈশ্বরের কাছে আর কিইবা চাইতে পারি ??
খুব ভাল লিখেছো। 😀
ধন্যবাদ সামিরা আপু 🙂
বড় দা’র মত মানুষ আজ আনেক, ইহানের মত মানুষ আজ কমে গেছে…।
খুব ভাল লাগল পড়ে।।
ইহানের মত মানুষ কখনো বেশি ছিল বলে মনে হয়না , যদিও থাকা দরকার ।
মন্তব্যের জন্য অনেক ধন্যবাদ 🙂
অনেক সুন্দর একটা লিখা
ভালো লেগেছে 😀
🙂 ধন্যবাদ জানাচ্ছি
বেশ ভালো লেগেছে গল্পটা 😀
ইহান চরিত্র বিশেষ করে।
i want to করতে বিয়া =))
***************
গল্পের সাথে সম্পর্ক নাই।
আমি ভেবেছিলাম ইহান বদলে যাবে , ভেবেছিলাম ইহান আমাকে ঘৃণা করবে , ইহান আমাকে করুণা করবে , তার কোন কিছুই সে করেনি
ঘৃণা কি করার কথা?
একটা মেয়েকে বাজে কোন লোক ্ যদি ছুরি মারে তাহলে কেউ ঘৃণা করবে? তাহলে ধর্ষনে কেন ঘৃণা।
সবার মতামত বদলানো জরুরি বলেই মনে করি।
সহমত।
চুপি চুপি বলি ভাইয়া , ইহান চরিত্র টা আমার ও ভাল লেগেছে 😀
দৃষ্টিভঙ্গি , মতামত সবার ই বদলানো উচিৎ , কয়জন পারে ?? 🙁
অসাধারণ অসাধারণ! খুব কাছ থেকে অনেকটা এমনই এক ইহান আর ঈশিতাকে দেখেছি।
ইহানদের সংখ্যা কমে গেছে, কিন্তু শেষ হয়ে যায় নি অবশ্যই। 🙂
“উইল ইউ প্লিজ ম্যারি মি ? আই ওয়াণ্টু করতে বিয়া , অবশ্যই পালাইয়া :D” বিয়াফুক মজ পাইলাম। :happy:
মাধবীলতা বলেছেন : ইহানদের সংখ্যা কমে গেছে, কিন্তু শেষ হয়ে যায় নি অবশ্যই।
মন্তব্যের জন্য অনেক ধন্যবাদ 🙂
বিয়া পালাইয়া করায় আমার একটু আপত্তি আছে , আমি বিয়ার দাওয়াত খাইতে ভালবাসি কিনা !!! 😛
নূহা, আপনার লেখনী অসাধারণ। শুরুর অংশটা আমি বলবো একেবারে বাঁধিয়ে রাখার মতো। শেষ ঘটনা নিয়ে বলবো, খুব এড়িয়ে যাওয়া একটা বিষয়কে আপনি সাবলীল ভাষার একটা গল্পে তুলে এনেছেন। বিশ্বাস করুন, অবাক হয়েছি ভাষার সহজবোধ্যতায়।
তবে, পাঠক হিসাবে পুরো গল্পের গঠনি নিয়ে কথা বলতে মন চাইলো। ইহান একজন চিরশিশু চরিত্র। তার মাঝে যে শিশুসুলভ চপলতা আনা দরকার ছিল তার পুরোটাই এনেছেন আপনি। একটা স্বার্থক ‘গল্পের নায়ক’ হবার সমস্ত যোগ্যতাই তাকে দিয়েছেন। কিন্তু, গল্পের মূল আরেকটা চরিত্র কিন্তু বড়দা। তাকে, কেমন জানি, আস্তাকুঁড়ে ফেলে দেবার দ্রুততা দেখলাম গল্পে।
যেমন ধরুন, বড়দাকে পালকপুত্র বানানোর প্রচেষ্টাটা কিছুটা প্রচলিত বাংলা সিনেমার কাহিনীর মতো হয়ে গেলো। আমার আশঙ্কা, লেখিকা, একই রক্ত সম্পর্কের দুইজনের মধ্যে বিপরীত চরিত্র দেখানো এবং সাথে সাথে কথিকার ঐ পরিবারেই পুত্রবধু হিসাবে অন্তর্ভূক্ত হবার জটিলতা থেকে বাঁচতেই, এই “সর্টকাট” রাস্তা ধরলেন কি না?
বড়দার আত্মহত্যা করাটা কি পারিবারিক ট্রাজেডির গভীরতা কমিয়ে দেয়ার চেষ্টা? নাকি বাংলাদেশের আইনের প্রতি সচেতন অনাস্থা। জানি না।
তবে একটা কথা জানি, বড়দাদের মৃত্যু হয় না সহজে। মুখোশটাই উন্মোচন হয় না। যদি হয়ও, ক’জন ইহানের বুকের পাটা থাকে এভাবে মামলা করে দেবার? মুখোশধারী বড়দা, আর ভিতু শিশু ইহান হাসনাতদের মাঝেই তো আমাদের কথিকার জীবনেতিহাস। অবাস্তব স্বান্তনায় কার কী লাভ?
মূল্যবান মন্তব্যের জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ ।
আপনার আশঙ্কা যে একেবারে সঠিক তা অস্বীকার করবনা , সকল ইহানরা সত্যিকারের সাহসী হয়ে উঠুক মন থেকে চাই 🙂
খুব ভালো লাগলো। পড়তে পড়তে কোথায় যেন হারিয়ে গিয়েছিলাম। বাস্তবে ইহান দের সংখ্যা কমে গেলেও, লেখা পড়ে খুব শান্তি পেলাম, কোথাও তো ‘ইহান’ আছে…..
অসংখ্য ‘ইহান’এর জন্ম হয় যেন এই লেখার হাত ধরে…… 🙂
এরকম আরো সুন্দর গল্পের অপেক্ষায় 🙂
অনেক অনেক ধন্যবাদ মুল্যবান মন্তব্যের জন্য 🙂
ভাল লিখেছেন……ইহানকে খুব ভালো লেগেছে…… অনেকটা সেইম একটা গল্প পড়েছিলাম যেখানের ইহান বদলে যায় শেষে……
🙂 ধন্যবাদ
বেশ ভালো লাগলো।
কেন ইহানদের বদলে যেতে হবে?
কিছু দৃষ্টান্ত তো অনুকরণীয় হয়ে থাকাই উচিত!
🙂
ধন্যবাদ 🙂