ভয় নাকি ভ্রান্তি

২২ ডিসেম্বর রাত ২.৩০ ২০১১

“ আল্লাহ্‌ গো আল্লাহ্‌ আপা ও আপা গেটটা খুলেন” কুসুম গেটের বাহির পাগলের মতো চিৎকার করে গেট ধাক্কাতে থাকে। রকিব লায়লাকে বলে “অ্যাঁই দ্যাখো তো কি হয়েছে? তাড়াতাড়ি গেট খোলো।”

লায়লা বলে “হ্যাঁ খুলছি। কি ব্যাপার? এই লকটার সমস্যাটা কি দুইদিন পর পর নষ্ট হয়ে যায়।গেট খুলছে না তো।”  রকিব বলে “দেখি আমি খুলছি।” গেট খুলার পর লায়লা কুসুমকে বলে “অ্যাই কুসুম কি হয়েছে তোর?”

“আপা” বলেই কুসুম অজ্ঞান হয়ে যায়। কুসুমের যখন জ্ঞান ফিরে তখন ও দ্যাখে ও খাটে শুয়ে আছে।

লায়লা বলে   যাক অবশেষে তোর জ্ঞান ফিরেছে ভয় পায়িয়ে দিয়েছিলি একেবারে। জ্ঞান না ফিরলে কি করতাম এতো রাতে তো ডাক্তার ও পেতাম না। নে পানি খা ভালো লাগবে। কি হয়েছিলো তোর অমন করে ডাকছিলি কেন?”

কুসুম ভয়ে বলে “আপা আমি বাড়ি যামু গিয়া।”  লায়লা বলে  “মানে? তুই এসেছিস এক সপ্তাহ হয়নি আর তুই এখন চলে যাবি? আগে বল কি হয়েছে? কি সমস্যা?”  কুসুম আস্তে করে বলে “আপা এই বাসায় ভূত আছে। কাইল আমি ভূত দেখসি।”  লায়লা বলে “কি দেখেছিস? ভূত?!”  কুসুম বলে  “হ আপা  ভূত একজোড়া লাল চক্ষ। এই বাসায় আসার পর থেকেই আমার মনে হয় আমার উপর কেউ নজর রাখে। আমি আপনারে কই নাই কিন্তু কাইল রাতে দেখসি কে নজর রাখে। আমি এই বাসায় আর একদিনও থাকমু না।”  লায়লা বলে “ বাহ!! কি সুন্দর গল্প এইসব ফালতু কথা আমি শুনব না  ভূত বলে কিছু নেই। আর তুই যেতেও পারবি না। একমাসের আগে কারণ আমি তোর মাকে একমাসের টাকা আগেই এডভান্স দিয়েছি। আর আমি তোর ভাইয়া কি থাকি না? আমরা তো কোন ভূত দেখি নি।এখন এইসব কথা বাদ দিয়ে শুয়ে পর সকালে অনেক কাজ আছে।”

২৪ ডিসেম্বর দুপুর ৩.০০ ২০১১

দুপুরবেলা লায়লার খুব একা একা লাগে। সবকাজ শেষ হয়ে যায়। কুসুমও ঘুমিয়ে থাকে আর রকিবতো অফিসে থাকে। লায়লা টি ভি দেখার চেষ্টা করে কিন্তু ভালো লাগে না ও টি ভি বন্ধ করে ও বারান্দায় যায় বারান্দায় এত রোদ যেন খাঁ খা করছে। লায়লা চলে আসবে তখন ওর মনে হয় কে যে ওর পিছনে। লায়লা চমকে তাকায় দ্যাখে কুসুম।

লায়লা বিরক্ত হয়ে বলে “কি রে তুই এখানে?” “ঘুম থেকে উইঠা দেখি আপনে নাই তাই।” “হয়ছে আর বলতে হবে না যা এক গ্লাস লেবুর শরবত নিয়ে আয়।” লায়লা রুমে ডুকে দ্যাখে টি ভি অন করা নিশ্চয়ই কুসুমের কাজ।

কুসুম বলে  “ এই যে আপা আপনার শরবত।”  লায়লা বলে “কিরে তুই টি ভি অফ করিস নাই কেন?”

কুসুম বলে  “ আমিতো টি ভি ছারিই না বন্ধ করমু ক্যান। আর আমি যখন আপনারে খুঁজতে বারান্দায় গেলাম তখন তো টি ভি বন্ধ আসিলো।”  কুসুম আর কিছু বলতে যাবে, তার আগে লায়লা ওকে বলে “ এখন যা আমার মাথা ব্যথা করছে।” কুসুম রুম থেকে বের হয়ে যায় তার আগে ওর মুখে একটু হাসির ঝলক দেখা যায়।

২৫ ডিসেম্বর রাত ৮.০০ ২০১১

রকিব আর লায়লা সন্ধ্যা বাইরে ঘুরতে যায় কুসুমকে বাসায় রেখে। কুসুম অবশ্য ভয় পাচ্ছিলো।

লায়লা ওকে “বলে তুই বাসায় টি ভি দেখবি আর আমারা তো তাড়াতাড়ি বাসায় চলে আসব। আর ভূত বলে কিছু নেই। এই যে আমাদের নাম্বার যদি দরকার হয় তাহলে কল দিবি। কল দিতে পারবি তো ?”

কুসুম মাথা নাড়ে। রকিব আর লায়লার বাসায় ফিরতে রাত হয়ে যায়। বাসায় ফিরে ওরা হতবাক হয়ে যায় দ্যাখে যে বাসার গেট খোলা। ওরা কুসুমকে ডাকে কিন্তু কুসুমের কোন চিহ্ন নেই সেই সাথে দ্যাখে ওদের ঘরের সব দামি জিনিস হাওয়া। পরে পুলিশ আসে কিন্তু কুসুমের কোন খোঁজ পাওয়া যায় না। কুসুম যেন উধাও হয়ে গিয়েছে।

২৫ ডিসেম্বর সন্ধ্যা ৭.০০ ২০১১

কুসুমের একা একা বাসায় বেশ ভয় লাগছিলো তাই ও টি ভি দেখা শুরু করল। হঠাৎ করে কুসুমের  মনে হল রান্না  ঘর থেকে কেমন শব্দ আসছে। কুসুম অনেক ভয় পেয়ে গেলো পড়ে মনে হল হয়তোবা রান্না ঘরের কিছু পরে গিয়েছে তাই ও রান্না ঘরে গেলো। গিয়ে দ্যাখে সব একটা হাড়ি পরে আছে। কুসুম যেই হাড়ি তুলে রেখে রুমে ডুকে আর রুমের লাইট অফ হয়ে যায় আর ও মাগো বলে চিৎকার করে উঠে সঙ্গে জ্বলে উঠে একজোড়া লাল চোখ। শুধু টি ভির আলোতে একটা চেহারা দেখা যায় এক ঝলক। কুসুম সেই চেহারা দেখে ভয়য়ের থেকে হতবাক হয়। তার একটু পরেই শুনা যায় একটি আর্ত চিৎকার।

এই লেখাটি পোস্ট করা হয়েছে গল্প-এ। স্থায়ী লিংক বুকমার্ক করুন।

15 Responses to ভয় নাকি ভ্রান্তি

  1. বোহেমিয়ান বলেছেনঃ

    নতুন একটা এপ্রোচ এ লিখছো দেখি!
    অন্য রকম কিছু ভাবছিলাম।
    আরেক রকম রেজাল্ট। যদিও ক্লাইমেক্সটা ঠিক জমে উঠে নি।

    লিখতে থাকতে হবে।

    ২৫ ডিসেম্বর রাত ৮.০০ ২০১১

    কমা ব্যবহার করা উচিৎ মনে হয়
    বেশ কিছু বানান ভুল আছে টিভির মাঝে গ্যাপ হবার কথা না।

    কথোপকথনে কিছু জায়গায় “” দিতে হবে।
    নিউ লাইন দিতে হবে।

    চলতে থাকুক 😀

  2. অনাবিল বলেছেনঃ

    নতুন রকম 🙂

    লেখা চলুক………

  3. সামিরা বলেছেনঃ

    আমি তো আগেই পড়ে ফেলেছি। 😀
    ভাল লাগছে।
    ভুল ধরবো না, তাহলে তো আবার আমাকেই ঠিক করতে হবে। 😛 😛

  4. শারমিন বলেছেনঃ

    ধন্যবাদ 😀
    হ্যাঁ তোমাকেই ঠিক করতে হবে। 😛 😛

  5. বেশ অন্য রকম লাগলো লিখাটা। এরকম ধারার লিখা খুব বেশি লেখে না, ভালো লাগলো!! তবে অল্প কিছু টাইপো আছে….আমি অবশ্য ভূত এট্টু বেশীই ভয় পাই!!!
    নিরীক্ষা চলুক লিখা নিয়ে….

  6. শারমিন বলেছেনঃ

    ধন্যবাদ ভাইয়া 😀

  7. স্বপ্ন বিলাস বলেছেনঃ

    আরও চলুক এমন লেখা। তবে, ক্লাইমেক্সটা আরেকটু ভালো হবে সামনে আশা করছি! 🙂

  8. শারমিন বলেছেনঃ

    ধন্যবাদ ভাইয়া
    সামনে আরও ভালো লিখার চেষ্টা করবো 😀

  9. স্রোতস্বিনী বলেছেনঃ

    :thinking:

    আরি বাবা……পিচ্চি তো দেখি ভূতের ভয় ও দেখায়?? 😛

  10. শারমিন বলেছেনঃ

    আমি পিচ্চি না তুই পিচ্চি 😛 😛 😛

  11. বৈরাগী বলেছেনঃ

    নামটা একদম পারফেক্ট হইসে। 😛 ভয় পাইলাম নাকি ভ্রান্ত হইলাম বুঝলাম না। :thinking:
    এমন ক্লাইমেক্স চলতে থাকুক 🙂

  12. শারমিন বলেছেনঃ

    পড়ার জন্য ধন্যবাদ 🙂

  13. নিলয় বলেছেনঃ

    ক্লাইম্যাক্সটা কেমন জানি লাগলো।
    আরো ভয়াল কিংবা ভ্রান্তিকর কিছু করা যেত।
    ভালো লেখা।
    🙂

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।