(নিছক কল্পনার এ গল্পটি কারো জীবনের সাথে মিলে গেলে লেখক দায়ী নয়, ধরে নিবেন তা নিছক কাকতালমাত্র!)
ট্যাং-এর যখন ঘুম ভাঙ্গিলো, আসলে কিন্তু ভয়ানক দেরী হইয়া গেছে, একটা বিশাল ধরণের আড়মোড়া দিয়া সে হঠাৎ করে আবিষ্কার করিলো, কী যেন ঠিক নাই, তারপরই সে বুঝিতে পারিলো, সে আসলে মার্বেলের ন্যায় আকাশ থেকে পড়িয়া যাইতেছে! গলা ফাটাইয়া একখানা চিৎকার দিতে গিয়াও নিজেকে সামলাইলো সে, সত্য বলতে এখন চিৎকার দিয়াও কিছু করার নাই, খুলনা থেকে যেই সারস ভাড়া করিয়া সে ঢাকায় আসিতেছিলো তাহার একটু আলু দোষ ছিলো, উড়ার পথে কোন সারসীকে দেখিলেই কথা বলিবার একখানা ব্যর্থ চেষ্টা সে করিবেই! দুই ঠোঁটের মাঝে থলির মধ্যে করে ট্যাং-কে নিয়া আসিতেছিলো সে, মাঝপথে নিশ্চিত কোন সারসীকে দেখিয়া শীষ বাজাইতে গিয়া থলি ফেলে দিয়েছে! কিছুক্ষণ আপন মনে বিড়বিড় করিয়া সারসকে গাল পাড়িলো। তারপর মনে মনে হিসাব করিয়া দেখিলো, মোটামুটি হাজার ফিট উপর থেকিয়া পড়িতেছে। বাতাসের বাধা হিসাবের মধ্যে আনিয়া বুঝিলো এখনো ১৫ সেকেন্ড হাতে আছে, মোটামুটি যখন বুঝিলো যে জীবনের আর কোন আশাই নাই, তখন ভাবিলো, জীবনের শেষ চিৎকারটা দিয়াই নিবে। ফুসফুস ভরিয়া দম নিয়া যখন চিৎকার করিবার জন্য হা করিলো……
ঘপাৎ করিয়া একখানা শব্দ হইলো আর কাদার মধ্যে পুরো মাথা পর্যন্ত ডুবিয়া গেলো ট্যাং! মুখ হা থাকিবার কারণে বেশ খানিকটা কাদা মুখেও চলে গেলো! তাড়াতাড়ি হাঁচড়পাঁচড় করিয়া বাহির হইবার পর দেখিলো, প্রায় বিঘৎখানেক গভীর কাদার মধ্যে সে পড়িয়া আছে! সৃষ্টিকর্তাকে ধন্যবাদ জানানোর পর সে আবিষ্কার করিলো, যাহাকে সে ঢাকার আশেপাশের গণ্ডগ্রাম ভাবিয়াছিলো তাহা আসলে ঢাকার মধ্যিখানেই একখানি রাস্তা! সিটি কর্পোরেশনের অনুদানে(!) তাহা ট্যাং-এর জন্য জান বাঁচানো স্বরুপ “প্যাঁকে” রুপান্তরিত হয়েছে! ধন্যবাদ জানাইতে হইলে তো মেয়র সাহেবকে জানাতে হবে! এমনকি তাঁর গন্তব্যস্থান পলাশীর বেশ কাছাকাছিই সে আসিয়া পড়িয়াছে! বিশাল ধরণের আনন্দে তাহার হৃদয় আপ্লুত হইয়া উঠিলো! মনে মনে ভাবিলো, এবার বেশ জম্পেশ করিয়া থাকা যাইবেক!
তাহার আশেপাশেই একখানা বিদ্যার পীঠস্থান আছে, লোকে বলে, ইহা বাংলাদেশের শ্রেষ্ঠ বিদ্যাপীঠ, সেখানকার ছেলেমেয়ের দেখিয়া তাহার কিঞ্চিৎ ঈর্ষাবোধ হইতো, আহারে, আমাদের সময় যদি এমন আনন্দ করিয়া পড়িতে পারিতাম! ট্যাং সেই পীঠস্থানেই থাকিতে লাগিলো।
কিছুদিন সুখে শান্তিতে থাকার পর হঠাৎ করিয়া তাহার মাথায় আসিলো, এইখানে আমি একলাই কেন থাকিবো, আমার তো কিছু সঙ্গীসাথী দরকার! যেই ভাবা সেই কাজ, সে তাহার থাকার গর্তের পাশে আরেকটা গর্ত খুড়িলো, গর্তের নাম দিলো প্রো-ট্যাং-এর গর্ত। সেই প্রো-ট্যাং-এর গর্তে রাখিবার জন্য আরেকজনকে নিয়া আসিলো, তাহার পর……ট্যাং, প্রো-ট্যাং একত্রে দিন গুজরান করিতে লাগিলো।
কিন্তু বিধি-বাম, এই দিন গুজরানের পথে তাহারা এমন কিছু কাজ ঘটাইলো, যা সেই বিদ্যাপীঠের মানুষগুলোকে একত্র করিয়া তাদের বিরুদ্ধে আন্দোলনে বাধ্য করিলো, সেই কাজের লিস্টির মধ্যে হেন কাজ নাই যা তাহারা করেন নাই! ট্যাং, প্রো-ট্যাং-কে ডাকিয়া বলিলো, “সমূহ বিপদ সন্দ করি!”
প্রো-ট্যাং কোথা থেকিয়া একখানা আঠা আনিয়া দিলো।
বলিলো, “হুজুর, ইহা মাখিয়া লন, ইহা মাখিয়াই আপনি পাইবেন পরম মুক্তি, এমন একটি আঠা, যাহা মাখিয়া আপনি উলটো হইয়া ছাদের সাথেও লটকাইয়া থাকিতে পারিবেন!”
ট্যাং আনন্দিত হইয়া একটু বেশি করিয়াই আঠাটি মাখিলেন, এবং তারপর বেশ “সেন্টারিং” করিয়া নিয়া নিজেকে বসাইলেন সেই বিখ্যাত গদিটিতে। চোখ মুদিয়া ভাবিলেন, আহা, এখন আর আমাকে কে সরাইতে পারে! কিন্তু পোলাপাইনের খেল তো উনি বুঝিতে পারেন নাই, উদ্ভট ধরণের সব দু:সাহসিক চিন্তা-ভাবনা আর অসংখ্য বুদ্ধির আধার এক একটা পোলাপাইন একের পর এক আইডিয়া দিয়া তাহার গদি প্রায় নাড়াইয়াই দিচ্ছে আর কী! রোলার কোস্টারের মতো নিজের চেয়ার আঁকড়ে ধরিয়া ট্যাং প্রো-ট্যাংকে ডাকিলো,
“ওরে!! মনে তো হয় তোমার আঠাও এবার আমাকে বাঁচাতে পারিবে না!! অন্য কোন ভাবনা ভাবো!”
প্রো-ট্যাং কোথা থেকে খুঁজিয়া একগাদা ব্যাঙ্গাচি নিয়া আসিলো।
বলিলো, “হুজুর, এই যে আপনার সান্ত্রীদের ধরিয়া আনিয়াছি!”
ট্যাং বলিলো, “ইহারা কি এই পাড়ারই বাসিন্দা??”
“অবশ্যই, আপনি কোন চিন্তা করিবেন না!”
তাহার পর সেই ব্যাঙ্গাচি গুলোকে লেলিয়ে দেয়া হলো সাধারণ ছাত্র-ছাত্রীদের উপরে! তাহারা বিপুল বিক্রমে ল্যাঞ্জা দুলাইয়া আসিয়া কিয়ৎক্ষণ লাফালাফি করিলো, তাহার পর লাফালাফি ফুরায়ে গেলে কিছু ভাঙ্গাভাঙ্গির চেষ্টা করিলো, ক্যামেরার সামনে পড়িয়া যাওয়ার সাংবাদিকরা প্রশ্ন করিলো, আপনারা কোন এলাকার ব্যাঙ্গাচি?? একজন বেশ ভাবিয়া ভাব লইয়া কহিলো, “আমরা অত্র এলাকার উগান্ডা পাড়ার অধিবাসী”, সাংবাদিক বুঝিলেন, দেখিতে বড়ো হইলে কী হইবে, ইহাদিগের মাথার মধ্যে পার্মানেন্ট সিল-গালা করা হইয়াছে, নাহলে ইহারা এমন এক পাড়ার নাম কী করে কহিবে, যে পাড়া আসলে একশত আলোকবর্ষ দূরে অবস্থিত???
ইতোমধ্যে ট্যাং বলিয়াছে সে রক্ত ছাড়া যাইবে না, বাচ্চাকে খুশি করিবার মতো তাহাকেও সেই বীর ছাত্র-ছাত্রী শিক্ষকেরা নিজেদের শরীরের রক্ত দিয়া আসিলো, “নাও বাবা, উহা নাও, তাহার পরেও বিদায় হও, অনেক তো হলো, গিনেজ বুকে নিজের নাম উঠাইবার ব্যবস্থাও তো করিয়া ফেলিয়াছো, বিশ্ব বেহায়াও নাকি তোমার ব্যবহারে ‘লজ্জা’ পাইয়া গিয়াছে!”
ট্যাং কহিলো “কাভি নেহী, আমি যাইতাম ন!”
কিন্তু বলিলেই কী হইবে? বেচারা ট্যাং রাত্তিরেও শান্তিতে ঘুমাইতে পারে না! একটু শব্দ হলেই লাফাইয়া উঠে! মনে হয়, এই বুঝি তারা আসিয়াছে! ভয়ে নাকী নিজের জমির দলিলে অফিসে নিয়া রাখা শুরু করিয়াছে! সেইটাও আবার নাকি চুরি হইয়া গিয়াছে! নিজের গর্তের আত্মীয়স্বজনকেও বিশ্বাস করিতে পারে না ট্যাং! কী বিপদ!
আকাশবাণী আসিলো হঠাৎ!! হে ট্যাং, তোমার প্রো-ট্যাং-কে অবিলম্বে ছাড়িয়া যাইতে হবে অত্র এলাকা! সেই আকাশবাণীর ঝড়ে প্রো-ট্যাং-কে বলিবার পূর্বেই সে উড়িয়া গেলো, বিদায় জানাবার সময়টুকুও ট্যাং পেলো না! নাহলে প্রো-ট্যাং-কে জড়াইয়া ধরিয়া অশ্রুসজল চোখে বলিতো,
“হে মোর দুষ্কর্মের সাথী! পরজন্মে আবার দেখা হইবে! আমি, তুমি, আর অসংখ্য দুর্নীতি, এই আমাদের ভালোবাসার ফসল!……”
পরিশিষ্ট: শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত ট্যাং-এর গদি নড়বড়ে হইয়া গিয়াছে!! একটু পাশ ফিরে বসিতে গেলেই মচমচ করে প্রতিবাদ জানাইতেছে!! আন্দোলনের ছাত্র-ছাত্রীরা অধীর আগ্রহে বসিয়া আছে সেই গর্তের সামনে। কখন বিশাল শব্দ করিয়া ভাঙ্গিয়া পড়িবে, ট্যাং-এর বহু সাধের সেই গদি।
সেই বিখ্যাত আঠাওয়ালা গদি……
হাসতে হাসতে শেষ! 🙄
=)) :clappinghands:
হা হা :happy: হা হা :happy: হা হা :happy: হা হা :happy: হা হা :happy: হা হা :happy: হা হা :happy: হা হা :happy: হা হা :happy: হা হা :happy: হা হা :happy: হা হা :happy: হা হা :happy: হা হা :happy: হা হা :happy: হা হা :happy: হা হা :happy: হা হা :happy: হা হা :happy: হা হা :happy: হা হা :happy: হা হা :happy: হা হা :happy: হা হা :happy: হা হা :happy: হা হা :happy: হা হা :happy: হা হা :happy: হা হা :happy: হা হা :happy: হা হা :happy: হা হা :happy: হা হা :happy: হা হা :happy: হা হা :happy: হা হা :happy: হা হা :happy: হা হা :happy: হা হা :happy: হা হা :happy: হা হা :happy: হা হা :happy: হা হা :happy: হা হা :happy: হা হা :happy: হা হা :happy: হা হা :happy: হা হা :happy: হা হা :happy: হা হা :happy: হা হা :happy: হা হা :happy: হা হা :happy: হা হা :happy: হা হা :happy: হা হা :happy: হা হা :happy: হা হা :happy: হা হা :happy: হা হা :happy:
ট্যাং খাওনের জিনিস, পোলাপান যখন টয়াং খাইবার জন্যি উডি পড়ি লাগিছে, তখন কেউ তাহাদিগকে দাবায় রাখবার পারবে না !!!! ব্যাঙ্গাচিগন কেহ কেহ ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগে ভর্তি হইয়াছে বলে শুনা গিয়াছে, হয়তো ট্যাং ও প্রো ট্যাং এর দূর্নীতির অগাধ সম্পদ গুনিবার কারণে তাহারা শিক্ষা লইবার নিমিত্তে পলাশীর প্রান্তরে “কোমারশে” ভর্তি হইবার আসিয়াছে।
হে ট্যাং, তুমি গদি ছাড়ো, তোমারও তো প্রকৃতির ডাক সাড়া দেয়া উচিত !!!! গদিতে আর কতো, চারিদিকে মাছি উড়িতাছে !!!
প্রথম প্যারাটার কোন জবাব নাই। সত্যি! :dhisya: :dhisya: :dhisya:
মনে হচ্ছে এখনকার স্টিকিটা সরিয়ে এই পোস্টকে স্টিকি করা উচিত। 😛
এই লেখাটা পড়তে বার বার আসবো বোধ হয়। 😀
পরিশিষ্ট সত্যি হোক!
ট্যাং এবং প্রো ট্যাংকে এই লেখাখানা পড়িতে দেয়া হোক।
তাহারা যে অমর ইতিহাস রচনা করিয়াছেন তাহার একখানা রিভিউ পড়ার অধিকারতো তাহাদের অবশ্যই আছে।
অদ্ভুত! 🙄
ট্যাং আর প্রো-ট্যাং এর ঠ্যাং দু’খানা যদি টানিয়া ভাঙ্গিয়া দিতে পাড়িতাম !
লেখা মারাত্মক তাহা নিয়ে সন্দ নাই ! :love:
এই পোস্ট আরও হিট হবে আশা করেছিলাম!
এত চমৎকার পোস্ট এত কম মানুষ পড়েছে! 🙁 :crying:
যারা পড়ে নি সত্যি বিশাল মিস করেছে, বলতে বাধ্য হচ্ছি।
লেখককে অবশ্যই সাধুবাদ জানাই তার কষ্টের জন্য।
আইএমডিবি রেটিং যেমন বেশিরভাগ সময়ই ঠিক হয় না তেমনি হিট সংখ্যাও পোস্টের মান নির্ধারণ করে না। এই পোস্ট তারই প্রমাণ।